ফরিদপুরের চাঞ্চল্যকর চাঁপারানী হত্যা মামলার প্রধান আসামি দেবাশীষ সাহা ওরফে রনিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁকে ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। তবে দেবাশীষ পলাতক।
আজ সোমবার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আনোয়ারুল হক এ রায় ঘোষণা করেন।
এ মামলার অপর দুই আসামি সঞ্জয় বিশ্বাস ও মো. আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দিয়েছেন আদালত।
মামলার রায়ে বিচারক মো. আনোয়ারুল হক বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটি প্রমাণ করতে সমর্থ হয়েছে। আসামি দেবাশীষ সাহা পলাতক। তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আনিত অভিযোগ সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাঁকে দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত ক্রমে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হলো। এছাড়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হল।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে চাঁপারানীর স্বামী স্বপন বিশ্বাস বলেন, ‘এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। তবে পলাতক আসামিকে যত দ্রুত সম্ভব গ্রেপ্তার করে রায় কার্যকর করার উদ্যোগ নিতে হবে।’
মামালার বাদী চাঁপারানীর ভাই অরুণ কুমার ভৌমিক বলেন,‘আমরা ন্যায় বিচার পেয়েছি। এ রায়ে সারা দেশে উত্ত্যক্তকারী ইভটিজাররা সতর্ক হবে এবং তাদের দৌরাত্ম্য কমে আসবে।’
নিহত চাঁপারানী ফরিদপুর চিনিকলে টাইপিস্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাঁর দুই যমজ মেয়ে হিরা বিশ্বাস ও মুক্তা বিশ্বাস চিনিকল উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলো। হিরাকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করতো একই এলাকার দেবাশীষ। চাঁপারানী এ ব্যাপারে স্থানীয় সামাজিক দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গের কাছে বিচার চাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয় দেবাশীষ। এক পর্যায়ে ২০১০ সালের ২৬ অক্টোবর বিকেলে চাঁপারানীকে মোটরসাইকেল চাপা দিয়ে হত্যা করে দেবাশীষ সাহা ওরফে রনি। পরদিন চাঁপারানীর ভাই অরুণ কুমার ভৌমিক বাদী হয়ে মধুখালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ মামলায় ২৬জন সাক্ষীর মধ্যে ২৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলী খন্দকার দেবাশীষসহ তিনজনকে আসামি করে ২০১০ সালের ২৭ ডিসেম্বর অভিযোগপত্র জমা দেন।
দেবাশীষ হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে ২০১২ সালের ২৭ আগস্ট থেকে পলাতক রয়েছেন। হাইকোর্ট সর্বশেষ ২০১৩ সালের ৯ অক্টোবর দেবাশীষের জামিনের মেয়াদ আরও এক বছরের জন্য বর্ধিত করেন।