সুইস ব্যাংকে পাচার করা টাকা ফেরত ফিরিয়ে আনা হবে শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট বলে মনে করছে জামায়াত।
শনিবার সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশ থেকে পাচারকৃত সকল অর্থ ফেরত আনার ও দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দেন জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি ডা. শফিকুর রহমান।
ডা. শফিক অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনা নিজ শাসনামলের অর্থ পাচার ও তা ফেরত আনার বিষয়ে শুত্রুবার কোন কথা না বলে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের উপর দোষ চাপিয়ে সুইস ব্যাংকে টাকা পাচারের যে বক্তব্য দিয়েছেন তা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক অসৎ উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
দলটির দাবি, জনগণের প্রশ্ন ২০১১ সালে পাচার হওয়া সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা এবং সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে অর্থ পাচার ও তা ফেরত আনা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর কোন বক্তব্য নেই কেন? জনগণ স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত পাচার হওয়া সকল অর্থ ফেরত চায়।
বিবৃতিতে সম্প্রতি জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) এর গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরা হয়, সেখানে বলা হয়, ইউএনডিপির প্রতিবেদনে স্বাধীনতার পর গত ৪ দশকে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৩ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। যা মোট দেশজ উৎপাদনের ৩০.৪ শতাংশ। এ অর্থ সাম্প্রতিক সময়ের দুটি জাতীয় বাজেটের আকারের সমান।
শুধুমাত্র ২০১১ সালে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে প্রায় সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা। ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে সুইস ব্যাংকে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা টাকা পাচার হয়েছে। এ টাকা আগামী অর্থবছরের ঘাটতি অর্থায়নের জন্য সরকার যে পরিমাণ প্রকৃত ঋণ গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করেছে তার প্রায় ৬ ভাগের ১ ভাগ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশ থেকে গচ্ছিত অর্থের পরিমাণ ৬২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। দুর্নীতির মাধ্যমেই এসব টাকা পাচার হচ্ছে। এসব টাকা বিদেশে পাচার না হলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক অগ্রগতি সাধিত হতো।
জামায়াতের দাবি, স্বাধীনতার পর থেকে কালোবাজারির মাধ্যমে সুইস ব্যাংকে টাকা পাচারকারীদের নাম জনগণের সামনে প্রকাশ করা উচিৎ। শুধু নাম প্রকাশই যথেষ্ট নয়, ভবিষ্যতে যাতে কেউ জনগণের অর্থ লুটপাট করে বিদেশে পাচার করতে না পারে এ জন্য দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে সংশ্লিষ্ট সকল পাচারকারীদেরকে আইনের আওতায় এনে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সেই সাথে বাংলাদেশ আমলে পাচার হওয়া সকল অর্থ ফেরত আনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।