ডেস্ক রিপোর্ট : কাউন্সিলর নজরুল ইসলামসহ সাতজনকে তুলে নিয়ে হত্যার মধ্যে নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী মো. আমানউল্লাহ নিখোঁজ হওয়ার নাটক সাজিয়েছিলেন বলে ধারণা করছে পুলিশ।
সোমবার সকাল থেকে নিখোঁজ এই ব্যবসায়ীকে নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দ থেকে আটক করে মঙ্গলবার রাত সোয়া ১০টার দিকে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়।
বন্দর থানার ওসি আক্তার মোর্শেদ সাংবাদিকদের বলেন, আমানউল্লাহ মাগুরায় লুকিয়ে ছিলেন। অবস্থান সনাক্তের পর তার গতিবিধির দিকে নজর রাখার হচ্ছিল। শেষ লাঙ্গলবন্দ থেকে তাকে আটক করা হয়।
আমান বন্দরের দক্ষিণ মুছাপুরের মিনার বাড়ি এলাকার মৃত মিছির আলীর ছেলে। নারায়ণগঞ্জ শহরের ২ নং রেলগেইট এলাকায় তিনি কাপড়ের ব্যবসা করেন।
গাজীপুর থেকে কাপড় আনতে ৪ লাখ টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হওয়ার পর আমানের পরিবার রাতে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে।
এরপর পুলিশ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে তদন্ত শুরু করে বলে জানান নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার খন্দকার মুহিদ উদ্দিন।
আমানকে আনার পর নিজের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আমরা তার মাগুরায় অবস্থান ট্র্যাক করি। তিনি এরপর ঈগল পরিবহনের একটি বাসে ফিরে আসছিলেন।”
আমান অপহৃত হননি, নিজেই মাগুরায় গিয়েছিলেন জানিয়ে পুলিশ সুপার মুহিদ এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে পুলিশকে বিভ্রান্তিতে না ফেলতে সবার প্রতি আহ্বান জানান।
“যে সময়টা আমরা এর পেছনে দিয়েছি, তা অন্য কাজে দেয়া যেত।”
আমানের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অঘটন না ঘটায় নিজের সন্তোষ জানান মুহিদ উদ্দিন।
তবে আমান কেন মাগুরা গেলেন এবং মোবাইল ফোন বন্ধ রেখেছিলেন, সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা পায়নি পুলিশ। এজন্য তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
দাম্পত্য কলহের কারণে আমান নিরুদ্দেশ হয়েছিলেন কি না- প্রশ্ন করা হলে এসপি বলেন, মনে হয় না। সে ক্ষেত্রে তিনি কেন মাগুরায় যাবেন।
আমানের বড় ভাই মোক্তার হোসেন সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পণ্য কিনতে সোমবার সকাল ৬টার দিকে ৪ লাখ টাকা নিয়ে বন্দর থেকে গাজীপুরের দিকে রওনা হন তার ভাই। সকাল ৯টা থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাচ্ছিলেন তারা।
“মোবাইল বন্ধ পেয়ে গাজীপুরের যাদের কাছ থেকে আমানউল্লাহ মাল কেনে তাদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছি। কিন্তু আমানউল্লাহ গাজীপুরে যায়নি বলে জানিয়েছে তারা।”
মোক্তার জানান, দুপুর ২টার দিকে তাদের বড় ভাই আমির হোসেনের মোবাইল ফোনে অপরিচিত নম্বর থেকে একটি কল আসে ।
“ফোনে অপরিচিত এক ব্যক্তি আমানউল্লাহকে টঙ্গীতে খোঁজার পরামর্শ দেন। এরপর টঙ্গী, গাজীপুর এবং এর আশপাশে আমরা খুঁজে এসেছি, কিন্তু তাকে পাইনি।”
কোথাও খুঁজে না পেয়ে রাতে থানায় জিডি করে আমানের পরিবার।
গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ থেকে তুলে নেয়া হয় কাউন্সিলর নজরুলসহ সাতজনকে। তিনদিন পর তাদের লাশ মেলে শীতলক্ষ্যা নদীতে।
এর মধ্যেই সাইফুল ইসলাম নামে নারায়ণগঞ্জের এক ব্যবসায়ী অপহৃত হন। পরদিন সাভারের নবীনগরে তাকে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।
এর পরপরই আমানের এই ঘটনা ঘটল।
গত সপ্তাহে চট্টগ্রামে অপহরণের দুটি অভিযোগ তদন্তে গিয়ে সাজানো ঘটনার প্রমাণ পায় পুলিশ। বিডিনিউজ