ঢাকা মেডিকেল কালেজ হাসপাতাল ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। ঢামেকের লিফটে ওঠাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। এতে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সেবা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন রোগীরা।
ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষের পর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মূল ফটকের ভেতরে চিকিৎসকরা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা অবস্থান নিয়েছে। দুই পক্ষের মাঝে রাস্তা কড়া অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে আমাদের মেডিকেল প্রতিনিধি জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহসিন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিরাজের মা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল-২ এ ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় তাকে দেখতে যান মিরাজের বন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্র আশিক ও জসিম। তারা চিকিৎসকের জন্য বরাদ্দ লিফটে ওঠলে চিকিৎসকরা নিষেধ করেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি।
ছাত্র ও চিকিৎসকদের মধ্যে হাতাহাতির এক পর্যায়ে মারামারি বেঁধে যায়। খবর পেয়ে আরো ইন্টার্নি চিকিৎসকরা সেখানে যায়। তারা দুই ছাত্রকে গণপিটুনি দেয়। পরে এ ঘটনা নিয়ে হাসপাতালের পরিচালকের কনফারেন্স রুমে বৈঠক বসে। সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর শরীফ সমঝোতার উদ্দেশে উপস্থিত হন। তিনি বিষয়টির জন্য দুঃখ প্রকাশ করছিলেন, এমন সময় ইন্টার্নি চিকিৎসকরা ‘তুই বলার কে’ বলে তার সঙ্গে উচ্চবাচ্য করে। এরপর শরীফ সেখান থেকে বেরিয়ে চলে যান।
বেলা একটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে জড়ো হন। সেখানে তারা হাসপাতালের কাঁচ ও বিভিন্ন আসবাবপত্রে ভাঙচুর চালান। এ সময় পুলিশ ও আনসারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। পরে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রবেশের প্রধান ফটক আটকে দেন ইন্টার্নি চিকিৎসকেরা। এতে জরুরি বিভাগে চিকিৎসাসেবা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। চরম দুর্ভোগে পড়েন রোগীরা।
বিকেল চারটায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত হাসপাতালে রোগী ভর্তি ও জরুরি বিভাগের সব সেবা বন্ধ রয়েছে। রোগী নিয়ে কোনো গাড়ি হাসপাতালে ঢুকতে পারছে না। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মূল ফটক আটকে ভেতরে অবস্থান নিয়েছেন চিকিৎসকরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা রয়েছেন শহীদুল্লাহ হলের সামনে।