নির্মাণের আড়াই বছরেও চালু হয়নি কালকিনি পৌর বাসটার্মিনাল

মাদারীপুরের কালকিনিতে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে পৌর বাসটার্মিনাল নির্মাণ করা হলেও আড়াই বছরেও চালু করা সম্ভব হয়নি। ফলে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে যাত্রী ওঠানামা করায় বাড়ছে ঝুঁকি। এদিকে এক মাসের মধ্যে এটি চালুর আশ্বাস দিয়েছেন পৌরসভার মেয়র।

এদিকে চালু না হওয়ার কারণ অনুসন্ধানে কাজ শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।

কালকিনি পৌর কর্তৃপক্ষ জানায়, মাদারীপুরের কালকিনি পৌরসভার ৪২ নম্বর মজিদবাড়ি মৌজার ১ একর ৩০ শতাংশ জায়গার ওপর ২০১৮ সালের মে মাসে পৌর বাসটার্মিনাল নির্মাণ শুরু করে মিজান এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরের বছর (২০১৯ সালের) ডিসেম্বরে কাজ সমাপ্ত দেখিয়ে চূড়ান্ত বিল তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় নবনির্মিত বাসটার্মিনালটি আজও চালু হচ্ছে না। ফলে মাদকসেবী আর বখাটেদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছে এই বাসটার্মিনালটি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, তৎকালীন মেয়র এনায়েত হোসেন হাওলাদার দায়িত্বে থাকাবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ১৯টি পৌরসভার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে দুই কোটি ৫৫ লাখ ব্যয়ে এ বাসটার্মিনালটি নির্মাণ করা হয়। পদ্মা সেতু চালুর পর ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে কয়েকগুণ। কিন্তু বাসটার্মিনালটি চালু না হওয়ায় মহাসড়কের ওপরেই যাত্রী ওঠানামা করায় বাড়ছে ঝুঁকি। যাত্রীদের মানসম্মত সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে নির্মাণ করা হয় এই পৌর বাসটার্মিনালটি। এটি কি কারণে চালু করা যাচ্ছে না— এর রহস্য খুঁজে বের করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি যাত্রী ও পরিবহণ চালকদের।

বাসের যাত্রী মো. মহিউদ্দিন বলেন, এত সুন্দর বাসটার্মিনাল নির্মাণ করা হলেও এটি চালু করা হচ্ছে না। এটি চালু হলে স্বাচ্ছন্দ্যে গাড়িতে ওঠানামা করা যাবে। কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি দ্রুত এটি চালু করা হোক।

স্থানীয় বাসিন্দা সেলিম সরদার বলেন, এখানে বখাটেদের আড্ডা হয়। নেশা করে। আর রাত হলে ভুতুড়ে অন্ধকার হয় এখানে। এটি চালু হলে সবার ভালো হবে।

মাহিন্দ্র চালক তোফাজ্জেল সরদার বলেন, কোটি টাকা খরচ করে টার্মিনাল নির্মাণ করলেও কোনো লাভ হচ্ছে না। ফলে মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। এটি চালু হলে যানজট ও দুর্ঘটনা রোধ হবে।

বাসের চালক জব্বার শেখ বলেন, মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেড়েই চলছে। দ্রুত এটি চালু করা দরকার। আমাদের দাবি বাস টার্মিনালটি চালু করা হোক। এতে সরকার রাজস্বও পাবে।

মাদারীপুরের কালকিনি পৌরসভার মেয়র এসএম হানিফ বলেন, বাস টার্মিনালটি চালুর প্রধান বাধা সড়কের ওপর বড় বড় গাছ। এই গাছ সড়ক বিভাগের। এটি অপসারণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌরসভা কর্তৃপক্ষ সড়ক বিভাগকে চিঠি দিয়েছে। তারা বলছেন শিগগিরই গাছগুলো কেটে নিয়ে যাবে। আশা করছি এক মাসের মধ্যে বাসটার্মিনালটি চালু করা সম্ভব হবে।

মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, বাসটার্মিনালটি শিগগিরই চালুর লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। এরই মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কেন চালু হচ্ছে না এর কারণ খুঁজে বের করার জন্য। জনগণের জন্য নির্মিত বাসটার্মিনালটি দ্রুত চালু করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *