যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ক্ষতির মুখে প্লাস্টিক শিল্প

pic-10_83224যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে গত বছর বাংলাদেশি পণ্যের অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধার (জিএসপি) বাতিল হওয়ায় সরাসরি ক্ষতির মুখে পড়েছে দেশের প্লাস্টিক খাত। আবার সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতায় এ খাতে লোকসান হয়েছে চার হাজার কোটি টাকা। তা ছাড়া আমদানীকৃত প্লাস্টিকপণ্যে শুল্ক হার কম থাকায় চাপে আছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। এমন পরিস্থিতিতে সম্ভাবনাময় এ শিল্পের বিরাজমান সমস্যা কটিয়ে উঠতে বাজেটেই পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করেছেন প্লাস্টিক খাতের উদ্যোক্তারা। তাঁরা বাজেটে কর অবকাশ সুবিধা আরো ১০ বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন।

বাংলাদেশ প্লাস্টিকদ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশন (বিপিজিএমইএ) থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে, বর্তমানে দেশে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার প্লাস্টিকপণ্যের বাজার রয়েছে। চামচ থেকে শুরু করে খাটসহ প্রায় দুই হাজার ধরনের প্লাস্টিকসামগ্রী প্রস্তুত করছে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো।

প্লাস্টিকের বাজারে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে বেঙ্গল গ্রুপ, আরএফএল, হ্যামকোসহ আরো প্রায় ৮০০ ছোট-বড় প্রতিষ্ঠান। বিপিজিএমইএর হিসাবে গত বছরের রাজনৈতিক অস্থিরতায় প্লাস্টিক খাতের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে চার হাজার কোটি টাকার বেশি।

বিপিজিএমইএর সভাপতি এবং বেঙ্গল গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন কালের কণ্ঠকে জানান, যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি সুবিধা বাতিল করলে প্লাস্টিকপণ্য রপ্তানিতে আগের তুলনায় অধিক হারে রাজস্ব পরিশোধ করতে হচ্ছে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে। এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় ও আর্ন্তজাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে ব্যবসায়ীরা প্লাস্টিক খাতে নূ্যনতম ২০ শতাংশ নগদ সহায়তার সুপারিশ করেছে। তিনি বলেন, ‘স্থানীয় উৎপাদকরা বার বার আবেদন জানানোর পরও সরকার প্লাস্টিক পণ্যে আমদানি শুল্ক সর্বনিম্ন পর্যায়ে ২৫ শতাংশ ধার্য করে রেখেছে। আমদানি শুল্ক কম থাকায় ভারত, চীনসহ অন্যান্য দেশের প্লাস্টিক পণ্য অবাধে আমদানি হচ্ছে। এতে স্থানীয় উৎপাদকরা অসম প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হচ্ছে।’

প্যাকিংয়ের নামে ভারত থেকে আমদানীকৃত ফলমূলের সঙ্গে বিনা শুল্কে বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক ক্রেট বাংলাদেশে আসছে দাবি করে তিনি বলেন, এতে দেশীয় প্লাস্টিক ক্রেটশিল্প মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্লাস্টিকপণ্যে উৎসে কর কমানোর প্রস্তাব জানিয়ে বেঙ্গল প্যাসিফিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহেদুল ইসলাম হেলাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগী হতে শিল্পের বিভিন্ন খাতে রাজস্ব ছাড় দেওয়া হয়। অথচ প্লাস্টিক খাতের রপ্তানি পণ্যে উৎসে কর এখনো .০৮ শতাংশ রয়েছে। এ হার কমিয়ে .০৩ শতাংশ নির্ধারণ করা প্রয়োজন।’

কর অবকাশ সুবিধা আরো ১০ বছর বাড়ানোর সুপারিশ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ সুবিধা পেলে প্লাস্টিক খাতেদ্রুত বিনিয়োগ ও শিল্পায়ন হবে। কর্মসংস্থানও বৃদ্ধি পাবে।’

প্লাস্টিক খাতে দক্ষ শ্রমিকের অভাব রয়েছে। বিপিজিএমই ‘বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্লাস্টিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি’ গড়ে তুলেছে। কিন্তু পর্যাপ্ত তহবিলের অভাবে এ প্রতিষ্ঠান স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারছে না। এ ক্ষেত্রে তহবিল গঠনে আগামী বাজেটে থোক বরাদ্দের প্রস্তাব জানান প্লাস্টিক ব্যবসায়ীরা।

 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *