হার্টের যোগ্যতার পরিমাপক

11_7546ইটিটি (এক্সারসাইজ টলারেন্স টেস্ট) হার্টের যোগ্যতার পরিমাপক এবং একইসঙ্গে ব্যক্তির শারীরিক দক্ষতারও পরিমাপক। একটি চলন্ত প্লাটফর্মের ওপর দাঁড়িয়ে প্লাটফর্মের গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্যক্তিকে হাঁটতে হয়, এর সঙ্গে ব্যক্তির শরীরের বিভিন্ন অংশে ইলেক্ট্রোড সংযুক্ত করে কম্পিউটারের মাধ্যমে অবিরতভাবে ইসিজি রেকর্ড করা হয়ে থাকে, এর সঙ্গে কম্পিউটারে হাঁটার গতি, অক্সিজেন ব্যবহারের মাত্রা এবং শারীরিক বিপাকীয় কর্মকাণ্ডের মাত্রাও রেকর্ড করা হয়। আমরা জানি, শারীরিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে হার্টে কর্মকাণ্ডের একটি আনুপাতিক সম্পর্ক বিদ্যমান, মানে কারও কর্মতৎপরতা বৃদ্ধি পেলে হার্টকে অধিক পরিমাণে রক্ত সঞ্চালন করে ব্যক্তির শারীরিক অক্সিজেনের চাহিদা মেটাতে হয়, তা না হলে ব্যক্তি তার দৈহিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধিতে অপারগ হয়ে পরবে।

সুস্থ হার্ট বয়স অনুযায়ী ব্যক্তির সর্বোচ্চ কর্মকাণ্ডের প্রয়োজনে রক্ত সঞ্চালন করতে সঙ্গে রাখে। তবে যদি কোন কারণে হার্ট অসুস্থ হয়ে পড়ে তবে পরিশ্রমকালীন শারীরিক চাহিদা মোতাবেক রক্ত পাম্প করে রক্তনালিতে সঞ্চালন করতে ব্যর্থ হয়, সুতরাং ব্যক্তি তার সর্বোচ্চ কর্মদক্ষতা সম্পাদনে অসমর্থ্য হয়ে পরে। সাধারণভাবে যাকে শারীরিক দুর্বলতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বহুবিধ কারণে হার্ট তার কর্মসম্পাদনে ব্যর্থ হতে পারে যেমন- হৃৎপিণ্ডের রক্তনালিতে ব্লক বা রক্ত সরবরাহের ঘাটতি, হৃৎপিণ্ডের মাংসপেশি হার্টঅ্যটাকের ফলে নষ্ট হয়ে যাওয়া, ডায়াবেটিকস, কার্ডিওমাইওপ্যাথি, ভাল্বের সমস্যা ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। সাধারণভাবে খুব বেশি অসুস্থ ব্যক্তি, হাঁটতে অপরাগতা, অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ, হার্টঅ্যাটাকে পরবর্তী এক বা দুই সপ্তাহ সময়ে, অন্য সব জটিল অসুস্থতায় ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের ইটিটি করা যাবে না। জ্বর, সর্দি, কাশি, অ্যাজমা, ডায়েরিয়া, অত্যধিক বাতব্যথায় আক্রান্ত ব্যক্তিরাও এ অবস্থায় ইটিটি করতে পারবেন না। তবে এ সব অসুস্থতা থেকে আরোগ্য হওয়ার পর ইটিটি করা যাবে। ইটিটি করার সময় ধীরে ধীরে পর্যায়ক্রমিকভাবে হাঁটার গতি ও হাঁটার প্রতিরোধক বৃদ্ধি করা হতে থাকে। ইটিটি প্লাটফর্মে গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে হাঁটতে হবে।

সাধারণভাবে দু’তিনটি পূর্ব নির্ধারিত প্রটোকল দ্বারাই আমাদের দেশের প্রায় সব চিকিৎসকই ইটিটি করেন, তবে ইটিটিতে চিকিৎসকের প্রয়োজন মোতাবেক প্রটোকল সৃষ্টি করার সুবিধা বিদ্যমান থাকে। সে সব চিকিৎসকসৃষ্ট প্রটোকলে রোগীর আরও চিকিৎসাগত প্রয়োজন মেটানো সম্ভব।

ডা. এম শমশের আলী, সিনিয়র কনসালট্যান্ট, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *