আর দুদিন পরই পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে—এমন কথা বিশ্বাস করার মতো মানুষও হয়তো পাওয়া যাবে, কিন্তু পেলে-ম্যারাডোনার বন্ধুত্ব হয়ে গেছে, এমন কথা হয়তো কেউই বিশ্বাস করবেন না। সর্বকালের সেরা দুই ফুটবলারের সম্পর্ক বরাবরই বৈরী। প্রায়ই একে অন্যের দিকে ছুড়ে দেন তীক্ষ সব বাক্যবাণ। পেলে-ম্যারাডোনার শ্রেষ্ঠত্বের বিচার করতে গিয়ে ঝগড়াঝাঁটিও কম করেন না ফুটবলপ্রেমীরা। তবে কিছুটা ভিন্নভাবে হলেও পেলে-ম্যারাডোনার দোস্তি দেখা গেল ব্রাজিলে।
রিও ডে জেনিরোর বিখ্যাত মারাকানা স্টেডিয়ামের বাইরে গোল হয়ে দাঁড়িয়ে সেই পুরোনো বিতর্কই চালিয়ে যাচ্ছিলেন বিশ্বকাপ দেখতে আসা পর্যটকেরা। কে সেরা—পেলে নাকি ম্যারাডোনা? বিতর্কটা সব সময়ই হয় দুই কিংবদন্তির অনুপস্থিতিতে। কিন্তু এখানে শ্রেষ্ঠত্ব বিচারের সুযোগটা পেলে-ম্যারাডোনাই করে দিচ্ছিলেন।
বিশ্বকাপ উপলক্ষে মানুষকে বিনোদন দেওয়ার অদ্ভুত পন্থাই বেছে নিয়েছেন এক আর্জেন্টাইন ও এক ব্রাজিলিয়ান ফুটবলপাগল। পেলে-ম্যারাডোনার মতো করে সেজে রিওর রাস্তায় রাস্তায় খেলা দেখাচ্ছেন এই দুজন। এরাই নকল পেলে, নকল ম্যারাডোনা। সত্যিকারের পেলে-ম্যারাডোনায় তো আর দোস্তি হবে না। নকলই সই!
আর্জেন্টাইন কিংবদন্তির ভূমিকা নিয়েছেন ড্যানিয়েল গঞ্জালেস। গায়ে সেই ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপজয়ী দলের ১০ নম্বর জার্সি। মাথায় সেই কোঁকড়ানো কালো চুল। গাট্টাগোট্টা চেহারার গঞ্জালেসকে দেখতে অনেকটা ম্যারাডোনার মতোই লাগছিল। পাশেই বল নিয়ে কারিকুরি দেখাচ্ছিলেন সেই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। পেলের ভূমিকা নেওয়া মার্সিও পাহেইরা ডি সিলভা। তাঁর গায়েও পেলের ১০ নম্বর জার্সি।
কিছুক্ষণ খেলা দেখানোর পরই পাওয়া গেল তাঁদের বন্ধুত্বের পরিচয়। ‘ম্যারাডোনা’কে দুহাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে ‘পেলে’ বললেন, ‘পেলে-ম্যারাডোনা বন্ধু হয়ে গেছে। লড়াই শেষ হয়েছে। এখন উত্সবের সময়।’
৩৫ বছর বয়সী গঞ্জালেস আর্জেন্টিনা থেকে এসেছেন বিশ্বকাপ দেখতে। ম্যারাডোনা সাজে খেলা দেখিয়ে উপার্জনটাও মন্দ হচ্ছে না। অন্যদিকে ৫০ বছর বয়সী ডি সিলভা ব্রাজিলের রাস্তায় সারা বছরই দেখান ফুটবলের কারিকুরি। পেশাদার ফুটবলার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্ন পূরণ না হওয়ার পর এভাবেই নিজের জীবিকা নির্বাহ করেন এই পেলেরূপী মানুষটি