পাকিস্তানের একটি হাসপাতালের ছাদে অন্তত ২০০টি পচাগলা লাশ পাওয়া গেছে। এনিয়ে পাকিস্তানজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। খবরটি দিয়েছে দেশটির সংবাদ মাধ্যম জিও নিউজ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) পাকিস্তানের মুলতানের নিশতার হাসপাতালে মৃতদেহের শত শত অংশের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর দেশটির সরকার বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে বলে জানিয়েছে জিও নিউজ।
হাসপাতালের ছাদে শত শত লাশ, পাকিস্তানজুড়ে তোলপাড়
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে জিও নিউজ জানায়, নিশতার হাসপাতালের ছাদের একটি কক্ষে রাখা কয়েক ডজন লাশের পচন ধরেছে। অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ছাদ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে শতাধিক লাশের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ। অনেকেই বলছেন, এর সংখ্যা ৫ শতাধিক। তবে লাশের সংখ্যা নিয়ে কোনো সরকারি কর্মকর্তার পক্ষ থেকে স্বীকার করা হয়নি বা অস্বীকারও করা হয়নি।
এদিকে, পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর তারিক জামান গুজ্জার জানান, একজন ব্যক্তি নিশতার হাসপাতালের মর্গের ছাদে পচা মৃতদেহের কথা জানিয়েছে। তিনি বলেন, ওই সময় আমি নিশতার হাসপাতালে পরিদর্শনে ছিলাম, এ সময় গোপনে এক ব্যক্তি আমার কাছে এসে বললেন, আপনি যদি সত্যি কোন ভাল কাজ করতে চান তবে মর্গে যান। পরীক্ষা করে দেখুন সেখানে কি ঘটছে। গুজ্জার জানান, যখন তিনি সেখানে পৌঁছান তখন কর্মীরা মর্গের দরজা খুলতে চাচ্ছিল না। এ সময় তিনি বলেন, ‘তোমরা যদি না খোল আমি তোমাদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতে যাচ্ছি।’
এরপর মর্গ খোলা হয়। এ সময় মর্গের ভেতরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা লাশ দেখতে পান তিনি। শুধু তাই নয়, মর্গের ছাদে অন্তত ৩৫টি লাশ পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। তবে সংখ্যা এর থেকেও বেশি হতে পারে বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন গুজ্জর। গুজ্জর জানান, সব পচা লাশ। এমনকি নারীদের লাশ ঢাকাও ছিল না। তিনি আরও জানান, ছাদে থাকা দুই লাশে পোকা ধরে গেছে। এছাড়া কিছু লাশ শকুনে খাচ্ছে। গুজ্জর জানান, তিনি তার ৫০ বছরের জীবনে এমন দৃশ্য দেখেননি। চিকিৎসকদের কাছে জবাব চাইলে তারা জানান, মেডিকেল ছাত্ররা শিক্ষার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেছিল। গুজ্জর জানান, যদি চিকিৎসা শিক্ষার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়, তবে মৃতদেহগুলো জানাজার পর যথাযথভাবে দাফন করা উচিত ছিল, কিন্তু সেগুলি ছাদে ফেলে দেয়া হয়েছিল কেন।
এদিকে, পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চৌধুরী পারভেজ এলাহী এ ঘটনার জন্য প্রদেশের স্বাস্থ্যসেবা সচিবের কাছে একটি প্রতিবেদন চেয়েছেন। তিনি জানান, হাসপাতালের ছাদে মরদেহ ফেলা অমানবিক। দায়ী কর্মীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।