নারায়ণগঞ্জ শহরের বাবুরাইল এলাকায় টাকা ধার দেওয়ার কথা বলে এক গৃহবধূকে তিন ঘণ্টা আটকে রেখে দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) এ ঘটনায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী নারীর স্বামী।
পরে রাতেই এজাহারভুক্ত পাঁচ আসামির মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে সদর মডেল থানা পুলিশের একটি টিম।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২৩ অক্টোবর দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সদর থানাধীন বাবুরাইল বৌবাজার নয়াপাড়া এলাকার মজিবর রহমানের বাড়ির ভাড়াটিয়া সেলিনার ফ্ল্যাটে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন ওই গৃহবধূ।
মামলায় আসামিরা হলেন নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানার আমিন ২নং গলি এলাকার গিয়াস উদ্দিনের ছেলে সোহেল রানা (৩৪), বৌবাজার নয়াপাড়া এলাকার মৃত কবির হোসেনের মেয়ে সেলিনা (৩৫), সিরাজুল হকের ছেলে মোহাম্মদ আলী (৫৫), মেহেদী (৩০) ও সৌরভ (৩০)। এরমধ্যে প্রধান আসামি সোহেল রানা, ২নং আসামি সেলিনা এবং ৩নং আসামি মোহাম্মদ আলীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মামলা ও গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে সদর মডেল থানার পরিদর্শক খোকন চন্দ্র সরকার জানান, গত ২৩ অক্টোবর ভুক্তভোগী নারীকে টাকা ধার দেওয়ার কথা বলে কৌশলে সেলিনার ভাড়া বাসায় নিয়ে যায় সোহেল রানা। তার সহযোগিতায় চারজন মিলে ওই নারীকে ধর্ষণ করে। ২৫ অক্টোবর ওই নারীর স্বামী থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রধান আসামি সোহেল রানাসহ মোট তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী নারী দুই সন্তানের জননী। তার সঙ্গে প্রধান আসামি সোহেল রানার পূর্বপরিচয় ছিল। গত ২৩ অক্টোবর ওই নারী সোহেল রানার কাছে এক হাজার টাকা ধার চান। সোহেল টাকা দিতে রাজি হয়। টাকা নিতে ওই নারীকে শহরের ডিআইটি মোড় এলাকায় আসতে বলে। ওই নারী তার ১১ মাসের শিশু সন্তানকে নিয়ে ডিআইটি মোড় এলাকায় আসার পর সোহেল তাকে বলে যে, তার সঙ্গে এখন টাকা নেই। টাকা নেওয়ার জন্য বাসায় যেতে হবে। পরে দুপুর ১২টার দিকে সোহেল ওই নারীকে নিয়ে শহরের বাবুরাইল বৌবাজার নয়াপাড়া এলাকার জনৈক মজিবর রহমানের বাড়ির ৩য় তলার একটি ফ্লাটে নিয়ে যায়। ওই ফ্লাটে ২নং আসামি সেলিনার বাসা। ওই সময় সেলিনা ওই নারীর সঙ্গে থাকা ১১ মাসের শিশু সন্তানকে জোর করে কেড়ে নেয় এবং প্রধান আসামি সোহেল ওই নারীকে সেখানে ধর্ষণ করে।
ভুক্তভোগী নারীর বরাত দিয়ে এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২নং আসামি সেলিনা অন্যান্য আসামি মোহাম্মদ আলী, মেহেদী ও সৌরভকে ফোন করে তার ফ্ল্যাটে নিয়ে আসেন এবং পরবর্তীতে তারা সেলিনার সহায়তায় ওই নারীকে পালাক্রমে ধর্ষণ ও নির্যাতন করে।
বেলা ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত টানা তিন ঘণ্টা ওই নারীকে আটকে রেখে পাশবিক নির্যাতনের পর তাকেসহ শিশু সন্তানকেও হত্যার হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে মুক্তি দেয় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।