পাপ বর্জনই রমজানের বড় ইবাদত

islam_swadeshnews24রমজানুল মোবারকের রোজার উদ্দেশ্য হচ্ছে তাকওয়ার গুণে গুণান্বিত হওয়া। আর তাকওয়ার মূল কথা হচ্ছে পাপ কাজ বর্জন করা। রোজা বা সিয়ামের উদ্দেশ্য প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে- হে মুমিনগণ! তোমাদের ওপর সিয়াম ফরজ করা হলো যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল যাতে তোমরা মুত্তাকী হতে পার। (বাকারা : ১৮৩)। রোজার মাধ্যমে প্রকৃতির তাড়না নিয়ন্ত্রণের শক্তি অর্জিত হয়। আর প্রকৃত অর্থে সেটাই তাকওয়া খোদাভীতির মূলভিত্তি।

রমজান মাসে অধিক হারে নেক কাজের প্রতি মনোযোগী হতে হবে। তবে এরচেয়ে আরও অধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, রমজানে পাপ কাজ বর্জনের প্রাণান্তকর চেষ্টা করতে হবে। রমজান একটি মহান পবিত্র মাস। এ মাসে নেক কাজ করলে যেমন অধিক ছওয়াব হয় তদ্রূপ পাপকর্ম করলে অপরাধটাও হয় গুরুতর ও জঘন্য। এ বিষয়টিও সব মুসলমানকে স্মরণ রাখতে হবে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হজরত রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, রমজান মাসের প্রথম রাতেই শয়তান ও দুষ্ট জিনদের শৃঙ্খলাবদ্ধ করে ফেলা হয়। জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর একটি দরজাও তখন আর খোলা হয় না। জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়। এর একটি দরজাও তখন আর বন্ধ করা হয় না। আর একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা দিতে থাকেন : হে কল্যাণকামী! অগ্রসর হও। হে পাপাসক্ত বিরত হও।… (তিরমিযী ১/১৪৭ মিশকাত ১/১৭৩)। এ হাদিসে উল্লেখ রয়েছে যে, রমজানে আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন ঘোষণাকারী পাপ কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য মানুষকে আহ্বান করতে থাকেন। বিশেষত মিথ্যা কথা এবং গীবত-পরনিন্দা রমজানে সম্পূর্ণ বর্জন করা প্রত্যেক রোজাদারের কর্তব্য। রসুল (সা.) ইরশাদ করেন, যে মিথ্যা কথা বলা এবং সে অনুযায়ী কাজ করা বর্জন করল না তার পানাহার বর্জনের আল্লাহতায়ালার কোনোই প্রয়োজন নেই। (বুখারি)। রমজানে জিহ্বা, চোখ, কানকেও গোনাহ থেকে হেফাজত করতে হবে। এসব অঙ্গ দ্বারা যেন কোনো পাপ না হয় সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি দিতে হবে। সর্বোপরি অধিক হারে নেক আমলের পাশাপাশি রমজানে বিশেষত পাপ থেকে বিরত থাকার সর্বাত্দক চেষ্টা চালাতে হবে। তবেই রোজা সার্থক হবে।

লেখক : খতিব, মুহাম্মাদিয়া দারুল উলূম জামে মসজিদ, ওয়াপদা রোড, পশ্চিম রামপুরা, ঢাকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *