ফেনী মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লায়লা জেসমিন মনি ওরফে বড়মনি আবারও আলোচনায়। ছেলে আবিদ র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার ও এর আগে উপজেলা আওয়মী লীগ সভাপতি একরাম হত্যাকাণ্ড নিয়ে এই আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। এর আগেও ছেলের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন বড়মনি।
জানা যায়, বড়মনির বাবা আনসার বাহিনীতে চাকরির সুবাদে ফেনীর বাসিন্দা ছিলেন। তাদের আদি নিবাস সন্দ্বীপে। দীর্ঘদিন ফেনীতে চাকরির সুবাদে স্টেডিয়াম এলাকায় নিজের বাড়ি হয় মনির বাবার। তবে তার চেয়েও বড় কথা মেয়েকে তিনি বিয়ে দেন ফেনীর ‘দুর্র্ধর্ষ’ হিসাবে খ্যাত হাজারি পরিবারে।
বড়মনি নিজাম হাজারীর মামী। নিজামের মামা বাবর তার স্বামী। নিজাম হাজারীর হাত ধরেই ধীরে ধীরে রাজনীতিতে আসা তার। ২০০২ সালের দিকে অসুস্থ হয়ে পড়েন বাবর। এরপর রাজনীতিতে আরো বেশি যুক্ত হয়ে পড়েন বড়মনি। দীর্ঘ দশ বছর অসুস্থ থেকে বছর খানেক আগে মারা যান বাবর।
২০১২ সালে ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মনোনীত করা হয় তাকে। এক্ষেত্রেও বড় ভূমিকা রাখেন নিজাম উদ্দিন হাজারী। দলে পদ লাভের আগে থেকেই অর্থ আর ক্ষমতার লোভ পেয়ে বসে বড়মনিকে। এই পথে এগিয়ে যাওয়ার সিঁড়ি হিসেবে নিজের ছেলেদেরই ব্যবহার করতে শুরু করেন তিনি। তাদের ছেড়ে দেন সন্ত্রাস আর মাদক ব্যবসার অন্ধকার জগতে। এক পর্যায়ে ফেনীতে ইয়াবা ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ চলে আসে মনির ছেলে আবিদের হাতে। আর মায়ের টেন্ডার-বাণিজ্যের জন্যে অস্ত্র-হাতে প্রশাসনকে তার হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়ে ওঠে নৈমিত্তিক ঘটনা। ধীরে ধীরে আবিদের কুখ্যাতিও ছড়াতে থাকে। বর্তমানে ফেনীতে নিজাম হাজারীর মামী ও আবিদের মা পরিচয়ে প্রশাসন থেকে শুরু করে রাজনীতিকদের ঘায়েল করছেন তিনি।
এলাকাবাসী জানায়, বড়মনির ছেলে আবিদ বখাটে-সন্ত্রাসী হিসেবেই পরিচিত। মেয়েদের উত্ত্যক্ত করায় বেশ কয়েকবার তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও করা হয়েছে। আবিদ প্রকাশ্য দিবালোকে স্কুল-কলেজ যাওয়া-আসার পথে মেয়েদের ওড়না টেনে নিয়েছেÑ এমন কথা জনমুখে বেশ শোনা যায়। এসব অভিযোগ বড়মনির কাছে গেলেও, তিনি থাকতেন নিশ্চুপ। বরং আবিদের মাদক ব্যবসার অর্থে বড়মনির পরিবার হয়ে ওঠে বিত্তশালী। মূলত সেই মায়ের প্রধান অস্ত্র হিসেবে কাজ করতো ফেনীতে।