এম আর অভি, বরগুনা প্রতিনিধি: বরগুনায় ৪০ শতাংশ পানিতে ব্যাকটেরিয়া দূষণ পাওয়া গেছে। তবে উন্নত উৎসের পানি পানের হার বেড়েছে । সম্প্রতি নেদারল্যান্ড ভিত্তিক দাতা সংস্থা সিমাভীর আর্থিক সহযোগিতায় ওয়াশ এসডিজি প্রকল্পের আওতায় পরিচালিত শেষ জরিপে এ ফলাফল পাওয়া যায়।
(২১ আগস্ট) সোমবার সকাল ১০ টায় বরগুনার আরডিএফ টাওয়ারে অনুষ্ঠিত সিমাভীর এন্ড লাইন ইভালুয়েশনে প্রাপ্ত ফলাফল উপস্থাপনা অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়। বেইজলাইন ও এন্ডলাইন (২০১৮-২০২৩) জরিপের প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী, উন্নত উৎস থেকে পানি পানের হার বেড়েছে। তবে এর ৪০ শতাংশ নমুনাতে ই-কলি ব্যাক্টেরিয়া এবং ৯ শতাংশ নমুনাতে আর্সেনিক পাওয়া গেছে। এছাড়া গড়ে ৯.৫ মিনিট পানীয় জলের উৎসের দূরত্ব কমেছে। বেইজলাইন জরিপে ১৭ শতাংশ গৃহস্থালির পানীয় জলের উৎস থেকে পানি সংগ্রহ করতে ৩০ মিনিটের বেশি সময় লাগত। এ ছাড়া খোলা জায়গায় মূলমূত্র ত্যাগ প্রায় শূন্যের কোটায় এসেছে। হাইজিন অনুশীলন ৯ শতাংশ থেকে ৯৩ শতাংশে। এ জরিপে মোট ১ হাজার ১১০টি খানা, ২৯টি স্কুল, ৯টি কমিউনিটি ক্লিনিক অংশগ্রহন করে বলে জানা গেছে । যেখানে আর্সেনিক, লবনাক্ততা এবং ই-কলি ব্যাক্টেরিয়া তিনটি প্যারামিটারে মোট ৫৫৫ টি খানার পানির নমুনা পরিক্ষা করা হয়। জরিপে কলাপারা পৌর এলাকার ১৬০ থানা অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ২০১৮ সালে প্রকল্পের শুরুতে পানি, স্যানিটেশন এবং হাইজিন সম্পর্কিত বিষয়ে জরিপ করা হয়েছিল এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারী থেকে মার্চ মাসে শেষ জরিপে একই বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করা হয়। এতে দেখা যায় প্রতিটি সূচকে পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিনের পরিস্থিতি উন্নীত হয়েছে। তবে ব্যাক্টেরিয়ার দূষন বেড়েছে। বেইজলাইনে যা ছিল ১৯ শতাংশ। সিমাভির মনিটরিং ইভালুয়েশন এন্ড লার্নিং অফিসার মো. শামসুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বরগুনা পৌরসভার প্যানেল মেয়র (৩)হোসনেয়ারা চম্পা। বিশেষ অতিথি ছিলেন বরগুনা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাইসুল ইসলাম, ওয়াশ এসডিজি নাগরিক কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট সঞ্জীব দাস, বুড়িরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির, কেওড়াবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান নসা, ঢলুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আজিজুল হক স্বপন, আমতলী পৌরসভার প্যানেল মেয়র হাবিবুর রহমান, বেতাগী পৌরসভার প্যানেল মেয়র এবিএম মাসুদুর রহমান ,সিমাভীর প্রতিনিধি সামীর কুমার পাল, প্র্যাকটিক্যাল একশন প্রতিনিধি গুলশান আরা মেরী , এইচপির প্রকল্প ব্যবস্থাপক মোঃ ওহিদুর রহমান, উত্তরণে প্রতিনিধি হাসিনা বেগম, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার প্রতিনিধি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মো. শফিকুল ইসলাম প্রমুখ। এছাড়াও সভায় বিভিন্ন শ্রেনী পেশার ৮০ জন নারী পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রতিনিধিগণ বলেন, ওয়াশ এসডিজি প্রকল্পের আওতায় কর্মসূচি গ্রহন করার ফলে স্থানীয় সরকার (পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ) পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন বাজেট বরাদ্দ কয়েকগুণ বৃদ্ধি করেছে এবং বাস্তবায়ন করেছে। পাশাপাশি ওয়াশ এসডিজি নাগরিক কমিটির সহায়তায় বিভিন্ন উঠান বৈঠক, ওয়ার্ড কমিটির সভাসহ বাড়ি পরিদর্শনে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীসহ সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে পানি, স্যানিটেশনের উন্নতি হয়েছে। সিমাভি এবং সহযোগী সংস্থা প্র্যাকটিক্যাল একশন,, হোপ ফর দ্যা পুয়োরেষ্ট, উওরণ, স্লোব বাংলাদেশ ,ডরপ প্রতিনিধিগণও সেমিনারে বক্তব্য রাখেন।