স্টাফ রিপোর্টার, ফেনী :
ফেনী-কোরাইশমুন্সি সড়কে চলাচলকারী সিএনজিগুলো কোন কারণ ছাড়াই নিজেদের ইচ্ছামত ভাড়া বৃদ্ধি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। যাত্রীদের বাধ্য করে সিএনজি চালকরা এ ভাড়া প্রতিনিয়ত আদায় করছে। একমাত্র সিএনজি নির্ভর পরিবহন হওয়ায় যাত্রীরা অনেকটা অসহায় হয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিচ্ছে। বিষয়টি ইতিমধ্যে জেলায় ভোক্তা অধিকার কমিটির বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
ফেনী শহরের সাথে দাগনভূঞা উপজেলার পশ্চিম অঞ্চলের যোগাযোগের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক ফেনী-কোরাইশমুন্সি সড়ক। এই সড়কে ফেনীসহ পাশবর্তী জেলার লোকজন প্রতিনিয়ত নিজেদের নিত্য প্রয়োজনে বিপুল সংখ্যক যাত্রী চলাচল করছে। কোরাইশমুন্সি থেকে ফেনীর মহিপাল পর্যন্ত সিএনজি ভাড়া ইতিপূর্বে ২৫ টাকা হলেও সম্প্রতি কোনো অজুহাত ছাড়াই সিএনজি চালকরা ভাড়া নিচ্ছে ৩০ টাকা। এতে করে ওই সড়কে চলাচলকারী স্কুল-কলেজ পড়–য়া ছাত্র-ছাত্রীদের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণি পেশার যাত্রীদের গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় প্রসঙ্গে ওই অঞ্চলের সিএনজি সংগঠনের নেতাদের সাথে কথা বললে তারা জানান- সংগঠনের পক্ষ থেকে কোন ভাড়া বাড়ানো হয়নি। কিছু অসাধু সিএনজি চালক সাধারণ যাত্রীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। ২৫ টাকার পরিবর্তে ৩০ টাকা ভাড়া নেওয়া প্রসঙ্গে জুয়েল নামে এক সিএনজি ড্রাইভার জানায়, তাদের লাইন খরচ, সিএনজি সংগঠনের খরচসহ নানা আনুসাঙ্গিক খরচ বেড়ে গেছে তাই তারা ২৫ টাকার পরিবর্তে ৩০ টাকা ভাড়া নেয়। এছাড়া প্রতিদিন সন্ধ্যা হলেই ভাড়ার পরিমান কয়েক গুণ বেড়ে যায়। রাত হলেই ভাড়ার পরিবাম বেড়ে দাঁড়ায় ৪০-১৫০ টাকা পর্যন্ত। সন্ধ্যার পর থেকে চালকরা যে যার মত ভাড়া হাঁকিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। যাত্রীরাও অসহায় অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে ওই সড়কে চলাচল করতে বাধ্য হয়।
লতিফপুর গ্রামের বাসিন্দা ফেনী শহরের ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন লিটন জানান, রাতে দোকান বন্ধ করে বাড়ি যাওয়ার সময় সিএনজি ভাড়া বেড়ে ৫০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত হয়ে যায়। যাতায়াতের জন্য অন্য কোন পরিবহন ব্যবস্থা না থাকায় তারা বাড়তি টাকা দিয়ে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছে।
ফেনী সরকারি কলেজ পড়–য়া হাসিবুল হোসেন শান্ত নামে এক যাত্রী জানান, আগে বাড়ি থেকে কলেজ পর্যন্ত যেতে তার খরচ হত ৬০ টাকা এখন খরচ পড়ে ৭০ টাকারও বেশি। ফেনী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে দ্বিতীয় শিফটে পড়–য়া দীপক চন্দ্র নামে এক ছাত্র জানায়, প্রতিদিন সন্ধ্যায় ক্লাস শেষ করে সে যখন বাড়িতে যায় তখন ভাড়া ৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৫০ টাকা হয়ে যায়। এতে করে প্রতিদিন তাকে অতিরিক্ত টাকা বেশি দিতে হচ্ছে।
এভাবে চলতে থাকলে যে কোন সময় যাত্রী ও চালকদের মাঝে অপ্রীতিকর ঘটনার আশংকা রয়েছে। এই ব্যাপারে ওই সড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা প্রশাসনসহ উর্ধ্বতন মহলের যথাযথ ভূমিকা কামনা করেন।
রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন ভূঁঞা বলেন- যাত্রীদের হয়রানি বন্ধ করে নির্ধারিত ভাড়া আদায় করতে সিএনজি চালক, লাইনম্যানসহ সমিতির নেতৃবৃন্দকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও দাগনভূঞা থানা কর্মকর্তাকে জানানো হবে।