নির্বাচন কমিশনার (ইসি) বেগম রাশেদা সুলতানা বলেছেন, তৃপ্তি অতৃপ্তির সুযোগ নেই। আমাদের ইচ্ছা আমরা সুষ্ঠু, সুন্দর, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন করব। যেই নির্বাচনে ভোটার ভোট দিতে পারবে এবং সে বলতে পারবে যে আমি আমার ভোটটা দিয়েছি।
সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
চার (বরিশাল, খুলনা, সিলেট ও রাজশাহী) সিটি একপাক্ষিক ভোট হচ্ছে, এতে নির্বাচন কমিশনের তৃপ্তির জায়গা কতটুকু? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তৃপ্তি অতৃপ্তির কোনো বিষয় আমাদের নেই। নির্বাচনে কে আসবে, কে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে, কে করবে না সেটি একদম সম্পূর্ণ তাদের ব্যাপার। নির্বাচন কমিশনের কাউকে আনার সুযোগ আসলে ওইভাবে নাই। আসলে আমরা অবশ্যই আরও ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন পাব, কাজ করে বেশি আনন্দ পাব। না আসলেও তো আমাদের নির্বাচনগুলো করতে হবে। কারণ আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। শূন্য হলে এত দিনের মধ্যে করতে (নির্বাচন) হবে। কেউ আসছে না, এই জন্য তো আমরা এই জায়গায় স্টপ হয়ে যেতে পারি না। এই কারণে আমাদের তৃপ্তি বা অতৃপ্তির সুযোগটা আসলে নাই। আমরা এখনো আহ্বান করি যারা নির্বাচন আসছেন না, তারা আসুন।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে বলা হচ্ছে মডেল নির্বাচন। এসব নির্বাচনে ইভিএম ও সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যবহার করা হচ্ছ। তাহলে জাতীয় নির্বাচনে এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগাবেন কিভাবে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি রাশেদা বলেন, ইভিএমে ভোট করতে পারলে খুবই ভালো হতো। আমরা যারা ভোট কন্ডাক্ট করছি তারা খুবই স্বস্তিতে থাকতাম। কারণ ইভিএমের ভোটটা অনেক দিক দিয়েই সহজ। জাল ভোট হয় না, সহিংসতা যেটা, এমন নানান দিক থেকে গণনা করা সহজ। অত টাইমও লাগে না। কিন্তু ইভিএমটা হয় নাই, যে কারণে ইভিএমটা হলে খুবই ভালো হতো। হয় নাই, সে জন্য তো হাল ছেড়ে দিলে চলবে না। হয়নি (ইভিএম) তার জন্য তো আমরা নির্বাচন কমিশন বলতে পারব না যে, আমরা নির্বাচন করব না। এ কথা কি আমরা বলতে পারি? তা তো বলতে পারি না।
ব্যাখ্যায় তিনি আরও বলেন, যেহেতু অনেক আগে থেকেই ব্যালটে আমাদের নির্বাচনটা হয়ে আসছে, হয়তো কোনো সময় পছন্দসই হয়েছে, কখনো হয়তো পছন্দসই হয় নাই। যে কাজগুলো থেকে জনগণের কষ্ট হয়, আমরা ওই জায়গাগুলো নোটিশ করব। সে জায়গাগুলোতে ব্যাপক ওয়ার্ক করে সুষ্ঠু নির্বাচন করার চেষ্টা করব। মানুষ ভোট দিতে পারবে এটাই আমাদের আসল উদ্দেশ্য। সেটি সিটি করপোরেশন… কেন জাতীয় নির্বাচনেও আমরা সেই নীতিতেই থাকব।
কমিশনের অবস্থা তুলে ধরতে গিয়ে রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘কঠোরতা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে। পরিস্থিতি যদি ডিমান্ড করে আরও কঠোর হতে আমরা আরও কঠোর হব। পরিস্থিতি যদি মনে করে যে, আমরা যেভাবে চলছি সেভাবেই চলব। সেটা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে। আমরা কী করব না করব এখন অগ্রিম তো বলা কঠিন। তবে আমাদের ইচ্ছা আমরা সুষ্ঠু, সুন্দর, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন করব। যেই নির্বাচনে ভোটার ভোট দিতে পারবে এবং সে বলতে পারবে যে আমি আমার ভোটটা দিয়েছি।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকবে কী থাকবে না এই প্রশ্নের জবাবে কমিশনার বলেন, ‘এই মুহূর্তে বলা যাবে না। আমরা এই বিষয় নিয়ে এখনো বসিনি। আমাদের আরও নির্বাচন চলমান। আমরা এখন সেইটা নিয়ে ব্যস্ত। এদিকে আমাদের এখন মনোযোগ বেশি। এগুলো গেলে তারপরে যখন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বসব। জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কাজ করা শুরু করব। আমরা নতুন করে কী করব, না করব। তখন দেখব এখন কোনো কিছুই বলতে পারছি না।