ব্লগার রাজীব হত্যা মামলার সেই আসামির জামিন স্থগিত

High_Court_1_395123633যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে গড়ে ওঠা গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী ও ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যা মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়া চার্জশিটভুক্ত আসামি সাদমান ইয়াসির মাহমুদের জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি। ২ সপ্তাহের মধ্যে তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করারও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের ভিত্তিতে বুধবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এ আদেশ দেন।

এছাড়াও ১৬ জুন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। সাদমানের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। তাকে সহায়তা করেন আইনজীবী বিএম ইলিয়াস কচি। 

গত ১ জুন হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়ে মুক্তি পান সাদমান। বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমেদের হাইকোর্ট বেঞ্চ ছয় মাসের জন্য তার জামিন মঞ্জুর করেন। 

জামিন পেয়ে কারাগার থেকে সাদমানের বের হয়ে যাওয়ার খবর অপ্রকাশিত রয়ে যায়। এ বিষয়ে মঙ্গলবার সংবাদ প্রকাশিত হয়। 

এরপর বুধবার হাইকোর্টের জামিনের আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন রাষ্ট্রপক্ষ।

গত বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যার পর রাজধানীর মিরপুরের পলাশনগর এলাকায় নিজ বাসার সামনে খুন হয়েছিলেন রাজীব হায়দার। দুর্বৃত্তরা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে। ওই দিন শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ থেকে বাসায় ফেরার পথে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল।

এ মামলায় গত ২৮ জানুয়ারি ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেওয়া হয়। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন সাদমান।  

গত বছরের ১৪ আগস্ট রাতে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ছাত্র সাদমান ইয়াসির মাহমুদকে রাজধানীর ধানমণ্ডি এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। ১৫ আগস্ট থেকে তাকে আদালতের মাধ্যমে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ছয় দিনের রিমান্ডে নেয় গোয়েন্দা পুলিশ। পরে তিনি দোষ স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। 

মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার তৌহিদুল ইসলাম সে সময় জানিয়েছিলেন, রাজীব হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেন সাদমান। ঘটনার পর থেকে তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। সাদমান জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান জসিম উদ্দিন রহমানীর সহযোগী। 

এর আগে গত বছরের ১২ আগস্ট মামলার সন্দেহভাজন আসামি আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান মুফতি জসিম উদ্দিন রহমানীকে ৩১ জন সহযোগীসহ গ্রেফতার করে বরগুনা পুলিশ। 

এছাড়াও গত বছরের ১ মার্চ নর্থ-সাউথ ইউনিভার্সিটির আরো পাঁচ ছাত্রকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা হলেন ফয়সাল বিন নাইম, মাকসুদুল হাসান অনিক, এহসানুর রেজা রোমান, নাঈম সিকদার ও নাফিস ইমতিয়াজ। তারাও সবাই রাজীব হত্যার ঘটনায় দোষ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

চার্জশিটভূক্ত অন্য আসামি হলেন নর্থ সাউথের সাবেক ছাত্র রেজওয়ানুল আজাদ রানা। পলাতক রানার বিরুদ্ধে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। 

এদিকে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও মামলার তদারকি কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম মঙ্গলবার  বলেন, সাদমানের জামিনে মুক্তি সম্পর্কে আমরা অবগত আছি। কিন্তু তার বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা না থাকায় আমরা তাকে গ্রেফতার করতে পারছি না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *