শামসুল আলম শাহীন, কিশোরগঞ্জ: প্রতিবারের ন্যায় এবারও ঈদুল ফিতরের সর্ববৃহৎ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায়। মুসল্লিরা ভোর থেকেই দলে দলে ঈদগাহ মাঠে আসতে শুরু করেন। তারা ঈদগাহে এসে কাতারবন্দি হন। জামাত শুরু হয় সকাল ১০ টায়। জামাত শুরুর আগে ঈদগাহের রেওয়াজ অনুযায়ী শটগানের গুলি ফুটিয়ে জামাত শুরুর ঘোষণা দেওয়া হয়। জামাতে ইমামতি করেন উলামা মাসায়েখ সংহতি পরিষদ ও ইসলাহুল মুসলিমিন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ।
ঈদগাহে নিরাপত্তার জন্য বিপুল সংখ্যক নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ করা হয়। স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা এ মাঠে নামাজ আদায় করেন। ঈদ উপলক্ষে ঈদগাহ সংলগ্ন সড়কে বেশ কয়েকটি তোড়ন নির্মাণ করা হয়।
এ মাঠে নামাজ আদায় করলে দোয়া কবুল হয়, প্রচুর সোয়াব পাওয়া যায়-এ বিশ্বাস থেকেই প্রতিবছর মুসল্লীর সংখ্যা বাড়ছে। ২৭ রমজানের পর থেকেই দূর দূরান্তের মুসল্লীরা মাঠের মিম্বর, আত্মীয় স্বজনের বাসা বাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে এসে আশ্রয় গ্রহণ করেন। সকাল ৯ টার আগেই ঈদগাহ ময়দান কানায় কানায় ভরে যায়। এরপরও মুসল্লিরা আসতে থাকেন। অনেকেই জায়গা না পেয়ে পাশের রাস্তা ও খালি জায়গায় নামাজ পড়েন। স্বদেশ নিউজ ২৪ এর প্রতিনিধি জানান তিন লক্ষাধিক মুসল্লি এ মাঠে নামাজ আদায় করেছেন বলে ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
ঈদ উপলক্ষে তিনটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়। মুসল্লিরা ট্রেন ছাড়াও মাইক্রোবাস, সিএনজি অটোরিকসা, পিকআপ ভ্যানসহ বিভিন্নভাবে ঈদগাহে আসেন। জামাত শেষে মোনাজাতে দেশ ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করা হয়। পাশাপাশি ফিলিস্তিনের নির্যাতিত জনগণের মুক্তির জন্যও দোয়া করা হয়। মোনাজাতে আগ্রাসি ইসরাইলি শক্তিকে একঘরে করার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
মসনদ-ঈ-আলা ঈশাখাঁর ষষ্ঠ বংশধর দেওয়ান মান্নান দাদ খান ১৯৫০ সালে প্রায় পাঁচ একর ভূমি শোলাকিয়া ঈদগাহকে ওয়াকফ করে দেন। তবে ১৮২৮ সনে এ মাঠে প্রথম ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় বলে জানা গেছে। সে অনুযায়ী এ মাঠের রয়েছে প্রায় আড়াইশত বছরের ঐতিহ্য। এ মাঠের বর্তমান জমির পরিমান প্রায় সাত একর। প্রায় তিন লক্ষাধিক মুসল্লী এ মাঠে একসাথে নামাজ আদায় করতে পারেন বলে ধারণা করা হয়।
।