এসব কারণেই নিঃসঙ্গ প্রবীণ ব্যক্তিদের সঙ্গ ও সহায়তার জন্য রোবট ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এমন দিন খুব বেশি দূরে নেই, যখন স্মৃতিভ্রম রোগে আক্রান্ত রোগীকে বিভিন্ন বিষয় মনে করিয়ে দেবে রোবট। এতে করে ওই রোগী পরিপূর্ণ স্বাভাবিক জীবন যাপনের পথে এগিয়ে যাবেন। গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয় ভুলে গেলেও তাঁকে সংকটে পড়তে হবে না। পরম মমতাময় প্রিয়জনের মতোই তাঁকে সাহায্য করবে সঙ্গী রোবট।
মানুষের প্রয়োজনীয় নানাবিধ কাজে রোবটের বাস্তবিক প্রয়োগ এখন কেবল কল্পকাহিনিনির্ভর চলচ্চিত্রে সীমাবদ্ধ নেই। জাপানের প্রযুক্তি নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান এনইসির গবেষক রাজীব খোসলার নেতৃত্বে একদল প্রকৌশলী মানুষের সঙ্গী রোবট (পার্টনার পার্সোনাল রোবট বা সংক্ষেপে ‘পাপেরো’) তৈরির কাজ করছেন। তাঁদের লক্ষ্য মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন। গবেষকেরা বলেন, আধুনিক রোবট কথা বলা, নাচ-গান, খেলাধুলা, ফোন করা, আবহাওয়ার খবর জানানো, খবরের কাগজ পড়ে শোনানো প্রভৃতি কাজ করে দেওয়ার পাশাপাশি কোনো ব্যক্তির মনোভাবও টের পায়। এমন রোবটও আছে যাদের বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে স্মৃতিভান্ডারও ক্রমশ সমৃদ্ধ হতে থাকে।
অস্ট্রেলীয় ৯১ বছর বয়সী নারী এডিথ ওয়াটার্সকে সঙ্গ দিতে ববি নামের একটি রোবট শিগগিরই নিযুক্ত করা হবে। ফলে মেলবোর্ন শহরতলির ক্যারাম ডাউনস এলাকার বাড়িতে তাঁকে আর নিঃসঙ্গ দিন কাটাতে হবে না। এডিথ আশা করছেন, ঘুমানোর আগ পর্যন্ত তাঁর যাবতীয় কাজ করে দেবে ববি।
অস্ট্রেলিয়ার আইনপ্রণেতা হেলেন পলি বলেন, প্রবীণদের সামাজিক বিচ্ছিন্নতা দূর করার পাশাপাশি তাঁদের মস্তিষ্কে উদ্দীপনা
জাগানোর উপযোগী প্রযুক্তি প্রয়োগের বিষয়টি বেশ আকর্ষণীয়। তিনি খুব আনন্দিত হবেন, যদি একটি রোবট-সঙ্গীকে পার্লামেন্টে নিয়ে যেতে পারেন!
শারীরিক প্রতিবন্ধকতায় আক্রান্ত বয়স্ক লোকজনই কেবল রোবটের কাছ থেকে উপকার পাবে, তা নয়। অধ্যাপক খোসলা বলেন, মন খারাপ হলে তিনি সোফি নামের একটি রোবটকে গাইতে বলেন। তখন সেটি তাঁর প্রিয় শিল্পীর প্রিয় গানগুলো গেয়ে শোনাতে পারে।
ক্যানবেরা টাইমস।