জুলাইয়ে কম বৃষ্টিপাতের রেকর্ড, বেড়েছে গরম

জুলাইয়ে শুধু বৃষ্টি কম হয়েছে, তা নয়। এ সময় দেশজুড়ে তাপমাত্রাও ছিল বাড়তি। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত তিন দশকে এবার জুলাই মাসে দেশে সর্বোচ্চ গড় তাপমাত্রা ছিল ৩৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ বছর জুলাইয়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ওই গড়ের তুলনায় ২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও গড়ের তুলনায় প্রায় ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। ফলে দিন ও রাত—উভয় সময়ে গরম বেশি অনুভূত হয়েছে। গত মাসে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে, স্বাভাবিকের চেয়ে ২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। ঢাকায় প্রায় আড়াই ডিগ্রি বাড়তি তাপমাত্রা ছিল মাসজুড়ে।

 

চলতি বছরের শুরু থেকেই আবহাওয়া অস্বাভাবিক আচরণ করছে বলে মন্তব্য করছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. আবদুল মান্নান। তিনি বলেন, গত জুনে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বৃষ্টি হয়েছে। অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সিলেট অঞ্চলে বন্যা হতে দেখা গেছে। জুলাই মাসে দেশজুড়ে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম বৃষ্টি হয়েছে। আবার জুন ও জুলাই—এ দুই মাসেই দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তাপমাত্রা ছিল। এমন বাড়তি তাপমাত্রা ও কম বৃষ্টিপাত কৃষি ও পরিবেশের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।

এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই মাসে ১৮ দিন দেশের কোথাও না কোথাও দাবদাহ বজায় ছিল। এর মধ্যে টানা দাবদাহ ছিল ১৫ দিন। দাবদাহের দিনের সংখ্যার দিক থেকেও এটি রেকর্ড; অর্থাৎ স্বাধীনতার পর থেকে জুলাই মাসে এত বেশি উষ্ণ দিন দেখা যায়নি।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে দেশের তাপমাত্রা বাড়ছে। গ্রীষ্মের দাবদাহের পর জুন ও জুলাই মাসে দেশে বর্ষা শুরু হয়। বৃষ্টি বেশি হওয়ায় এ দুই মাসে তাপমাত্রাও কমে আসে। কিন্তু এক দশক ধরে আমরা দেখছি, বর্ষাকালেও দাবদাহ দেখা দিচ্ছে। এ বছর তো বাড়তি তাপমাত্রা, কম বৃষ্টিপাত ও দাবদাহের ক্ষেত্রে রেকর্ড হয়েছে। আবহাওয়ার এমন পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে হলে আমাদের জীবনযাত্রা ও কৃষিব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *