দারুণ সুশ্রী। বাক্যবিলাসেও সাবলীল। গায়ে দামি গহনা। হাতে দামি মোবাইল সেট। জমকালো পোশাকে মোড়ানো যেন এক পরী। চলেন প্রাইভেটকারে। চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দেন। জাদুকরী কথায় মুগ্ধ করে এভাবেই নারী প্রতারকরা হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা।
প্রবাসীদের মা-বাবা ও সন্তানদের টার্গেট করে রাজধানীর উত্তরায় অনেক দিন থেকে চক্রটি সক্রিয়। গত বৃহস্পতিবার এই চক্রের শিকার হয়েছেন ৪ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা বিশিষ্ট সাংবাদিক সালেহ চৌধুরী। সুন্দরী নারী প্রতারকটি যে কায়দায় তার বাসায় ঢুকে প্রতারণার জাল ফেলে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে, তাঅনেকটা সিনেমার গল্পের মতোই। এ ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন সালেহ চৌধুরী। পুলিশ বলছে, প্রতারক চক্রকে খুঁজে বের করতে তারা পদক্ষেপ নিচ্ছে। সমকাল
সালেহ চৌধুরী গতকাল রাতে প্রতারণার আদ্যোপান্ত জানান। তার পুত্র ও পুত্রবধূ নরওয়ের অসলোতে থাকেন। প্রতারক নারী তাদের একান্তজন পরিচয়ে উত্তরার ফ্ল্যাটে এসে কথার জাদুতে তাকে ও তার স্ত্রীকে মুগ্ধ করে ফেলেন। তরুণীটি তার পুত্র ও পুত্রবধূর নামধাম, ঠিকানা, তাদের বন্ধু-বান্ধবের নির্ভুল পরিচয় দেন। জন্মদিনের এক অনুষ্ঠানে সালেহ চৌধুরীকে দেখেছেন বলেও জানান তিনি।
সালেহ চৌধুরী আরও জানান, তরুণী নিজেকে চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দিয়ে জানান, তার স্বামীও চিকিৎসক। ঈদের ছুটিতে তারা দেশে বেড়াতে এসেছেন। ছুটির পর ফের নরওয়েতে ফিরবেন। তার কথাবার্তা ও আচরণে সালেহ-দম্পতি রীতিমতো মুগ্ধ। তরুণী হঠাৎ বলেন, ‘সামান্য সমস্যায় পড়েছি। ননদ ও স্বজনরা জরুরি কাজে সিলেট যাবেন। ঈদের ছুটিতে মানি এক্সচেঞ্জ বন্ধ থাকায় ডলার ভাঙাতে পারছেন না। ৫০ হাজার টাকা প্রয়োজন। তার সব ডলার রেখে যাবেন।’ সম্মোহিত দম্পতি অবলীলায় তরুণীকে ১১ হাজার টাকা দেন। টাকা পাওয়ার পর ওই তরুণী ব্যাগ থেকে কিছু ডলার বের করার ভানও করেন। তখন হঠাৎ সালেহ চৌধুরীর মনে হয়, সাধারণত চিকিৎসকরা গায়ে এত গহনা পরেন না। ওই তরুণী কোনো প্রতারক নন তো! এর পরই আইপ্যাড নিয়ে তরুণীর ছবি তুলে রাখেন। ছবি তোলার পর পরই ড্রইংরুমে যাওয়ার কথা বলে দ্রুত বাসা থেকে পালান ওই তরুণী। ততক্ষণে সালেহ চৌধুরী বুঝতে পারেন, তারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন। বাসা থেকে নেমেই একটি প্রাইভেটকারে সুশ্রী ওই তরুণী এলাকা ত্যাগ করেন।
বেশ কয়েক মাস আগে উত্তরার আরেক বাড়িতে অন্য এক তরুণী প্রায় অভিন্ন গল্প ফেঁদে ২৫ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যান।
————Collected By Shawn.