গাইবান্ধা থেকে আঃ খালেক মন্ডলঃ প্রতিনিধি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) একটি আবাসিক হলে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে গাইবান্ধায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের যৌথ উদ্যোগে মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শহরের গানাসাস মার্কেটের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি সারাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নেই। নারীদের যে নিরাপত্তা, তা আমরা দেখি না। বহুদিন ধরে বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি, তার জের ধরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন দম্পতিকে ডেকে এনে পরিকল্পিতভাবে দলবদ্ধ ধর্ষণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। সেখানকার এক ছাত্রলীগের নেতা এবং এক বহিরাগত পরিকল্পনা করে এ নেক্কারজনক ঘটনা ঘটানোর পরও জাবি প্রশাসন চুপ থাকায় আমরা হতবাক।
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে যারা নীতি নির্ধারক পর্যায়ে যাবে এবং দেশ পরিচালনা করবে তাদের বিবেক আজ কোথায় দিয়ে দাঁড়িয়েছে- এমন প্রশ্ন তুলে বক্তারা আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখন গণধর্ষণের শিকার হতে হয়, শিক্ষক দ্বারা লাঞ্ছিত হতে হয় এবং বন্ধু দ্বারা হয়রানি হতে হয়। সারাদেশে সব জায়গায় এখন নারীদের নিরাপত্তা নেই। নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ২০২০ সালের ধর্ষণের ঘটনা এবং সিলেটের এম সি কলেজ গণধর্ষণের মত ঘটনায় বিচারহীনতা লক্ষ্য করা গেছে। এ বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকেই সমাজে ধর্ষণ বেড়ে চলেছে। বক্তারা এই সংঘবদ্ধ ধর্ষণের সাথে জড়িত প্রত্যেকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি অবিলম্বে নিশ্চিত করার দাবি জানান। সেইসাথে আগামী দিনে জনগনকে জুলুম-নির্যাতন-ধর্ষনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান।
বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সুভাসিনী দেবীর সভাপতিত্বে এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের গাইবান্ধা জেলার সাধারণ সম্পাদক রাহেলা সিদ্দিকার পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন নারীমুক্তি কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিলুফার ইয়াসমিন শিল্পী, ছাত্র ফ্রন্টের জেলা সভাপতি পরমানন্দ দাস, কলেজ শাখার সভাপতি কলি রানী বর্মন, সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান বসুনিয়া প্রমুখ।
প্রসঙ্গত; গত শনিবার (৩ ফেব্রæয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হল সংলগ্ন জঙ্গলে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্তরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান ও বহিরাগত মামুন (৪৫)। ঘটনার মূল অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এবং মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। তিনি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর দায়ের করা মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ।