ভোটদানে প্রচলিত সিল ব্যবহারের পরিবর্তে পরীক্ষামূলক মার্কার বা কলম ব্যবহার করতে চেয়েছিল ইসি। সিদ্ধান্তটি থেকে সরে এলেও এবার ইউপি নির্বাচনে ইভিএম চালু করতে আইন সংশোধন করা হচ্ছে।
আগের অবস্থান থেকে সরে ভোটে ব্যালট পেপারে সিল দেয়ার প্রচলিত নির্বাচনী ব্যবস্থা বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
এক বছর আগে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন ইসি পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পরীক্ষামূলকভাবে ভোটদানে মার্কিং সিলের পরিবর্তে মার্কার বা কলম ব্যবহারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
সেই সঙ্গে বিধিতে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনার সিদ্ধান্তও হয়।পদ্ধতিটি চালু হলে বিশেষ ধরনের মার্কার আমদানি করতে হত ইসিকে।
তবে সব কিছু পর্যালোচনা করে সম্প্রতি ইসি আগের অবস্থান থেকে সরে এসেছে বলে জানিয়েছেন ইসি সচিবালয়ের উপ-সচিব আবদুল অদুদ।
কমিশন সভায় বিষয়টি উত্থাপন করা হলে নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক বলেন, “স্থানীয় সরকার নির্বাচনে মার্কার বা কলম ব্যবহার না করে বর্তমানে যে বিধান প্রচলিত রয়েছে তা-ই রাখতে হবে।”
সিল দিয়ে নির্বাচনে বাতিল ভোটের হার বেড়ে যাওয়ায় নতুন এ পদ্ধতির কথা ভেবেছিল ইসি। ওই সময় কাজী রকিব বলেছিলেন, সিলের বিকল্প হিসেবে কলম দিয়ে ব্যালটে প্রতীকের ওপর টিক বা ক্রস চিহ্ন ব্যবহারের চিন্তা করছি।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, সিলের পরিবর্তে কলম বা মার্কার ব্যবহার হলে বাতিল ভোট আরো বাড়তে পারে। এখন ভোটের সিল ইসি ছাড়া কারো কাছে থাকে না। কলম ব্যবহার হলে অনেকে ভোট কেন্দ্রে ব্যালট নষ্ট করার সুযোগ নিতে চাইবে সহজে। স্বল্প ভোটের ব্যবধান হলে পকেটের কলম ব্যবহার করে ব্যালট নষ্টের প্রবণতাও বাড়তে পারে।
তাছাড়া একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভোটারদের [নিরক্ষর]কলমের ব্যবহার নিয়েও শঙ্কা রয়েছে। এসব বিবেচনা করেই ব্যালটে নতুন পদ্ধতির ভোটদান চাইছে না কমিশন।
ব্যালটের পরিবর্তে ইভিএমে ভোট হলে বাতিল ভোট হয়ার কোনো শঙ্কাই নেই বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সিটি করপোরেশন, উপজেলা ও পৌরসভার ধারাবাহিকতায় এবার ইউনিয়ন পরিষদেও ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
উপ-সচিব আবদুল অদুদ বলেন, আগামীতে ইউনিয়ন পরিষদে ইভিএম ব্যবহারে নির্বাচন কমিশনের নীতিগত সিদ্ধান্ত থাকায় বিদ্যমান বিধিমালায় তা অন্তর্ভুক্ত করে সংশোধনী আনা হচ্ছে।
“শিগগির কমিশন সভায় এ সংক্রান্ত কার্যপত্র উপস্থাপন করা হবে। অনুমোদনের পর ইউনিয়ন পরিষদের যে কোনো উপনির্বাচন বা সাধারণ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সুযোগ আসবে।”
ইসি কর্মকর্তারা জানান, ইভিএম ব্যবহার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর পরস্পর বিরোধিতার মুখে সংসদ নির্বাচনের আইনি বিধানে এ সংক্রান্ত বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। রাজনৈতিক সমঝোতা ছাড়া কবে নাগাদ সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা যাবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
কিন্তু স্থানীয় নির্বাচনগুলোয় ইভিএম’র ধারাবাহিকতায় বজায় থাকছে। ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরের বাজেটেও ইভিএম কেনা জন্যে ইসির প্রস্তাবিত বাজেটে বরাদ্দ রয়েছে।