ছয়দিনের চীন সফরে প্রধানমন্ত্রী

shekh hasina-swadeshnews24

চীনের উদ্দেশে সকালে ঢাকা ত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশটির প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের আমন্ত্রণে ছয় দিনের এ রাষ্ট্রীয় সফরে চীনের পার্লামেন্টভবন গ্রেট হল অফ পিপলসে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক বৈঠক হবে।

শুক্রবার সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চীনের ইউনান প্রদেশের রাজধানী কুনমিংয়েরউদ্দেশ্যে যাত্রা করেন প্রধানমন্ত্রী।

বিমানটি চীনের স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১১টায় কুনমিংচাংশুই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত জানুয়ারি মাসে সরকার গঠন করার পর চীনে এটি তার প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর এবং দ্বিতীয় বিদেশ সফর।

এ সফরে আগামী ৯ জুন চীনের গ্রেট হলে বাংলাদেশ ও চীনের দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যেআনুষ্ঠানিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনেরপ্রধানমন্ত্রী লী কেজিয়াং-এর সঙ্গে এক যৌথ ইশতেহারে স্বাক্ষর করবেন।

গ্রেটহলে তার সম্মানে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। চীনাপ্রধানমন্ত্রী লী তার সম্মানে এক ভোজসভার আয়োজন করবেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী তার সফরের প্রথম পর্যায়ে কুনমিং যাবেন এবং সেখান থেকে রোববার চীনের রাজধানী বেইজিং যাবেন।

চীনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আজিজুল হক এবং সে দেশের সরকারি প্রতিনিধিরা বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানাবেন।

প্রধানমন্ত্রী বিমানবন্দর থেকে সোজা গ্রীন লেক হোটেলে যাবেন। কুনমিং অবস্থানকালে তিনি এই হোটেলেই থাকবেন।

প্রধানমন্ত্রী ৮ জুন বীর জনতার স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তিনিবেইজিংয়ে চাওইয়াং থিয়েটার ও এ্যাক্রোবেটিক ওয়ার্ল্ড পরিদর্শন করবেন।

প্রধানমন্ত্রী ৯ জুন চীন ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিসে (সিআইআইএস)এক সেমিনারে ভাষণ দেবেন।

১০ জুন তিনি বেইজিংয়ে বাংলাদেশ-চীন ট্রেড এন্ডইকোনোমিক কো-অপারেশন ফোরামেও বক্তৃতা করবেন।

তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট জিজিনপিং-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং গ্রেট হল অব পিপলসে চীনের পিপলসপলিটিক্যাল কনসালটেটিভ কনফারেন্সের চেয়ারম্যান জু ঝেংশেং-এর সঙ্গে বৈঠককরবেন।

শেখ হাসিনা কুনমিংয়ে দ্বিতীয় চীন সাউথ এশিয়া এক্সপোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেযোগ দেবেন এবং ৬ জুন জুনান প্রদেশের গভর্নর লী জিহেংয়ের দেয়া এক ভোজসভায়যোগ দেবেন।

প্রধানমন্ত্রী ৭ জুন নবম চীন-সাউথ এশিয়া ব্যবসায়ী ফোরামে প্রধান বক্তাহিসেবে যোগ দেবেন। এরপর তিনি স্টোন ফরেস্ট পরিদর্শন করবেন। সন্ধ্যায় জুনানপ্রদেশের গভর্নর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর হোটেল স্যুটে সৌজন্য সাক্ষাৎকরবেন।

প্রধানমন্ত্রী চীন সফরকালে সিসিটিভি, ফিনিক্স টিভি, ইউনান টিভি এবং চীনা রেডিওইন্টারন্যাশনালের বাংলা বিভাগকে সাক্ষাৎকার দেবেন।

চীন সফর শেষে ১১ জুন হংকং হয়ে দেশে ফিরে আসবেন প্রধানমন্ত্রী।

চীন সফরকালেপ্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে আলোচনায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাবে সোনাদিয়া দ্বীপসমুদ্রবন্দর নির্মাণে চীনের সহযোগিতা কামনা।

পাশাপাশি বাংলাদেশেরপটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রপ্রকল্প বাস্তবায়ন, ন্যাশনাল আইসিটি ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক ফর বাংলাদেশ সরকারফেস-৩, রাজশাহী ওয়াসা ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, কর্ণফুলী নদীতেকনস্ট্রাকশন অব মাল্টি-লেন ভিত্তিক টানেল, চট্টগ্রামের কালুরঘাটে কর্ণফুলীনদীর ওপর দ্বিতীয় রেল ও সড়ক সেতু নির্মাণ এবং চট্টগ্রাম-রামু-কক্সবাজার ওরামু-গুনধুম রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নে চীনের সহায়তা চাওয়া হবে।

সরকারি কর্মকর্তারা জানান, প্রধানমন্ত্রীর এই সফরের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে-দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশের স্বার্থরক্ষারবিভিন্ন ইস্যুতে চীনের নতুন নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ৭০ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল চীন যাচ্ছেন।চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৪০ বছর পূর্ণ হবে আগামীবছর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *