কক্সবাজারের টেকনাফে শাহপরীর দ্বীপে পর্যটকদের যাতায়াতের জন্য নির্মিত জেটিটি ব্যবহূত হচ্ছে শুধুই গবাদি পশু ওঠানো-নামানোর জন্য। চার বছর আগে চার কোটি টাকা ব্যয়ে জেটিটি নির্মাণ করা হয়।
জানা যায়, টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে চলাচলকারী পর্যটকবাহী অর্ধশতাধিক ট্রলার ও জাহাজ অল্প সময়ে যাতায়াতের জন্য জেলা পরিষদের অর্থায়নে এলজিইডি এই জেটি নির্মাণ করে। স্থানীয় প্রশাসনের উদাসীনতায় গত চার বছর এটি পর্যটকদের কোন কাজে আসেনি। টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাঠ ও বাঁশের তৈরি জেটি দিয়ে স্থানীয় লোকজনের পাশাপাশি দেশি-বিদেশি পর্যটকগণ পারাপার হচ্ছে। ওই জেটির বদলে দমদমিয়া নামক স্থান দিয়ে কেয়ারি সিন্দাবাদ, কেয়ারি ক্রু, এলসিটি কুতুবদিয়া, শহীদ জব্বার, ঈগল-১ ও ফারহানা ক্রু নামে ছয়টি পর্যটকবাহী জাহাজের পর্যটকরা কাঠ ও বাঁশের তৈরি জেটি দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে আসছে। আর শাহপরীর দ্বীপের জেটিটি দিয়ে মিয়ানমার থেকে আমদানি করা গরু, মহিষ ও ছাগল নামানো হচ্ছে।
২০০৭ সালে জাহাজে উঠতে গিয়ে টাঙ্গাইলের বাস মালিক সমিতির সভাপতি নূরুজ্জামান মিয়া (৫৫) ঝুঁকিপূর্ণ এই জেটি থেকে পড়ে মারা যান। ২০০৮ সালে জাহাজে উঠতে গিয়ে ঢাকার মীরপুরের হাবিব নবী (৪২), ফরহাদ আজিম (৩০), ফরিদপুরের সোলেমান কবির (৩৫) ও তাহসিন (৯) জেটি ভেঙ্গে নদীতে পড়ে আহত হন।
জেটির ইজারাদার নূরুল হক জানান, জেলা পরিষদ এলজিইডির মাধ্যমে প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে জেটি নির্মাণ করে। বর্তমানে এটি মিয়ানমার থেকে আমদানি করা কিছু গরু, মহিষ ও ছাগল (গবাদি পশু) নামানোর কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, এর ফলে সরকার প্রচুর পরিমাণে রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকায় স্থানীয় জেলেরা এটিতে জাল মেরামতের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
সাবরাং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হামিদুর রহমান বলেন, শাহপরীর দ্বীপ ও সেন্টমাটিন দ্বীপের জনগণের পাশাপাশি দেশি-বিদেশি পর্যটকগণের কথা চিন্তা করে নির্মিত এ জেটি বর্তমানে কোনো কাজে আসছে না। ফলে এ রুটে চলাচলকারী প্রায় দুই লাখের বেশি পর্যটকসহ স্থানীয় এলাকাবাসীকে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মোজাহিদ উদ্দিন জানান, টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে চলাচলকারী পর্যটকবাহী জাহাজগুলো যাতায়াতের জন্য শাহপরীর দ্বীপে জেটিটি নির্মাণ করা হলেও এটি ব্যবহার হচ্ছে না। নির্মিত জেটিটি ব্যবহার করা হলে সরকার প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পেত। তিনি আরো বলেন, শাহপরীর দ্বীপ থেকে টেকনাফ জিপ স্টেশন পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়নের কাজ কিছু দিনের মধ্যে শুরু করা হবে। সড়ক উন্নয়নের কাজ শেষ হলেই উক্ত জেটি ব্যবহারের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হবে।