ভোলায় ৫ বছর আগে বিএনপির অফিসে হামলার ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের ১৬ নেতা রোববার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিনের জন্য আবেদন করেন। তবে জামিন নামঞ্জুর করে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এদিন মামলার আসামিদের মধ্যে সিনিয়র সিটিজেন হিসেবে জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি দোস্ত মাহামুদ এবং অসুস্থ ক্র্যাচে ভর দিয়ে হাঁটা পৌর কাউন্সিলর মিজানুর রহমানকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়।
শুনানিতে অপর ১৬ জনের জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন জেলা ও দায়রা জজ এএইচএম মাহামুদুর রহমান।
এদিকে জামিন না দেওয়ায় জেলহাজতে নেওয়ার সময় ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান’ দেন নেতাদের অনেকে।
২০১৯ সালের ৫ মার্চ জেলা বিএনপি অফিস ভাঙচুর, জেলা বিএনপির সভাপতিকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ার ঘটনার ৫ বছর পর ২০২৪ সালের ২ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদসহ ৮৬ জনকে আসামি করে ভোলা থানায় মামলা করেন বিএনপি কর্মী আরিফ হোসাইন।
মামলার আসামি তোফায়েল আহমেদের পাশাপাশি সাবেক ৩ সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল, নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন, আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, সাবেক ৪ পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম, জাকির হোসেন, জাকির হোসেন তালুকদার, মো. মোর্শেদ, এমদাদুল ইসলাম তুহীন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মনজুর আলম, উপজেলা চেয়ারম্যান জয়নাল আবদীন, আখতারুজ্জামান টিটব, জাফরউল্লাহ চৌধুরী, সাবেক পৌর মেয়র বাদল কৃষ্ণ দেবনাথ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মইনুল হোসেন বিপ্লবসহ অঙ্গসংগঠনের নেতারা।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয় সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদকে। যিনি গত ৩ বছর যাবত প্যারালাইজড।
এদিকে রোববার যাদের জামিন মঞ্জুর হয়নি তারা হচ্ছেন- জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক পৌর প্যানেল মেয়র সালাউদ্দিন লিংকন, তার বড় ভাই সাবেক পৌর কাউন্সিলর ফেরদৌস আহমেদ, জেলা শ্রমিক লীগের সাবেক সভাপতি ও পৌর কমিশনার শাহেআলম, যুবলীগের সম্পাদক ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর আতিকুর রহমান, যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন, যুবলীগের যুগ্ম-সম্পাদক আলী জিন্নাহ, দক্ষিণ দিঘলদী আওয়ামী লীগের সম্পাদক কামাল হোসেন, যুবলীগ নেতা ইভান, ঠিকাদার সমিতির সভাপতি রুহুল আমিন কুট্টি।
বিবাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খায়ের উদ্দিন ও অ্যাডভোকেট গোলাম মোর্শেদ কিরণ যুগান্তরকে জানান, ৫ বছর আগে যাদের এ মামলার ঘটনার সঙ্গে বিবাদী করা হয়েছে, তারা কেউ জড়িত ছিলেন না। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকায় মহামান্য হাইর্কোটের নির্দেশে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিন প্রার্থনা করেন ১৮ জন। ১৬ জনকে আদালত জামিন না দেওয়ায় তারা হতবাক হয়েছেন বলেও জানান দুই আইনজীবী। ওই মামলায় চিহ্নিত ৮৬ জন ও অজ্ঞাতনামা রাখা হয়েছে ৪০০ জনকে। ফলে এ মামলার পরই এলাকা ছাড়া জেলা ও উপজেলার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।