আদালতে কোরআন শপথ করে অভিযোগ অস্বীকার

botmol-300x188 বহুল আলোচিত রমনা বটমূলে বোমা হামলা মামলায় যুক্তিতর্ক শুনানিতে পবিত্র কোরআন শপথ করে ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আসামি মাওলানা সাব্বির ওরফে আব্দুল হান্নান সাব্বির।
বৃহস্পতিবার মামলাটির যুক্তিতর্ক শুনানিতে ওই আসামির আইনজীবী তার পক্ষে প্রায় ১ ঘণ্টা ব্যাপী আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।
আইনজীবীর উপস্থাপনা শেষে কাঠগড়ায় থাকা সাব্বির নিজে কিছু বলার অনুমতি চাইলে বিচারক অনুমতি দেন। এরপর সে কাঠগড়া থেকে বের হয়ে আইনজীবীদের বক্তব্য রাখার ডায়াসে এসে সঙ্গে থাকা তার ব্যাগ থেকে পবিত্র কোরআন বের করেন।
নিজেও রমনা বটমূলে বোমা হামলার বিচার চান উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা ন্যায় বিচার চাই। আমি যদি জড়িত থাকি তবে আমার দ- হোক। এ মামলায় আমরা অভিযোগ অস্বীকার করছি, আর রাষ্ট্রপক্ষ আমদের দোষী বলে উল্লেখ করছেন।
এরপর তিনি পবিত্র কোরআন বের করে সূরা আল-ইমরানের ৬০ নস্বর আয়াত পড়ে শুনিয়ে তার বাংলা তরজমায় বলেন, যখন ২টি পক্ষের মধ্যে একটি পক্ষ একটি বিষয় একরকম বলে দাবি করেন। অন্যপক্ষ বিষয়টি অন্যরকম বলে দাবি করেন। কেউই উক্ত বিষয়ে একমত হতে পারেন না। তখন পবিত্র কোরআনের বিধান উভয়পক্ষ শপথ করে বলবে যারা মিথ্যা বলছেন তারা যেন ধ্বংস হয়। আমাকে আটকের পর র‌্যাব-১ আমাকে ২ মাস গুম করে রেখেছিল। আমি জড়িত থাকলে নিজেই স্বীকারোক্তি দিতাম।
এরপর তিনি পবিত্র কোরআন শপথ করে বলেন, আমি এই ঘটনায় জড়িত নই। আমি কিছুই জানি না, আমি নির্দোষ। মুফতি হান্নান কাঠগড়ায় আছেন, সে আমার নাম বলেছেন, তাকে এখন জিজ্ঞাসা করুন আমি ছিলাম কি না?
ওই সময় কাঠগড়ায় থাকা আরেক আসামি মাওলানা শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ বলে ওঠেন, আমরা কয়েকজন কোরআন শপথ করে বলতে পারি আমরা এই ঘটনায় জড়িত নই।
এরপর বিচারক দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ রুহুল আমিন ওই আসামির উদ্দেশে বলেন, এখানে কোরআনিক আইনে বিচার হচ্ছে না। তাই কোরআন দেখার সুযোগ নেই।
পরে বিচারক আগামী ১৮ মে যুক্তিতর্ক শুনানির পরবর্তী দিন ঠিক করেন। ওইদিনই রায়ের দিন ঘোষণা করতে পারেন বিচারক।
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মামলার ১৪ আসামির মধ্যে ১৩ জনের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়েছে।
২০০৮ সালের ২৯ নভেম্বর হুজি নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল হয়।
মামলার ১৪ আসামির মধ্যে মুফতি আব্দুল হ্ন্নান, আরিফ হাসান সুমন, শাহাদত উল্লাহ ওরফে জুয়েল, হাফেজ মাও. আবু তাহের, মাও. আ. রউফ, মাও. সাব্বির ওরফে আব্দুল হান্নান সাব্বির, মাও. শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ ও হাফেজ মাও. ইয়াহিয়া কারাগারে আছেন। মাও. আকবর হোসাইন ওরফে হেলালউদ্দিন জামিনে আছেন। এছাড়া আসামি আলহাজ্ব মাও. মো. তাজউদ্দিন, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাও. আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, মুফতি শফিকুর রহমান, ও মুফতি আব্দুল হাই পলাতক আছেন।
২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল ১ বৈশাখ ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলাকালে জঙ্গিদের বোমা হামলায় ১০ ব্যক্তি নিহত হন। আদালত মামলাটিতে ২০০৯ সালের ১৬ এপ্রিল ১৪ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *