কোটায় ভর করে সরকার হটাতে চায় বিএনপি: ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ। হেরে যাওয়ার ভয়ে নির্বাচনেও যায়নি। এখন তারা কোটাবিরোধী আন্দোলনের ওপর ভর করছে। এ আন্দোলনের ওপর ভর করে সরকার হটানোর অভিসন্ধি-দুরভিসন্ধি বাস্তবায়ন করাই এখন তাদের লক্ষ্য। এ অশুভ শক্তির ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। মঙ্গলবার ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক যৌথ সভায় তিনি এ কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন অরাজনৈতিক। এ আন্দোলনে বিএনপি ও তাদের সমমনারা রাজনৈতিক সমর্থন দিয়েছে। এ বিষয়টা নিয়ে ভাবতে হবে। যেন এই অশুভ মহলটি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উসকানি এবং ইন্ধন দিয়ে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যতটুকু জানি, কোটা সংস্কারের যে আন্দোলন শিক্ষার্থীরা করছেন, আজ (মঙ্গলবার) তাদের নির্ধারিত কোনো কর্মসূচি নেই। সেজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই। এমনও আমরা শুনেছি, তারা উচ্চ আদালতে মামলা চালাতে আইনজীবী নিয়োগ করেছেন এবং আদালতে যথাসময়ে হাজির হবেন। এটাও যৌক্তিক সিদ্ধান্ত।’ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আন্দোলনকারীরা কোটা বাতিল নয়, সংস্কার চান। তারা নিজেরাই যখন তাদের প্রতিনিধি আইনজীবী কোর্টে প্রতিনিধিত্ব করবে, তাদের কথা কোর্ট শুনবে, সরকার পক্ষের কথাও শুনবে। সব পক্ষের কথা শুনে দেশের সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগ বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত নেবে। ওই পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্যধারণ করার জন্য অনুরোধ করব।’

তিনি বলেন, ‘জনদুর্ভোগ যেন সৃষ্টি না হয়, এ ব্যাপারে আন্দোলনকারীদের সতর্ক মনোযোগ আকর্ষণ করছি। এ নিয়ে আমাদের কারও কোনো উসকানিতে যাব না। আমাদের কেউ উসকানিতে যেন না যায়, সেজন্য সবাইকে সতর্ক ও স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। ছাত্রলীগকে সতর্কভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও নেত্রী নির্দেশ দিয়ে গেছেন, তাদের পক্ষ থেকেও যেন উসকানি না দেওয়া হয়।’

আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে বসার কথা ছিল, সেটা কবে বসবেন-এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আনুষ্ঠানিকভাবে বৈঠকে বসব আমরা কি বলেছি? আমাদেরও তো অসুবিধার বিষয় থাকতে পারে। আমরা তাদের প্রতি কোনো অসম্মান করছি না। আমরা তাদের আন্দোলন পর্যবেক্ষণ করছি। সময়মতো এর সমাধান হয়ে যাবে বলে আশা করছি।’

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিষয়টা আইনগত, রাজনৈতিক নয়। এখন বিএনপি সবকিছুতেই রাজনীতির গন্ধ খুঁজে পায়। তারা খালেদা জিয়ার জন্য লিগ্যাল ব্যাটেলটা করেনি। মাসের পর মাস আদালতে উপস্থিতি থেকে তারা খালেদা জিয়াকে বিরত রেখেছে। তাকে উপস্থিত হতে দেননি। মামলাটাকে প্রলম্বিত করা হয়েছে। জামিনও চায়নি। আর এই শহরে দৃশ্যমান একটা বিক্ষোভ মিছিল বিএনপি করেছে এমন প্রমাণ আমাদের কাছে নেই।’

সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল হোসেন, অর্থ সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান, কৃষি সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আবদুস সবুর, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *