মোদির শপথের পরই ব্যান্ডউইথ রফতানি চুক্তি চূড়ান্ত

bandwidth-export-557x336ভারতের নতুন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পরই সে দেশে ব্যান্ডইউথ রফতানির চুক্তি চূড়ান্ত হবে। আপাতত নরেন্দ্র মোদির ক্ষমতা গ্রহণ পর্যন্ত তাই অপেক্ষা করতেই হচ্ছে বাংলাদেশকে।

এরই মধ্যে ব্যান্ডউইথ রফতানি বিষয়ে বাংলাদেশের সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএলও ভারতের ভারত সঞ্চার নিগম লিমিটেডের (বিএসএনএলমধ্যে সমঝোতা চুক্তি হয়েছে। এখন এই প্রাথমিক চুক্তিকেই চূড়ান্ত রূপ দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী ভারতের উত্তরপূর্ব রাজ্যের ত্রিপুরা ও আসামে ৪০ গিগাবাইট পর্যন্ত ব্যান্ডউইথ রফতানি করবে বাংলাদেশ। রফতানি প্রক্রিয়া শুরু হবে ১০ গিগা ব্যান্ডউইথের মাধ্যমে।

বিএসসিসিএলর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনোয়ার হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেনআগামী সপ্তাহে বিএসসিসিএলর বোর্ড সভা রয়েছে। ওই সভাতেই ব্যান্ডউইথ রফতানির সব বিষয় চূড়ান্ত হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেনভারত যে মূল্য প্রস্তাব (ব্যান্ডউইথের দামকরেছে তা আমাদের প্রস্তাব করা দামের কাছাকাছি। খুব বেশি পার্থক্য নেই।

জানা গেছেতিন বছরের জন্য ব্যান্ডউইথ রফতানির চুক্তি হয়েছে। তবে সমঝোতা চূক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যান্ডউইথ রফতানির জন্য ৪৬ মাস সময় পাচ্ছে। চূড়ান্ত বা বাণিজ্যিক চুক্তি হলেই বাংলাদেশ রফতানি বাবদ প্রতি মাসে প্রায় ৫ কোটি টাকা আয় করবে।

মনোয়ার হোসেন আরও জানানভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের জন্য ৪০ গিগা ব্যান্ডউইথ রফতানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ১০ গিগা দিয়ে শুরু হবে। পর্যায়ক্রমে তা ৪০ গিগায় উন্নীত হবে। এ জন্য রুটও ঠিক করা হয়েছে বলে তিনি জানান। এ রুটটি (ফাইবার অপটিক ক্যাবল লাইনহবে দেশের একমাত্র সাবমেরিন ক্যাবলের ল্যান্ডিংস্টেশন কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম হয়ে কুমিল্লা পর্যন্ত। এরপর কুমিল্লাব্রাহ্মণবাড়িয়াআখাউড়াবর্ডার এলাকাআগরতলা হয়ে ত্রিপুরা পর্যন্ত। এ রুটে আট মাসের মধ্যে ব্যান্ডউইথ রফতানির পরিমাণ ১০ থেকে ৪০ গিগায় পৌঁছাবে বলে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়ব্যান্ডউইথ রফতানির আরও একটি রুট নির্দিষ্ট হয়েছে। ওই রুটটি কুমিল্লা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া হয়ে সিলেট দিয়ে তামাবিল সীমান্ত হয়ে মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলং পর্যন্ত যাবে। এরপরে শিলং থেকে বিএসএনএল তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় আসামের রাজধানী গুয়াহাটি পর্যন্ত ব্যান্ডউইথ নিয়ে যাবে।

এদিকে বাংলাদেশের আশাভারতে নতুন সরকার এলেও তাদের নীতিমালাসম্পাদিত চুক্তি এবং সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে কোনও পরিবর্তন আসবে না। সেই হিসেবে ব্যান্ডউইথ রফতানির চুক্তি এক অর্থে চূড়ান্ত বলেই মনে করে বাংলাদেশ। তারপরও মোদির ক্ষমতা গ্রহণ এবং অব্যবহিত পর পর্যন্ত বাংলাদেশ চেয়ে থাকবে ভারত পানে। মোদির শপথ গ্রহণের পরে বাংলাদেশ সম্পাদিত চুক্তির বিষয়ে যোগাযোগ শুরু করবে বলে একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে।

অন্যদিকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছেব্যান্ডউইথ রফতানির জন্য বাংলাদেশ এখনও প্রস্তুত নয়। এ জন্য আরও সময় প্রয়োজন। মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শেখ রিয়াজ আহমেদ বলেনব্যাকহল কানেক্টিভিটির কিছু সমস্যা রয়েছে। কানেক্টিভিটি তৈরি হয়ে গেলেই প্রস্তুতি চূড়ান্ত হবে।

জানা গেছেব্যাকহল কানেক্টিভিটি তৈরির দায়িত্ব রাষ্ট্রায়ত্ব টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কোম্পানি লিমিটেডকে (বিটিসিএলদেয়া হবে। বিটিসিএল শেষ করতে না পারলে এনটিটিএন (নেশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্কপ্রতিষ্ঠান দুটিকে দায়িত্ব দেয়া হতে পারে। প্রসঙ্গতদেশে ফাইবার অ্যাট হোম এবং সামিট কমিউনিকেশন নামে দুটি এনটিটিএন প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *