1. ccadminrafi@gmail.com : Writer Admin : Writer Admin
  2. 123junayedahmed@gmail.com : জুনায়েদ আহমেদ, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর : জুনায়েদ আহমেদ, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর
  3. swadesh.tv24@gmail.com : Newsdesk ,স্বদেশ নিউজ২৪.কম : Newsdesk ,স্বদেশ নিউজ২৪.কম
  4. swadeshnews24@gmail.com : নিউজ ডেস্ক, স্বদেশ নিউজ২৪.কম, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর: : নিউজ ডেস্ক, স্বদেশ নিউজ২৪.কম, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর:
  5. hamim_ovi@gmail.com : Rj Rafi, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান : Rj Rafi, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান
  6. skhshadi@gmail.com : শেখ সাদি, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান: : শেখ সাদি, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান:
  7. srahmanbd@gmail.com : এডমিন, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান : এডমিন, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান
  8. sumaiyaislamtisha19@gmail.com : তিশা, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান : তিশা, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান
একরাম হত্যার নেপথ্যে দুই আওয়ামী লীগ নেতা - Swadeshnews24.com
শিরোনাম
যশোরে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে জমি দখলের অভিযোগ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে মিশা-ডিপজল প্যানেলের জয়লাভ গোবিন্দগঞ্জে অটোচালক দুলা হত্যার মূল আসামি আটক চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু পলাশবাড়ীতে উপজেলা নির্বাচনে অনলাইন মনোনয়নপত্র দাখিলের বিষয়ে সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিলেই বিএনপি বলে বিরোধীদল দমন’ এবার বুবলী-শাকিবের ‘কোয়ালিটি টাইম’ নিয়ে মুখ খুললেন অপু বাংলাদেশের সফলতা চোখে পড়ার মতো: সিপিডির রেহমান সোবহান চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে যা বললেন নিপুণ তালিকা দিতে না পারলে ফখরুলকে ক্ষমা চাইতে বললেন ওবায়দুল কাদের প্রকাশিত হলো দিদারের ‘বৈশাখ এলো রে এলো বৈশাখ’ আ.লীগের মতো ককটেল পার্টিতে বিশ্বাসী নয় বিএনপি: রিজভী হৃদয় খানের সঙ্গে জুটি ন্যান্সিকন্যা রোদেলার শাকিব ছাড়া দ্বিতীয় কোনো পুরুষকে ভাবতে পারি না: বুবলী শাকিবের এমন সময় আমাদেরও ছিল: ওমর সানী

একরাম হত্যার নেপথ্যে দুই আওয়ামী লীগ নেতা

  • Update Time : রবিবার, ২৫ মে, ২০১৪
  • ৫২৪ Time View

ekram7-300x181কাউকে বলা হয়েছিল ‘পলিটিক্যাল শোডাউন’ হবে। আর কেউ জানতেন, ফুলগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একরামুল হককে অপদস্থ করা হবে। এভাবেই আওয়ামী লীগ নেতা একরামকে হত্যার জন্য উঠতি বয়সী অর্ধশতাধিক তরুণ-কিশোরকে ঘটনাস্থলে জড়ো করা হয়েছিল। তবে এদের মধ্যে হত্যার পরিকল্পনার কথা জানতেন অল্প কয়েকজনই।

এঁদের জড়ো করা, অস্ত্র সরবরাহ ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সমন্বয় করেছিলেন ফুলগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জাহিদ চৌধুরী এবং ফেনী পৌরসভার কাউন্সিলর ও ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল্লাহ হেল বাকী ওরফে শিবলু। এই দুজন ঘটনার আগের রাতে (১৯ মে) মূল আক্রমণকারীদের নিয়ে ফেনী শহরের সালাম কমিউনিটি সেন্টারে বৈঠক করেছিলেন৷

