রমজান মাসের বাকি আর মাত্র ১১ দিন। রোজার আগে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যস্ত সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। নেয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। রাজধানীর বাজারে ইতোমধ্যে বাড়তে শুরু করেছে ভোজ্যতেল, ডাল, চিনি, ছোলাসহ নিত্যপণ্যের দাম। সরকার পর্যাপ্ত মজুদ থাকার তথ্য দিলেও বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ কম থাকায় বাড়ছে এসব পণ্যের দাম।
রোববার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মালিবাগ রেলগেট বাজার, কাপ্তানবাজার ও ফকিরাপুল এলাকার কাঁচাবাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। প্রতিবছর রমজানের আগে নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের চাহিদা বাড়ে। ক্রেতাদের অভিযোগ, এ চাহিদাকে পুঁজি করে এসব পণ্যের বাজারও হয়ে ওঠে অস্থির। এবারও রমজানকে সামনে রেখে বেশ কিছু নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে।
রোজা মানেই যেন ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধি। এবারও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ১০ টাকা বেড়ে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম এখন ১০০ থেকে ১১০ টাকা। আর ছোলা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬৫ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫৮ টাকা। এছাড়া বাজারে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম আগের সপ্তাহের চেয়ে বেড়েছে। বর্তমান বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৩৫ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৩০ টাকা, আদা ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা, রসুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, খেসারি ডাল ৪২, দেশি মসুর ডাল ১১০ থেকে ১২০, ভারতীয় মসুর ডাল ৭৬ থেকে ৮০ টাকা, মুগ ডাল ১১০ থেকে ১২০ টাকা, অ্যাঙ্কর ডাল ৪৫-৪৬ টাকা, বুটের ডাল ৬৮ থেকে ৭০ টাকা, চিনি ৪৭-৪৮ টাকা এবং আটা ৩২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। হাসের ডিম হালি ৩২ এবং ফার্মের মুরগি প্রতি হালি লাল ও সাদা ডিম ৩০ টাকা এবং দেশি মুরগির ডিম হালি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
গত সপ্তাহে এসব পণ্য যেমন দেশি পেঁয়াজ ৩২ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ২৬ থেকে ২৮, আদা ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, রসুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, দেশি মসুর ডাল ১০০ থেকে ১১০, ক্যাঙ্গারু মসুর ডাল ১১০ থেকে ১১৫ টাকা, ভারতীয় মসুর ডাল ৭৬ থেকে ৮০ টাকা, অ্যাঙ্কর ডাল ৪৫-৪৬ টাকা, আটা ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি বরবটি ৪০ টাকা, টমেটো ৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, ঝিঙ্গা ৫০ টাকা, আলু ২০ টাকা, ধুনধুল ৪০ টাকা, কাঁচামরিচ ৬০, চিচিঙ্গা ৩০ টাকা, কাঁকরোল ৪০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, করলা ৫০ টাকা, মুখীকচু ৫০ টাকা, কচুর লতি ৪০ থেকে ৫০ টাকা ও শসা ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি মিষ্টি কুমড়ার দাম ৩০ থেকে ৪০, জালি কুমড়া ৩০, লাউ ৩০ থেকে ৪৫ টাকা, কাঁচকলা হালি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পুঁইশাক প্রতি আটি ২০ টাকা, ডাটা ১৫ থেকে ২০ টাকা, কলমি শাক ৫ টাকা, পাটশাক ৫ থেকে ৭ টাকা, লাউ শাক ২৫ টাকা ও ধনে পাতা (১০০ গ্রাম) ২০ টাকা।
আগের সপ্তাহে এসব পণ্যের দাম ছিল, বরবটি কেজি প্রতি ৩৫ টাকা, টমেটো ৩৫-৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৩০ টাকা, পটল ৩০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, ঝিঙ্গা ৪০ টাকা ও আলু ১৮ টাকা, ধুনধুল ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৫০, চিচিঙ্গা ৩৫ টাকা, কাঁকরোল ৪০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, করলা ৪০-৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৩০ টাকা, মুখী কচু ৫০ টাকা, কচুর লতি ৪০ টাকা, শসা ২৫-৩০ টাকা ও লেবু হালি প্রতি ১৫-২০ টাকা।
গত সপ্তাহে মিষ্টি কুমড়া ৩০-৩৫, জালি কুমড়া ৩০-৩৫ টাকা, পুঁইশাক ২০ টাকা, ডাটা প্রতি আটি ২০ টাকা, কলমি শাক ৭ টাকা, লাল শাক ৭ টাকা, পাটশাক ৫-৭ টাকা, লাউ ২৫ ও ধনে পাতা (১০০ গ্রাম) ২০-২৫ টাকায় বিক্রি হয়।
মাছের বাজারে গত সপ্তাহের চেয়ে গড়ে কেজি প্রতি দাম ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি কেজি মৃগেল ২২০ থেকে ২৭০ টাকা, কাতল ৩৫০ থেকে ৩৮০ টাকা, রুই ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১৩০ থেকে ১৬০ টাকা, পাঙ্গাস ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, শিং মাছ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, দেশি মাগুর ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকা, দেশি চিংড়ি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, গলদা চিংড়ি ৫২০ থেকে ৭০০ টাকা, কৈ ২৬০ টাকা, বাটা ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা, দেশি পুঁটি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, মলা ৪৫০, বড় আকারের বোয়াল ৩৫০ টাকা, সিলভার ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা মাঝারি আকারের এক জোড়া ইলিশ ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা ও মাঝারি আকারের জোড়া ইলিশ ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
দামের ঊর্ধ্বমুখিতা দেখা গেছে মাংস ও চালের বাজারেও। বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৩০০ টাকা, খাসির মাংস ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৭০ টাকা, লেয়ার মুরগি ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকা, দেশি মুরগি প্রতি পিচ ২০০ থেকে ৩৫০ টাকা, হাস প্রতি পিচ ৩০০ চাল ৪৫০ টাকা ও কবুতরের বাচ্চা জোড়া ১৮০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে প্রতি কেজি মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৩২ থেকে ৩৪, নাজির চাল ৫২ টাকা, মিনিকেট ৪০ থেকে ৪৭ টাকা, পারি চাল ৩৮ টাকা, বিআর ঊনত্রিশ ৩৮ চাল ৪০ টাকা, বিআর আটাশ ৩৮ চাল ৪০ টাকা, স্বর্ণা ৩৬-৩৭ এবং পোলাও চাল ৭৫ থেকে ৮৫ টাকায়।