রাসেল কবির মুরাদ , কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি : মহিপুরে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা পরিচয়ে জমি দখলের অভিযোগ – শিরোনামে সংবাদ প্রকাশই কাল হলো সাংবাদিকদের। পদে পদে মাসুল দিতে হচ্ছে স্থানীয় তৃনমূল সাংবাদিকদের। এক যুগ ধরে সুনামের সাথে দাড়িয়ে থাকা মহিপুর প্রেসক্লাবের বিপরীতে আরেকটি ভূয়া মহিপুর থানা প্রেসক্লাব তৈরীসহ একের পর এক নানা ধরনের হুমকি-ধামকিতো রয়েছেই। এধরনের দলের ভাবমুর্তী নষ্টকারী-দূর্নামকারী স্বেচ্ছাসেবক লীগ থেকে অব্যহতিসহ শাস্তির দাবি স্থানীয় সকল তৃনমূল সাংবাদিকদের।
মহিপুর প্রেসক্লাব সূত্রে জানা যায়, গত ১ ডিসেম্বর মহিপুর সদর ইউপির নিজামপুর গ্রামে বেড়িবাঁধের বাইরে ২ একর সরকারি খাস জমিতে প্রায় ২০-২৫ জন লোক নিয়ে ক্রয় সূত্রে মালিক মো. ছগির খান সাইনবোর্ড সাটিয়ে দেন পটুয়াখালী জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মো. ছগির খান।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে ও স্থানীয়দের বিস্তর অভিযোগের ভিত্তিতে গিয়ে জানা যায়, মহিপুর প্রেসক্লাবের ১০-১২ জনের একটি টিম। তখনই সাংঙ্গোপাঙ্গো নিয়ে সেখানে হাজির হয় ওই স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা। সংবাদ প্রকাশ করলে দেখে নেওয়ার হুমকিসহ অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করেন সংবাদকর্মীদের। পরে ফেইসবুকে পোস্ট করে সাংবাদকর্মীদের কাছে ক্ষমা চান তিনি। তবে এসব কিছুতে কর্নপাত না করে সংবাদ প্রকাশ করে সাংবাদিকরা। জিটিভি, চ্যানেল ২৪ সহ একাদিক ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মডিয়ায় সংবাদটি প্রকাশিত হলে নরেচরে বশে প্রশাসন, জব্দ করে সাইনবোর্ড। এর পরই সাংবাদিকরা টাগের্টে পরে যান ওই নেতার। তার অনুসারী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রদল নেতাদের নিয়ে ২১ ফেব্রুয়ারী তৈরী করেন মহিপুর থানা প্রেসক্লাব। তবে পেশাদার সংবাদকর্মী না থাকায় অস্তিত্বহীন হয়ে পরে সংগঠনটি। মহিপুর প্রেসক্লাবের ক্ষতি করতে না পেরে টার্গেট করে সংবাদকর্মীদের। মহিপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও জিটিভির কুয়াকাটা-কলাপাড়া প্রতিনিধি মনিরুল ইসলামের লিজকৃত জমিতে ঘর তুলতে গেলে অনুদান দাবি করেন ওই নেতা। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় অবৈধ ভাবে সরকারি জমিতে ঘর তুলছে বলে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেন ওই নেতা। এর ফলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে এক অফিস থেকে অন্য অফিসে ঘুরতে হয় ভুক্তভোগী মনিরুল ইসলামকে। ভুক্তভোগী মনিরুল ইসলাম ও স্থানীয় সংবাদকর্মীরা মনে করছেন এখনই ব্যবস্থা না নিলে আরো বেপরোয়া হয়ে পরবে এই ছগির।
স্থানীয় শুঁটকি ব্যবসায়ী হান্নান মিয়া বলেন, ওই জমিটা মূলত আমাদের রেকর্ডীয় জমির পাশে। প্রায় ২০ বছর ধরে আমরা ওই জমিতে শুঁটকি শুকিয়ে রোজগার করছি। স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা পরিচয়ে মো. ছগির নামের একজন সাইবোর্ড টানিয়ে জমিটির দখল নেওয়ার চেষ্টা করে এবং আমাদের শ্রমিকদের গায়ে হাত তোলে, আমার স্থানীয় সংবাদকর্মীদের সঠিক সংবাদ প্রচারের অনুরোধ জানাই।
মহিপুর থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জামাল মিয়া জানান, তার কর্মকান্ডে আমরা বিব্রত। দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। মহিপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ফেরদৌস হাওলাদার জানান, সে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি হওয়ার পরই জমি দখল ও সাধারণ মানুষদের হুমকি-ধামকিসহ নানা অপকর্ম করে আসছে। তার কর্মকান্ডে আমরা বিব্রত।
মহিপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও জিটিভির কুয়াকাটা-কলাপাড়া প্রতিনিধি মনিরুল ইসলাম জানায়, সংবাদ প্রকাশ ও চাঁদা না দেওয়ায় আমি এবং আমার প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে অপপ্রচার করছে। আমি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
অভিযুক্ত পটুয়াখালী জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মো. ছগির খানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
উল্লেখ্য, এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তার ফেইসবুকে ভুক্তভোগী মনিরুল ইসলাম ও তার প্রতিষ্ঠানকে আক্রমন করে একাদিক পোষ্ট দেখা গেছে।