একরাম হত্যায় সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া তরুণেরা জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য দিয়েছেন। র‌্যাব জানায়, শুক্রবার রাতে ও গতকাল শনিবার ভোরে রাজধানী ঢাকা থেকে সাতজন এবং ফেনী থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এঁদের মধ্যে সাতজনই একরামুল হত্যায় সরাসরি জড়িত ছিলেন বলে র‌্যাব জানিয়েছে। অপরজন এঁদের ঢাকায় আশ্রয় দিয়েছিলেন৷ গতকাল র৵াবের সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এঁদের হাজির করা হয়৷ এরপর গত রাতেই তাঁদের ফেনীর পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়৷ এ ছাড়া, একরাম হত্যায় জড়িত সন্দেহে গতকাল ফুলগাজী থেকে যুবলীগের কর্মী আলমগীর হোসেনকে (২৮) আটক করেছে পুলিশ।

এখনো আড়ালে মূল পরিকল্পনাকারী: র৵াব ও পুলিশের সূত্রগুলো বলছে, একরাম হত্যার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কারা মাঠপর্যায়ে তত্ত্বাবধান করেছেন এবং কারা আক্রমণে জড়িত ছিলেন, তা মোটামুটি স্পষ্ট হয়েছে তদন্তকারীদের কাছে। তবে নৃশংস এই হত্যাযজ্ঞের মূল পরিকল্পনায় কে বা কারা জড়িত, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

একরামকে হত্যার পরিকল্পনা ও অস্ত্র সরবরাহ, লাশ সবই করছে দলীয় খুনিরা। জাহিদ চৌধুরী নামে যে ব্যক্তি অস্ত্র সরবরাহ করেছে সে ফুলগাজী উপজেলা যুবলীগের সেক্রেটারি। কিলিং মিশনে অংশ নেয়া আবিদুল ইসলাম জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রীর ছেলে। তারা পরিকল্পনা থেকে শুরু করে লাশ দাফনে সক্রিয় ছিল। আর ঘটনার পর এই চক্র পরিকল্পিতভাবে অন্যের ওপর দোষ চাপাতে বিএনপি নেতার বাড়িতে আগুন দেয়। মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে। ভিডিও ফুটেজে পুরো ঘটনা ফাঁস হয়ে গেছে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় র‌্যাবের অভিযানে পরিকল্পনাকারী ও হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে।

র‌্যাব সব কিছু প্রকাশ করলেও দলীয় পরিচয় রহস্যজনক কারণে তুলে ধরেনি। এদিকে হত্যার ঘটনায় গতকাল বিকেলে ফেনী পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল্লাহ হিল মাহম্মদ ওরফে শিবলু ফেনী মডেল থানায় আত্মসমর্পণ করে।

