হত্যার এক মাস, হোতাদের ‘পৌষ মাস’

iqram-kill4-311x186ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি একরামুল হক একরাম হত্যার এক মাস পূর্ণ হলেও এখনো গ্রেপ্তার হয়নি হত্যাকাণ্ডের হোতারা। এ সময়ে মোট ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে রাঘব বোয়ালরা।

গত ২০ মে সকাল ১১টার দিকে চেয়ারম্যান একরামুল হক একরামকে ফেনীর একাডেমি এলাকার বিলাসী সিনেমা হলের সামনের সড়কে দুর্বৃত্তরা প্রকাশ্যে গুলি করে ও আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে।

এ হত্যায় অংশ নেওয়া ১৬ জনের জবানবন্দি নিয়েছেন আদালত। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার বিকেলে আবু বকর ও যুবলীগকর্মী শ্যুটার রাসেলের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। ফেনীর চিফ জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সিনিয়র বিচারক মোহাম্মদ খাইরুল আমীনের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তারা।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও আবুল কালাম আজাদ জানান, পুলিশ-র‍্যাব এ পর্যন্ত ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। ১৬ জনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নিয়েছেন। হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ত অন্যদেরও গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।

একরামের বড় ভাই রেজাউল হক জসিম ও মোজাম্মেল হক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “হত্যাকাণ্ডে রাঘব বোয়ালরা এখনও ধরা পড়েনি। তাছাড়া মামলাটি সিআইডিতে হস্তান্তরের জন্য বার বার অনুরোধ করা হলেও তা করা হয়নি। শুনেছি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একরামকে খুব পছন্দ করতেন। তবে প্রধানমন্ত্রীর কোনো কার্যকর পদক্ষেপ এখন পর্যন্ত চোখে পড়েনি।”

গ্রেপ্তারে উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- মামলার এজহারভূক্ত প্রধান আসামি বিএনপি নেতা মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী মিনার, আওয়ামী লীগ নেতা কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ হিল মাহমুদ শিবলু, আওয়ামী লীগ নেতা বেলাল হোসেন প্রকাশ টুপি বেলাল, আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদ চৌধুরী, নিজাম হাজারীর মামাতো ভাই ছাত্রলীগ কর্মী আবিদুল ইসলাম আবিদ, কাজী শাহনান মাহমুদ, জাহিদুল ইসলাম সৈকত, মো. জিহাদ, শাহজালাল উদ্দিন শিপন, চৌধুরী নাফিজ উদ্দিন অনীক, সাজ্জাদুল ইসলাম পাটোয়ারি সিফাত, হেলাল উদ্দিন, সাইদুল ইসলাম পবন, ও আরমান হোসেন কায়সার, যুবলীগ কর্মী স্যুটার রাসেল, আবু বকর, আবদুর রউপ, আবুল হোসেন জাহাঙ্গীর ও আজমীর হোসেন রায়হান। মামলায় গ্রেপ্তার একজন ছাড়া অন্য সবাই আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সাথে যুক্ত।

এছাড়াও গ্রেপ্তারকৃতদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে একরাম হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারি সৌদি আরবে অবস্থান করছেন।

একরাম হত্যার ঘটনার অন্যতম পরিকল্পনাকারী হিসাবে যাদের নাম এসেছে তাদের  মধ্যে পলাতক রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির আদেল, পৌর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জিয়াউল আলম মিস্টার ও ফুলগাজী আনন্দপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হারুন মজুমদার।

ফেনীর পুলিশ সুপার (এসপি) পরিতোষ ঘোষ জানান, পুলিশ জাহাঙ্গীর কবির আদেল ও জিয়াউল আলম মিষ্টারসহ হত্যাকাণ্ড সংশ্লিষ্টতায় যাদের নাম এসেছে পুলিশ তাদের সবাইকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *