অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এমকে রহমানের নিয়োগাদেশ বাতিল করে ঠিক কী কারণে অব্যাহতি দেয়া হলো তা নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, ক্ষমতাসীনদের হয়ে কাজ না করায় তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবীরাও এমন কথাই বলেছেন। সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির একজন সাবেক সম্পাদক বলেন, ‘অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল একটি সরকারি পদ। এ পদে থেকে দলবাজি চলে না। কিন্তু ক্ষমতাসীনদের হয়ে দলবাজি করেননি বলেই তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হলো।’
সুপ্রিমকোর্টের আওয়ামী ঘরানার একজন আইনজীবী এ ব্যাপারে বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের ঘটনায় বর্তমান সরকারের মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার জামাই তারেক সাঈদসহ অব্যহতি দেয়া র্যাব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দেয়া গ্রেপ্তারের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করার কথা ছিলো। ওই দায়িত্ব ছিল এমকে রহমানের ওপর। কিন্তু তিনি নৈতিকতা ও ন্যায় বিচারের কথা চিন্তা করে এ কাজটি করতে সময় ক্ষেপন করেছেন। গ্রেপ্তার ঠেকাতে পারেননি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় সরকারের উচ্চ মহল থেকে রহমানের বিরুদ্ধে আপত্তি তোলা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি সভায় অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেন, যা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমকে রহমানের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ ঘটনার জের ধরেই সম্ভবত তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।’
সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘এমকে রহমান একজন ভালো মানুষ, ভালো আইনজীবীও বটে। কী কারণে সরকার তাকে এ দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিলো তা জানা যাচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় ক্ষমতাসীনদের কথামতো না চলার কারণেই তাকে অব্যাহতি দিয়েছে। আমার জানামতে, ব্যক্তিগতভাবে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল একজন ভালো মানুষ। সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে কাজ করতেন তিনি।’
তবে এমকে রহমানের সঙ্গে এ ব্যাপারে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা কর হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
সোমবার আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটর উইং থেকে এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান জানান, রাষ্ট্রপতি অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম খলিলুর রহমানের (এমকে রহমান) নিয়োগাদেশ বাতিল করেছেন।
ওই মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব সৈয়দ আমিনুল ইসলামের স্বাক্ষরে বিজ্ঞপ্তিটি জারি হয়।
উল্লেখ্য, এমকে রহমান যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। তবে এখনও তিনি এই পদে থাকতে পারবেন কিনা সে বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে কিছু বলা হয়নি। বামে