তবে ঘটনার পর থেকে এ নিয়ে ফেনীজুড়ে ব্যাপক কানাঘুষা রয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে একরামের সমর্থকেরা সন্দেহের আঙুল তুলেছেন ফেনী-২ আসনের সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারীর প্রতি৷ নিহত একরামের সঙ্গে সাংসদ নিজামের দ্বন্দ্বের নানা কথাও আলোচিত হয়েছে। যদিও নিজাম হাজারী দাবি করে আসছেন, একরাম তাঁর ছোট ভাইয়ের মতো, তাঁদের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব ছিল না৷
অন্যদিকে, এই হত্যায় কারা তাৎক্ষণিকভাবে লাভবান, সেটি যেমন আলোচনায় আসছে, একই সঙ্গে ফেনীর আওয়ামী লীগের রাজনীতি, ঠিকাদারি-চাঁদাবাজি কার নিয়ন্ত্রণে থাকবে, তা নিয়েও হিসাব-নিকাশ চলছে। এরই মধ্যে এটা পরিষ্কার হয়ে গেছে যে একরাম নিজ দল আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের হাতেই খুন হয়েছেন৷ হত্যা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তত্ত্বাবধানকারী হিসেবে ইতিমধ্যে যে জাহিদ চৌধুরী ও কাউন্সিলর শিবলুর নাম প্রকাশ পেয়েছে, দুজনই সাংসদ নিজামের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত৷ শিবলু গত শুক্রবার নিজাম হাজারীর সঙ্গে একরামের মাস্টারপাড়ার বাসায় কুলখানিতে গিয়েছিলেন৷
আবার, জাহিদ চৌধুরী ফুলগাজীতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে একরামের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বিএনপির নেতা মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর পক্ষে কাজ করেছিলেন৷ উপজেলা নির্বাচনের দিন একরামকে গুলি করে হত্যার চেষ্টাও হয়েছিল৷ অন্যদিকে, এ ঘটনায় রাজনৈতিকভাবে নিজাম হাজারী চাপে পড়ায়, এ সুযোগ কাজে লাগাতে তৎপর হয়ে উঠেছেন ফেনীর রাজনীতি থেকে একপ্রকার বিতাড়িত একসময়ের সন্ত্রাসের গডফাদার জয়নাল হাজারীও৷ সব মিলিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে৷ এ কারণে একরাম হত্যার মূল পরিকল্পনাকারীদের শনাক্ত করতে সময় লাগছে বলে জানিয়েছেন তদন্তসংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা৷
র‌্যাব জানায়, যে পিস্তলটি দিয়ে ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যানকে গুলি করা হয় সেটি সংগ্রহ করে দেয় জাহিদ চৌধুরী। আর সেই পিস্তল দিয়ে চেয়ারম্যানকে লক্ষ্য করে সরাসরি গুলি করে আবিদ নামে আরেক ব্যক্তি। পূর্বপরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই হত্যাকা- ঘটানো হয় বলে র‌্যাব জানিয়েছে। গতকাল দুপুরে র‌্যাব সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে একরামুল হক হত্যাকা-ের অন্যতম পরিকল্পনাকারী আবিদুল ইসলাম আবিদসহ ৭ জনকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বি বস্নক এইচ-১৩৯ রোডের ৫নং বাড়ি থেকে গত রাতে গ্রেফতার করে র‌্যাব-১-এর একটি দল। গ্রেফতারকৃতরা হলো- আবিদুল ইসলাম ওরফে আবিদ (২৩), জাহিদুল ইসলাম ওরফে সৈকত (২২), চৌধুরী নাফিজ উদ্দিন ওরফে অনিক (২০), কাজী শানান মাহমুদ (২৩), সাজ্জাদুল ইসলাম পাটোয়ারী ওরফে সিফাত (২৪), শাহজালাল উদ্দিন ওরফে শিপন (২২) ও হেলাল উদ্দিন (২৩)। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী র‌্যাব-৭-এর একটি দল গতকাল ভোর রাতে ফেনীর রামপুর এলাকা থেকে মো. জাহিদ হোসেনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে হত্যাকা-ের পরিকল্পনাকারী আবিদও রয়েছে।

র‌্যাবের মিডিয়া উইংয়ের উপ-পরিচালক মেজর রুম্মান সকালে জানিয়েছিলেন, হত্যাকা-ের পর থেকেই তারা ঢাকায় এসে আত্মগোপন করে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া প্রাথমিক তথ্য নিয়েই সংবাদ সম্মেলন করে র‌্যাব। সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন র‌্যাব পরিচালক (লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং) এটিএম হাবিবুর রহমান।

তিনি জানান, ঘটনার পরিকল্পনা করা হয় ফেনীর সালাম জিমনেশিয়ামে। সেখানে সিফাত, সানি, আবিদসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। গত ১৯ মে রাতে এই পরিকল্পনা করা হয় আর ২০ মে সকালেই প্রায় ৩০-৪০ জনের একটি সন্ত্রাসী দল এ হত্যাকা-ে অংশ নেয়। হ্যতাকা-ে মোট পাঁচটি পিস্তল ব্যবহার করা হয়েছে। অন্যদিকে র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার মো. শাহজালাল উদ্দিন ওরফে শিপন সাংবাদিকদের বলেন, ওই দিন সকাল ১০টার দিকে ছাত্রলীগের একটি শোডাউনের কথা বলে তাদের ওই এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। তারা ৫০-৬০ জন সেখানে যায়।

