বিভিন্ন বয়সের মানুষের মাথায় নিজেদের আয়ু নিয়ে প্রশ্ন আসতে পারে, বিশেষ করে মধ্যবয়সী মানুষেরা এ নিয়ে প্রায়ই চিন্তিত থাকেন। ভাগ্যে কি আছে তা তো বলা যায় না। কিন্তু নিজের শরীরের অবস্থা থেকে আন্দাজ করে নেওয়া যায় যে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটলে মোটামুটি কতদিন আয়ু আছে। কয়েকটি ছোট্ট পরীক্ষার মাধ্যমে চটজলদি বের করে ফেলতে পারেন আপনি মোটামুটি আর কতদিন বাঁচবেন!
১) ভারসাম্য পরীক্ষা
প্রথমে একটি পায়ে ভর দিয়ে কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন তা পরখ করুন। এরপর এক মিনিটে কয়বার চেয়ারে উঠবস করতে পারেন তা দেখুন। ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা যায় নিতান্তই সাধারণ এই কাজগুলো হতে পারে অকালমৃত্যুর নির্দেশক। যেসব পুরুষ ১০ সেকেন্ডের বেশ এক পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়াতে পারেন এবং চেয়ার থেকে এক মিনিটে ৩৭ বারের বেশি উঠে পড়তে পারেন, তাদের ক্ষেত্রে অকাল মৃত্যুর সম্ভাবনা কম থাকে। নারীদের ক্ষেত্রেও মোটামুটি একই রকমের ফলাফল দেখা যায়। যারা এই দুটি কাজ সহজেই করতে সক্ষম হন, পরবর্তী ১৩ বছরের মধ্যে তাদের মৃত্যুর আশঙ্কা অন্যদের চাইতে অনেক কম থাকে।
২) ওঠা-বসা পরীক্ষা
এই পরীক্ষাটি একটু কঠিন। আপনার শারীরিক শক্তির পরীক্ষা হবে এতে। হাত ব্যবহার না করে যতবার সম্ভব মেঝেতে বসুন এবং হাঁটুতে ভর না দিয়ে বা হাত ব্যবহার না করেই আবার উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করুন। গবেষণায় দেখা যায়, ৫০ থেকে ৮০ বছরের মানুষের মাঝে যারা হাত ব্যবহার না করে বা এক হাত ব্যবহার করে মেঝেতে বসতে এবং উঠতে সক্ষম হন, পরবর্তী ৩০ বছরের মাঝে তাদের মৃত্যুর আশঙ্কা অন্যদের তুলনায় কম থাকে। আর যারা হাঁটু বা দুই হাতে ভর দিয়ে ওঠেন, তাদের মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে ৫-৬ গুণ বেশি।
৩) মুষ্ঠি-শক্তি পরীক্ষা
হ্যান্ডশেক থেকে অনেকের শক্তির পরিমাণ বোঝা যায়। শক্ত করে কোনো কিছু ধরার ক্ষমতা থেকে আয়ু বোঝাও সম্ভব। অনেক গবেষণায় শক্ত মুষ্ঠি এবং দীর্ঘায়ুর মাঝে সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়। দুর্বল মুষ্ঠি হতে পারে জীবনের পরবর্তী পর্যায়ে বিভিন্ন রকমের পঙ্গুত্বের লক্ষণ। এটা মানসিক বৈকল্যেরও পূর্বাভাস হতে পারে। মুষ্ঠি শক্তি পরিমাপের কাজটি অবশ্য আপনি নিজে করতে পারবেন না। এর জন্য প্রয়োজন হয় ডায়নামোমিটার নামের একটি যন্ত্র। তবে যন্ত্র ছাড়াও নিজের মুষ্ঠির শক্তি কম না বেশি এ ব্যাপারে সবারই কমবেশি ধারণা থাকে।
৪) হাঁটার গতি পরীক্ষা
হাঁটার অভ্যাস থাকলে যে মানুষের স্বাস্থ্য তুলনামূলকভাবে ভালো থাকে এটা জানা কথা। বয়সী মানুষদের মাঝে যারা অন্যদের চাইতে দ্রুত হাঁটতে পারেন তারা ধীর-গতিতে হাঁটা মানুষের চাইতে বেশিদিন বেঁচে থাকেন। তবে তার মানে এই নয় যে হাঁটার গতি বৃদ্ধি করলে আয়ু বাড়বে। বরং আপনার স্বাভাবিক হাঁটার গতি থেকেই আপনার আয়ু বোঝা যাবে।