রাষ্ট্রপতির সরকারি বাসভবন বঙ্গভবনের দরবার হল থেকে বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের নবনিযুক্ত উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। সোমবার বেলা ১১টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘এটা আমাদের জন্য লজ্জার যে, আমরা ৫ আগস্টের পর বঙ্গভবন থেকে তার ছবি সরাতে পারিনি। কিন্তু জুলাইয়ের চেতনা বেঁচে থাকা পর্যন্ত তাকে আর কোথাও দেখা যাবে না।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘শেখ মুজিব ও তার কন্যা অগণতান্ত্রিক ১৯৭২ এর সংবিধান থেকে শুরু করে দুর্ভিক্ষ, কোটি কোটি টাকা পাচার এবং হাজার হাজার ভিন্নমতাবলম্বী ও বিরোধীদের বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ (৭২-৭৫, ২০০৯-২০২৪) বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে যা যা করেছেন, আওয়ামী লীগকে তা অবশ্যই স্বীকার করতে হবে এবং ক্ষমা চাইতে হবে। তাহলেই কেবল আমরা ১৯৭১-এর আগের শেখ মুজিবের কথা বলতে পারি।’
ওই ফেসবুক পোস্টে মাহফুজ আলম লেখেন, ‘ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত এবং ফ্যাসিস্টদের বিচার না করা পর্যন্ত কোনো ধরনের সমঝোতা হবে না।
গত ২৮ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লিয়াজোঁ কমিটির প্রধান সমন্বয়ক মাহফুজ আলমকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। রোববার তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পান।
মাহফুজ আলম তাঁর ফেসবুক পোস্টে একটি ছবিও যুক্ত করেছেন। ছবিটি আরেক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ তুলেছেন বলে পোস্টে উল্লেখ আছে। ছবিতে মাহফুজ আলমকে দরবার হলে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। তিনি যে জায়গায় দাঁড়িয়ে ছবিটি তুলেছেন, সেখানকার দেয়ালে আগে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি ছিল। তিনি আজ যে ছবিটি পোস্ট করেছেন, সেখানে শেখ মুজিবুর ছবি দেখা যায়নি।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের সংবিধানের চার (ক) অনুচ্ছেদে, শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার ও প্রধান বিচারপতির কার্যালয় এবং সকল সরকারি ও আধা-সরকারি অফিস, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, সংবিধিবদ্ধ সরকারী কর্তৃপক্ষের প্রধান ও শাখা কার্যালয়, সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস ও মিশনে সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের কথা বলা হয়েছে।