এই পিস্তলগুলো সংগ্রহ করেন জাহিদ চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি। উপজেলা চেয়ারম্যানকে সেই পিস্তল দিয়ে সরাসরি গুলি করেন আবিদ। র‌্যাব পরিচালক জানান, এরা কয়েকটি গ্র“পে বিভক্ত হয়ে এ হত্যাকা-ে অংশ নেয়। প্রতিটি গ্র“পের সুনির্দিষ্ট কিছু কাজ ছিল। উপজেলার চেয়ারম্যান একরামকে হত্যার জন্য পরিকল্পনাকারীরা ওই দিন সকাল ৮টা থেকে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় অবস্থান নেয়।

সকালে উপজেলা চেয়ারম্যান গাড়িযোগে নিজের বাসা থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হত্যাকারীরা শহরের বিভিন্ন জায়গায় নিজেদের অবস্থান নেয়া গ্র“পগুলোর মধ্যে যোগযোগ শুরু করে দেয় বলে জানায় র‌্যাব। একরামের গাড়িটি সিনেমা হলের সামনে আসলেই একটু ভিন্ন কায়দায় নসিমন, করিমন ও টেম্পো দিয়ে পথরোধ করা হয়। এ সময় গাড়িটি রাস্তার ডিভাইডারে উঠে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। পরে তারা সেখানে ব্যাপকভাবে ককটেল ফাটিয়ে আতঙ্ক তৈরি করে। এতে লোকজন ভয়ে ও আতঙ্কে সেখান থেকে দূরে সরে যায়।

এ সময় একরামের গাড়িতে চালকসহ মোট চারজন ছিলেন। তাদের মধ্যে কেউ একজন একরামের নিজের লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে প্রতিরোধ করারও চেষ্টা করেন। কিন্তু ব্যর্থ হন। পরে তারা সেখান থেকে সরে যান। যেহেতু হত্যাকারীদের টার্গেট ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান, তাই তিনি আর বের হতে পারেননি। গুলি করার পর সেই গাড়িটিতে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় হত্যাকারীরা। তখনো ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক তৈরি করা হয়, যাতে সাধারণ মানুষ কাছে আসতে না পারে। গুলি করার সময় এ ঘটনার পরিকল্পনারকারীদের কয়েকজন ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে সতর্ক অবস্থানে ছিলেন জানিয়ে র‌্যাব পরিচালক হাবিবুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেফতারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হয়।

পরিকল্পনা ও লেনদেন : একরামুলকে হত্যার বিনিময়ে দুই কোটি টাকা মূল্য পরিশোধ করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের দাবি, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা একরামমুলকে হত্যার উদ্দেশ্যে হত্যাকা-টি ঘটানোর প্রায় এক সপ্তাহ আগে এর পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছিলেন। একরামুল হক হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত থাকায় গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে চারজন স্বীকার করেছেন, স্থানীয় আওয়ামী নেতারা ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান একরামুল হককে হত্যার জন্য দুই কোটি টাকা দিয়েছেন।

পুলিশ কর্মকর্তা জানান, একরাম হত্যার ঘটনায় গ্রেফতারকৃত আনোয়ার, আলাউদ্দিন, ইকবাল ও সাখাওয়াত প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন যে, হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটানোর এক সপ্তাহ আগে ফেনী শহরের গোপন বৈঠকে পুরো পরিকল্পনাটি করা হয়েছিল। গ্রেফতারকৃতরা আরও দাবি করেছেন, ওই বৈঠকে ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আদিল, স্থানীয় নেতা জাহিদুল ইসলাম, ওয়ার্ড কাউন্সিলর শিপলুসহ আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

