ইরাকের রাজধানী বাগদাদ থেকে মাত্র ৬০ কিলোমিটার দূরে দিয়ালা প্রদেশের রাজধানী বাকুবা শহরে অবস্থান করছে সুন্নি জঙ্গিরা। জঙ্গিদের নাটকীয় সাফল্যে বাগদাদ পতনের আশঙ্কায় রাজধানীবাসীর মধ্যে ভীতি নেমে এসেছে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, গুরুত্বপূর্ণ এই শহরটির কয়েকটি অংশ ইতিমধ্যে বিদ্রোহীদের দখলে চলে গেছে। বাকুবার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ বিদ্রোহীদের হাতে চলে গেলে তারা সহজেই মহাসড়ক ধরে রাজধানী বাগদাদে পৌঁছে যেতে পারবে।
বিবিসি অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বাগদাদ পতনের আশঙ্কায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, খাদ্য ও পানি মজুত করা শুরু করেছেন রাজধানীবাসী। চাহিদা বেড়ে যাওয়া বিভিন্ন সামগ্রীর দামও হঠাত্ করে বেড়ে গেছে। খাদ্য সংগ্রহের পাশাপাশি বাগদাদের বাসিন্দারা নিজেদের মানসিকভাবেও প্রস্তুত করছেন।
বাগদাদের দিকে অগ্রসর হওয়ার পথে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে জঙ্গিদের তুমুল লড়াইয়ের খবর পাওয়া যাচ্ছে। বাগদাদের মার্কিন দূতাবাসের কর্মীদের নিরাপত্তায় ৩০০ সেনাসদস্যের একটি দল ইরাকে পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে জঙ্গিদের প্রতিরোধ করতে ব্যর্থতার অভিযোগে দেশটির চারজন জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছেন ইরাকের প্রধানমন্ত্রী নুরি আল মালিকি। একই সঙ্গে তিনি জাতীয় ঐক্যেরও ডাক দিয়েছেন।
সুন্নি জঙ্গিরা ইতিমধ্যে ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় নিনেভেহ প্রদেশের শিয়া-অধ্যুষিত শহর তাল আফারের অধিকাংশ এলাকার দখল নিয়েছে। প্রাদেশিক পরিষদের উপপ্রধান নুরিদ্দিন কাবালান গতকাল মঙ্গলবার বলেন, জঙ্গিরা তাল আফারসহ আশপাশের কিছু এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। সরকারি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে কেবল বিমানবন্দর এলাকা।
জঙ্গিরা মসুল ও তিকরিত শহরে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি বাগদাদ অভিমুখে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। বাকুবা শহরের কয়েকটি অংশ বিদ্রোহীদের দখলে চলে গেছে। তবে নিরাপত্তা বাহিনী শহর নিজেদের দখলে থাকার দাবি করেছে।
বাগদাদের উত্তরাঞ্চলে সেনাবাহিনী ও জঙ্গিদের মধ্যে কয়েক দিন ধরে লড়াই চলছে। বাগদাদের পশ্চিমে আনবার প্রদেশের ফালুজা শহরের কাছে সুন্নি জঙ্গিরা গুলি করে একটি সরকারি হেলিকপ্টার ভূপাতিত করেছে। তারা দাবি করছে, সেখানে সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকটি ট্যাংক ধ্বংস করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রাদেশিক রাজধানী রামাদির কাছে একটি সামরিক ঘাঁটি থেকে সেনারা পালিয়ে গেছে।