শুনতে অসম্ভব মনে হলেও ৪ বৃটিশ তরুণ ফুটবল বিশ্বকাপের ভেন্যুতে পৌঁছাতে হেঁটে পাড়ি দিয়েছেন প্রায় ১২০০ মাইল পথ! তবে খেলা দেখার জন্য নয়, একটি চ্যারিটির জন্য অর্থ আদায়ের জন্য। এ বছরের মার্চের দিকে আর্জেন্টিনার মেন্ডোজা থেকে রওনা দেন এ ৪ তরুণ। উদ্দেশ্য, চরম অনাবৃষ্টির শিকার ব্রাজিলের বাহিয়ায় একটি পানির কুয়া খননের জন্য ৩০ হাজার ডলারের ফান্ড সংগ্রহ করা! এ চার যুবকের একজন বেন ওসলেন যুক্তরাজ্যের গার্ডিয়ান পত্রিকায় এ ব্যাপারে একটি নিবন্ধ লিখেছিলেন। তিনি বলেন, বাহিয়ার মানুষ এ স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ অনাবৃষ্টিতে ভুগছে। পানির অভাবে মারা যাচ্ছে লাখ লাখ গবাদি পশু। শস্য উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় ভুগছে প্রায় ১ কোটি মানুষ। আর্জেন্টিনার মেন্ডোজা থেকে শুরু হওয়া যাত্রায়, উরুগুয়ে হয়ে ব্রাজিলের বিশ্বকাপ আয়োজক শহর পোর্তো অ্যালেগ্রে পর্যন্ত আসতে তারা পাড়ি দিয়েছেন প্রায় ১২২১ মাইল পথ! ৪ বৃটিশ তরুণ- অ্যাডাম বার্নস, ড্যাভ বিউইক, পেট জনসন ও বেন ওসলেন এই ১২০০ মাইলেরও বেশি পথ হেঁটে পাড়ি দিতে সময় নিয়েছেন ১০০ দিনেরও কম সময়। ১৩ই জুন পর্যন্ত তারা তাদের লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকেরও বেশি অর্থ আদায় করতে সক্ষম হয়েছেন। এ দীর্ঘযাত্রায় তারা রাস্তার পাশে তাঁবু খাটিয়ে, পরিত্যক্ত রেলস্টেশনে কিংবা স্বল্পমূল্যের হোটেলে রাত্রিযাপন করেছেন। পথের সাহায্য নিয়েছেন স্থানীয় অনেকের। বিপদও কম আসেনি। এ সময় তাদের আটক করেছে পুলিশ, খাওয়া-দাওয়া হয়েছে স্থানীয়দের সঙ্গে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, তাদের যাত্রাপথের শেষ ৫০০ মাইল পথযাত্রায় তাদের সঙ্গী হয়েছিল এক কুকুর। এ কুকুরকে তারা নাম দিয়েছিল জেফারসন। ৫ সপ্তাহ ধরে তাদের সঙ্গে থাকার পর ব্রাজিল পৌঁছে তার মালিকের কাছে ফিরে যায় কুকুরটি। জানা যায়, যেদিন তারা ব্রাজিলের পোর্তো অ্যালেগ্রেতে পৌঁছেন, সেদিন একই সঙ্গে কুকুরের মালিকও কুকুরকে ফিরিয়ে নিতে আসেন সেখানে। এ অসাধারণ রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার মধুর পরিসমাপ্তি সমপর্কে অন্যতম অভিযাত্রী বার্নস যথার্থই বলেছেন- ওয়াল্ট ডিজনিও সম্ভবত গল্পের এত সুন্দর সমাপ্তি টানতে পারতেন না।