মতিঝিল মডেল হাই স্কুল এন্ড কলেজ পুনর্মিলনী-২০১৪ অনুষ্ঠিত

Motijheel Model SwadeshNews24
গত ০৬ জুন, ২০১৪ তারিখ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হলো মতিঝিল মডেল হাই স্কুল এন্ড কলেজের বৃহত্তম পুনর্মিলনী। উক্ত মিলনীতে স্কুলের প্রথম ব্যাচ, ১৯৮৩ সন হতে ২০১৩ সন পর্যন্ত ৩০ বছরের এসএসসি পাশ করা প্রায় আটশত জন ছাত্র-ছাত্রীসহ বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন। মহা জাক-জমকের সাথে এই অনুষ্ঠান সকাল ১০টা হতে শুরু হয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে রাত ৮টা পর্যন্ত উদ্যাপিত হয়। এই মহতি মিলনোৎসবের আয়োজক ছিলেন জনাব নাহিদ পারভেজ, জনাব মিরাজুর রহমান অন্তর, জনাব সাখাওয়াত হোসেন সোহাগ এবং জনাব সাজ্জাদ মাহমুদ খান রিজভী।
DSC_3104রৌদ্রোজ্জ্বল জুনের ০৬ তারিখ প্রচণ্ড তাপদাহে দগ্ধ সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র যেন ফাগুনের ফল্গুধারায় মেতেছে মতিঝিল মডেল হাই স্কুল এন্ড কলেজের প্রাক্তন বন্ধুবর। “বন্ধু! কি খবর বল / কত দিন দেখা হয়নি” বলে জড়িয়ে ধরেছে ৩০ বছর পরে দেখা হওয়া সহপাঠীদের সাথে। হারিয়ে যাওয়া বন্ধুকে কাছে পাওয়ার আনন্দ-ফোয়ারায় উদ্ভাসিত হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্ত্বর। গুঞ্জন শুনি শুধু- কোথায় ছিলি, কেমন আছিস, কি করছিস-। প্রিয় শিক্ষকদের কাছে পাওয়া, শ্রদ্ধেয় বড় ভাই-আপুর সুখ-সংশ্রব, শুভাশিষ বন্ধুবর্গের আলিঙ্গন আর স্নেহের ছোট ভাই-বোনদের সাহচর্যে ভরপুর এক মহেন্দ্র-দিন। আনন্দের অবগাহনে মূহ্যমান।
সকালে নিবন্ধনের সময় থেকে শুরু হয়েছে এরই ধারাবাহিকতা। তারপর মারুফা-স্বপ্নিকের মনোমুগ্ধকর যুগল উপস্থাপনায় আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় সকাল ১০:৩০টায়। টিএসসি মিলনায়তন কানায় কানায় পূর্ণ তখন। পর্যাপ্ত বসার স্থান না পেলেও বন্ধু-সখা-প্রিয়-ভাই সকলেই শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে দীর্ঘ প্রতিক্ষীত মিলন মুহূর্তের জন্য অপেক্ষমান। ১৯৮৩ সালে এসএসসি পাশ করা প্রথম ব্যাচের আইনজীবী মো: আব্দুল্লাহ শরীফের স্বাগত বক্তব্যে এই নিরাবতার অবসান ঘটে। মিলনায়তনের মধ্যে সকলের চোখে তখন আনন্দশ্র“। তারপর একে একে বিভিন্ন ব্যাচের প্রাক্তন ছাত্র তাঁদের স্কুল স্মৃতি স্মরণ করলেন। সবই যেন সকলের স্মৃতি কথা, মনের গভীরে সযতেœ রাখা সব পুরানো সেই দিনের কথা। এই অনুষ্ঠানের মধ্যেই উপস্থিত ছিলেন স্কুলের শিক্ষক। স্মরণ করা হয় আমাদের মধ্যে থেকে হারিয়ে যাওয়া সব শিক্ষক-ছাত্র-ছাত্রীদের। তাঁদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে সমাপ্ত হয় স্মৃতিপর্বের প্রথম আয়োজন।
নামাজ ও মধ্যাহ্ন বিরতির পর দুপুরেই শুরু হয় স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মোহনা-রায়হানের সুললিত উপস্থাপনায় চলে একের পর এক দৃষ্টি নন্দিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পূর্ণ মিলনায়তনে চলে আনন্দের ঢেউ। একটানা চলতে থাকে এর ধারাবাহিকতা। অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয় ব্যান্ড শো-এর মাধ্যমে। অবশেষে আয়োজক-বন্ধু-বান্ধব-সহপাঠীদের অশ্র“সিক্ত বিচ্ছেদ। “সম্মুখ ঊর্মিকে ডাকে পশ্চাতের ঢেউ / দিব না, দিব না যেতে / নাহি শুনে কেউ / নাহি কোন সাড়া”। বিদায় মুহূর্তে সকলে আর চোখের জল ধরে রাখতে পারেনি। এই মিলন মেলা যেন শেষ হয়ে না যায়, এই মিলন মেলা যেন প্রাক্তন ছাত্র সংঘে পরিণত করা যায় সেই আশাবাদ ব্যক্ত করে দিনের আয়োজন সমাপ্ত করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *