ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে (এসএমই) ব্যাংকঋণের প্রবাহ বাড়াতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নির্দিষ্ট এলাকা নির্বাচন করে ওই এলাকার সম্ভাবনাময়ী খাত উন্নয়নে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা সরাসরি কাজ শুরু করেছেন। ওই এলাকায় যেসব ব্যাংকের শাখা রয়েছে, সেসব ব্যাংকের এসএমই কর্মকর্তাদেরও এ প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কেরানীগঞ্জের শিল্প বিকাশে সমপ্রতি এ ধরনের একটি ব্যাংকারস সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. মাছুম পাটোয়ারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সভায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা ছাড়াও ৩২টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এসএমইর প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, দেশের গুরুত্বপূর্ণ এ শিল্প অঞ্চলের কোন শিল্প প্রতিষ্ঠান অর্থের অভাবে বিকাশ লাভে যাতে বাধাগ্রস্ত না হয়, সে জন্য কেরানীগঞ্জ এলাকায় কার্যরত সব ব্যাংক ও ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এসএমইর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। সভায় যে কোন মূল্যে এসএমই শিল্প বিকাশে অর্থায়ন অব্যাহত রাখা ও প্রয়োজনে আরও জোরদার করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভাগের জিএম মো. মাছুম পাটোয়ারী বলেন, শিল্প বিকাশে ব্যাংকগুলোর সহযোগিতা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। নতুন এলাকা নির্বাচনের মাধ্যমে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে উদ্যোক্তাদের পরিচয় করানোর মাধ্যমে ঋণপ্রাপ্তিতে যে সমস্যা রয়েছে, তা দূর করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন, এ উদ্যোগের প্রধান লক্ষ্য ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার সমস্যার সমাধান ও নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি। কেরানীগঞ্জে ঋণের প্রবাহ ভাল, কিন্তু যথেষ্ট নয়। রাজধানীর পাশে হওয়ায় এ এলাকায় এসএমই খাতের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। এখন ঋণের প্রবাহ ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে একটি সমন্বিত উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, কেরানীগঞ্জের জিনজিরা এলাকায় দেশি-বিদেশি মেশিনারিজ যন্ত্রাংশ প্রস্তুতের জন্য ঐতিহ্যবাহী অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেখানে লাইট ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের নানা ধরনের পণ্য প্রস্তুত করা হয়। দেশের তৈরি পোশাক খাতে অভ্যন্তরীণ চাহিদা মূলত এখান থেকেই মেটানো হয়। এখানে হাঁড়ি-পাতিল, দা-বঁটি, কাঁসা-পিতল, নাটবল্টু, ছুরি-চাকু, কুড়াল, ঢেউটিনসহ কাঠের ফ্রেমে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ তৈরি হয়। এ ছাড়া স্টিলের ফার্নিচার, লঞ্চ-জাহাজ মেরামত ও রিকশা বা সাইকেলের যন্ত্রাংশ, জুতা সেন্ডেল, প্লাস্টিক সামগ্রী প্রস্তুত করা হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, কেরানীগঞ্জ এলাকায় কুটির, মাইক্রো ও ক্ষুদ্রশিল্পে সমৃদ্ধ। দেশীয় চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বিদেশেও এখানকার অনেক পণ্য রপ্তানি হয়ে থাকে। বিশেষ করে ভারতে সেভেন সিস্টার্স এলাকায় এখানকার পণ্যের বিপুল চাহিদা রয়েছে বলে জানা গেছে।