গ্রেফতারকৃতরা জানান, একরামুলকে হত্যা করার জন্য দুই কোটি টাকা খরচ করে একে-৪৭ রাইফেল এবং অন্য অস্ত্র ব্যবহার করেথ এমন সশস্ত্র অপরাধীদের ভাড়া করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল ওই বৈঠকে। হত্যাকা-ের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সশস্ত্র অপরাধী হিসেবে বিবিঞ্চি ও আশপাশের অন্য এলাকা সন্ত্রাসী ছাড়াও সোনাগাজীর জলদস্যুদের ভাড়া করা হয় এবং হত্যাকা-ের আগেই অগ্রিম হিসেবে তাদের এক কোটি টাকাও দেয়া হয়।

এদিকে, ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান একরামুল হককে হত্যার দৃশ্য সংবলিত একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে মর্মান্তিক এই হত্যাকা- ঘটানোর সময় ঘটনাস্থলেই উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ দলীয় নেতা নিজাম উদ্দিন হাজারী। শতাধিক স্থানীয় ব্যক্তির সামনেই প্রকাশ্য দিবালোকে ঘটানো হত্যাকা-ের এই দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করেছিলেন প্রত্যক্ষদর্শীরাই। ভিডিও ফুটেজটি বিশ্লেষণ করে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ব্যক্তিদের মধ্যে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম এবং অভিযুক্ত অপরাধী আবিদ, হুমায়ূন ও সোহেল ওরফে রুটি সোহেলসহ অন্তত মোট চারজনের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এই বিশ্লেষণের ওপর ভিত্তি করে জেলা পুলিশ গতকাল শর্শদি এবং মধুয়াই এলাকায় অভিযান চালিয়ে একরাম হত্যাকা-ে জড়িত হিসেবে আনোয়ার ও আলাউদ্দিন নামের দুই সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারের এই সংবাদ নিশ্চিত করে জেলা পুলিশ সুপার পরিতোষ ঘোষ জানান, গ্রেফতারকৃত দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করা হবে। আগেই গ্রেফতার হওয়া ইকবাল ও সাখাওয়াতসহ এই হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত হিসেবে এখনও পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এদের কেউই রাজনীতিতে জড়িত নন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভিডিও ফুটেজ দেখে যাদের চিহ্নিত করা সম্ভব তাদের মধ্যে জাহিদুল ইসলামকে দেখা গেছে হামলার নেতৃত্ব দিতে। জানা গেছে, নিজাম হাজারীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী জাহিদের সঙ্গে একরামুলের শত্রুত ছিল। কারণ নিহত নেতা একরামুল এর আগে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন চলাকালীন ফুলগাজী আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে জাহিদকে বহিষ্কার করেছিলেন। ২০০০ সালে যুবলীগ নেতা বশির হত্যার অভিযুক্ত আসামি এই জাহিদ ফুলগাজী আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সে সময় বহিষ্কৃত হলেও পরে স্থানীয় সংসদ সদস্য নিজাম হাজারীর সহায়তায় ওই পদটি আবার ফিরেও পেয়েছিলেন।

উল্লেখ্য, গত ২০ মে সন্ত্রাসের জনপদ ফেনীতে দিনে দুপুরে আওয়ামী লীগ নেতা ও ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যানকে গুলি করে ও গাড়িতে পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এই ঘটনায় আরও ৪ জন আহত হয়।

নিহত একরামুল হক একরাম ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। ঘটনার প্রতিবাদে তার সমর্থকরা রাস্তা অবরোধ, ভাঙচুর ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিজিবিসহ বাড়তি ফোর্স মোতায়েন করা হয়। এরপর থেকে এলাকায় আতঙ্ক ও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। সুত্র : বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকা

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2020 SwadeshNews24
Site Customized By NewsTech.Com