আরিফ উদ্দিন, গাইবান্ধা থেকেঃ বিয়ের মাত্র দেড় মাসের মাথায় যৌতুকের দাবীতে পাষন্ড স্বামী অমানুষিকভাবে নির্যাতনের পর এসিড ছুড়ে ঝলসে দিয়েছে গৃহবধূ হেদেনা বেগমকে (১৮)। গোটা শরীর মারাত্মক ঝলসে এসিডদগ্ধ হেদেনা এখন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। সরেজমিন জানা যায়, পলাশবাড়ী উপজেলার বেতকাপা ইউপি’র দর্জিপাড়া গ্রামের দরিদ্র গোলাম মোস্তফার কন্যা হেদেনার সাথে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজ গ্রামের কফিল উদ্দিনের পুত্র মাহবুবের বিয়ে হয়। গাজীপুর জেলার চন্দ্রা এলাকার কাজী মাওলানা লুৎফর রহমানের অফিসে এ বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের দেড় মাস যেতে না যেতেই লোভী স্বামী মাহবুব ৫০ হাজার টাকা যৌতুকের দাবী করে। হেদেনার পরিবারের দারিদ্রতার কারণে পিতা গোলাম মোস্তফা যৌতুকের উক্ত পরিমাণ টাকা প্রদানে ব্যর্থ হয়। এ কারণে মাহবুব গৃহবধু হেদেনাকে প্রায়শই বাবার বাড়ী থেকে টাকা আনার চাপ প্রয়োগ করে বেদম শারীরিক নির্যাতন অব্যাহত রাখে। ঘটনার দিন গত ১১ আগস্ট স্বামী মাহাবুব ও ননদ শাহিনুর হেদেনাকে মারপিট করায় সে সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলে। এ সময় বিবস্ত্র হেদেনার শরীরে এসিড ছুঁড়ে ঝলসে দেয়। এসিডে হেদেনার স্তনের নিচ হতে হাটুসহ যৌনাঙ্গ পর্যন্ত ঝলসে যায়। ওইদিনই সংজ্ঞাহীন হেদেনাকে স্থানীয়রা ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য তাকে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সময়ের ব্যবধানে শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ওই হাসপাতাল থেকে গত ১৩ সেপ্টেম্বর ছাড়পত্র দেন। এ ব্যাপারে কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। কালিয়াকৈর থানা পুলিশ বিষয়টি সুন্দরগঞ্জ থানা পুুলিশকে অবহিত করে। সুন্দরগঞ্জ পুলিশ গত ১৪ সেপ্টেম্বর মাহবুবকে গ্রেফতার করে গাইবান্ধা জেল হাজতে প্রেরণ করে। এদিকে, এসিডদগ্ধ হেদেনার সহায়-সম্বলহীন অসহায় পিতা গোলাম মোস্তফা অর্থাভাবে মেয়ের উন্নত চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে ব্যর্থ। ফলে এসিডের অসহনীয় জ্বালা-যন্ত্রণা নিয়ে হেদেনা তার পিত্রালয়ে বিনা চিকিৎসায় ধুকে-ধুকে মৃত্যু মুখে ধাবিত হচ্ছে। দারিদ্র পিতা পাষন্ড স্বামী মাহবুব-এর দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তিসহ মেয়ের জীবন বাঁচাতে সমাজের সর্বস্তরের দানশীল বিত্তবানদের নিকট অর্থ সহায়তাসহ সরকারের প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।