জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালাকে গণবিরোধী আখ্যায়িত করে এর বিরুদ্ধে দেশবাসীকে আন্দোলনের প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বিএনপি প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে তিনি এ আহ্বান জানান। দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, আজকের দিনটি আমাদের সবার জন্য আনন্দ ও প্রেরণার। ১৯৭৮ সালের এই দিনে মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বাকশাল প্রতিষ্ঠার পর দেশে রাজনৈতিক শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছিল তা পূরণ করতে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন করেন তিনি। এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তিনি বলেন, বিএনপি গত ৩৬ বছরে বারবার সবার অংশগ্রহণমূলক জনগণের ভোটে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছে এবং দেশ ও জনগণের সমৃদ্ধি ও কল্যাণে কাজ করে গেছে। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আমাদের এই দল অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করেছে। এমনকি ৯ বছরের স্বৈরাচার বিরোধী গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনেও বিএনপি রাজপথে আপসহীন অগ্রণী ভূমিকা পালন করে স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের চর্চা ও বিকাশসহ দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় বিএনপির বলিষ্ঠ ভূমিকা জনগণ কর্তৃক সমাদৃত হয়েছে। জনগণের আস্থা ও বিশ^াস অক্ষুণœ রেখে দেশ ও জনগণের সেবায় বিএনপি আগামী দিনগুলোতেও বলিষ্ঠ ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। খালেদা জিয়া বলেন, আজ দেশে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে। ৫ই জানুয়ারির তামাশার নির্বাচনের পর গণতন্ত্র এখন মৃতপ্রায়। দেশবিরোধী নানা চুক্তি ও কর্মকা-ের মাধ্যমে বর্তমান সরকার জাতীয় স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে চলেছে। দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। দেশব্যাপী পথে-ঘাটে শুধু লাশের মিছিল। বিদ্যুৎ-গ্যাস-পানি নিয়ে হাহাকার চারদিকে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষের নাভিশ^াস উঠেছে। দেশজুড়ে গণহত্যা. গুম, গুপ্তহত্যা, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, নিপীড়ন ও নির্যাতনের মহোৎসব চলছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ভূলুণ্ঠিত করার জন্য নির্লজ্জ দলীয়করণের চূড়ান্ত রূপ দিতে বিচারকদের অভিশংসনের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের কছে ন্যস্ত করার আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বে নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী করার জন্যই এই আইন পাশের তোড়জোড় চলছে। এটি পাশ হলে নিপীড়িত মানুষের আইনি প্রতিকার পাওয়ার শেষ ভরসাটুকুও বন্ধ হয়ে যাবে। জনপ্রশাসন আজ্ঞাবহ হওয়ার কারণেই স্থবির হয়ে পড়েছে। যাতে জনমতের প্রতিফলন না ঘটে সেইজন্য গণমাধ্যমের কণ্ঠ রুদ্ধ করতে জাতীয় সম্প্রচার নীতি প্রণয়ন করা হচ্ছে। এটি হবে মূলত: এই অবৈধ সরকার কর্তৃক মানুষের বাক, ব্যক্তি ও চিন্তার স্বাধীনতাকেই অপহরণ করা। এই গণবিরোধী নীতি প্রতিরোধ করার জন্য আমি দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী এবং দেশবাসীকে আন্দোলন সংগ্রামের সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণের উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।