সবাই জানে- কেন মানুষ মিথ্যা বলে। বিচিত্র সব কারণ রয়েছে এর পেছনে। কেউ কেউ বলেন কোন স্বার্থসংশ্লিষ্ট কারণে। সম্পূর্ণ বিনা কারণেও বলেন অনেকে। আবার বিপরীতও দেখা যায়। অনেকেই আছে কেবল কোন না কোন মঙ্গলের জন্য মিথ্যা বলেন। তবে কারণ যা-ই থাকুক। মারাত্মক ক্ষতিকর এটি। তাই আপনি যদি এখনও মিথ্যার চর্চা করে থাকেন তবে, জেনে নিন কেন মানুষ মিথ্যা বলে তার কয়েকটি অযৌক্তিক কারণ:
তারা সত্য বলতে ভয় পান
যে কারণে মানুষ মিথ্যা বলে তার মধ্যে অন্যতম হলো সত্য বলতে তারা ভয় পান। আর ভয়ের কারণ হচ্ছে যিনি ভয় পান তিনি হয়তো কোন অন্যায় করেছেন। সুতরাং আপনিও সত্যি বলার মতো সাহস অর্জন করুন, দেখবেন সত্য বলায় আসলে ভয়ের কিছু নেই। কেননা সত্য বলা মানেই অন্যায় না করা। আপনি যতোই সত্যের চর্চা করবেন জীবন হয়ে উঠবে ততোই পরিপূর্ণ এবং শান্তির।
তারা আসলে দায় এড়াতে চান
মিথ্যা বলার ক্ষেত্রে এটাও একটা প্রধান কারণ যে তারা তাদের কাজের ক্ষেত্রে দায় এড়াতে চান। কেউ যদি কখনও স্বীকার করেন যে তিনি ভুল করেছেন এবং তিনি হয়তো জানেন না কিভাবে ভুলটা করেছেন। এ ক্ষেত্রে তিনি মিথ্যার আশ্রয় নেন এবং তিনি আসলে তার কোন ভুলের কিংবা অপারগতার দায় অন্যের ওপর চাপাতে চান। সুতরাং অন্যের ওপর দায় চাপানোর প্রবণতা থেকে সরে এসে নিজের কোন অযোগ্যতা থাকলে তা স্বীকার করুন। দেখবেন এতে আপনার ওই অযোগ্যতাও দূর হবে। সবার সঙ্গে যুক্ত হওয়া এটা আপনার কাছে একটি সারপ্রাইজ হতে পারে যে মিথ্যা দিয়ে কিভাবে সবার সঙ্গে যুক্ত হওয়া যায়। কিন্তু এমন অনেকে আছেন যারা তাদের মিথ্যা বলার ভেতর দিয়ে অন্যের কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে চান। এটি আসলে একটি বোকামি। আমাদের মধ্যে অনেকেরই কোন কিছুকে অলঙ্কৃত কিংবা অতিরঞ্জিত করার প্রবণতা রয়েছে। এর মাধ্যমে বন্ধু-বান্ধবদের সহানুভূতি আদায় করতে চাই। তবে এ ক্ষেত্রে উত্তম হবে যদি আপনি সত্যের চর্চা করেন। তখন অন্যের সহানুভূতি বরং বেশিই পাবেন।
শাস্তি এড়ানো
ব্যর্থতা কিংবা ভুল অথবা কোন অন্যায় করার ফলে প্রাপ্য শাস্তি এড়াতেও মানুষ মিথ্যা বলে। বিশেষ করে শৈশবে। শিশু বয়সের ওই প্রবণতাই তাকে পরবর্তীতে মিথ্যা বলার চর্চার দিকে নিয়ে যায়। কেননা শাস্তি বা এ ধরনের বিপদের হাত থেকে বাঁচার এটাই একমাত্র পথ বলে তারা মনে করে। কিন্তু এটি কোন সঠিক পথ নয়। আপনার উচিৎ আপনার কৃতকর্মের দায় আপনারই বহন করা এবং কাজের পরিনতি মোকাবিলা করা। এতে প্রকারান্তরে আপনারই লাভ হবে। কারণ মিথ্যা কোন প্রশ্নের উত্তর হতে পারে না।
অন্যের মনে আঘাত দিতে চান না
গবেষণায় দেখা গেছে, কতকগুলো নির্ধারিত পরিস্থিতিতে মানুষ মিথ্যা বলে। এর মধ্যে একটি অন্যতম হচ্ছে তিনি আসলে অন্যের অনুভূতিতে আঘাত দিতে চান না। বিশেষ করে তার ভালবাসার কোন মানুষকে হতাশ করতে চান না। যখন কেউ তার নিজের ওপর অনেক বেশি প্রত্যাশা করেন এবং কোন কাজ নিয়ে অনেক বেশি চাপের মুখে থাকেন। যেমন কেউ হয়তো দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে আপনাকে দিয়ে কাজটি হবে। সে ক্ষেত্রে কোন কারণে আপনি তা পারেন নি- এর মাধ্যমে আপনি আসলে আপনার নিজের ব্যাপারে তার বিশ্বাসকে ভাঙ্গতে চান না। সুতরাং অন্যের মন ভাঙ্গার ঝুঁকি নেওয়ার চেয়ে আপনার উচিৎ সৎ থাকা।
সুবিধা আদায়ের আকাঙ্খা
এটি কোন গোপন বিষয় নয় যে বিভিন্ন সুবিধা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা থেকেই অধিকাংশ মানুষ মিথ্যা বলে। ধরুন, আপনি কোন চাকরির জন্য ইন্টারভিউতে গেলেন। সেখানে বোর্ডের প্রশ্নের উত্তরে আপনি এমন সব কথা বললেন যেগুলি আপনার চাকরিটি পাওয়ার ক্ষেত্রে অনুকূলে যায়। অথচ এটি আসলে আপনার ক্ষেত্রে সত্য নয়। তারপরও আপনি এটা বলেছেন এ কারণে যে, আপনি ভেবেছেন এতে আপনার স্বপ্নের চাকরিটি মিলবে। সুতরাং এখানেও আপনাকে সত্যটি বলতে হবে কেননা, এতে পরবর্তীতে আপনার ওপর অন্যের বিশ্বাসযোগ্যতার ঘাটতি দেখা দেবে।
অন্যকে প্রভাবিত করা
কোন কিছু প্রমাণের জন্য মিথ্যা বলা সাময়িকভাবে আপনার অনুকূলে যেতে পারে কিন্তু এতে পরবর্তীতে আপনিই অসুবিধায় পড়বেন। মনে রাখবেন, অন্যকে কিংবা অন্যের কোন সিদ্ধান্তকে মিথ্যা দিয়ে প্রভাবিত করা কোন স্থায়ী সমাধান নয়। কারণ সত্য এক সময় প্রকাশ পাবেই। তখন ওই ব্যক্তি জেনে যাবে যে আপনি মিথ্যা বলেন। আপনার সব কৃতিত্ব উবে যাবে তখন। এতে আপনার মতামতের কোন মূল্য দেবে না কেউ। তা ছাড়া কেউ যখন একটি মিথ্যা বলে তখন তা প্রতিষ্ঠিত করতে আরো ১০টি মিথ্যার আশ্রয় নিতে হয় তাকে। এভাবে ক্রমাগত মিথ্যার চর্চাকে উসকে দেয় প্রথম মিথ্যাটি।