প্রয়োজনীয় টাকা জমা দেয়ার পরও এবার প্রায় এক হাজার ব্যক্তির হজ্বে যাওয়া এখনো অনিশ্চিত। বিভিন্ন এজেন্সির কাছে টাকা ও পাসপোর্ট জমা দিলেও এখনো পর্যন্ত তারা তাদের ভিসাসহ পাসপোর্ট ও এয়ার টিকিট হাতে পাননি। জানা গেছে- সংশ্লিষ্ট হজ্ব এজেন্সির কাফেলা লিডার এই ব্যক্তিদের কিছু না জানিয়েই ইতিমধ্যে সৌদি আরব পাড়ি দিয়েছেন। এদিকে, চলতি বছরের হজ্বযাত্রী পরিবহনের শেষ ফ্লাইটটি আগামী মঙ্গলবার ছেড়ে যাচ্ছে। অথচ এতগুলো মানুষ হজ্বে যেতে পারবে কি না তা এখনো ফয়সালা হয়নি।
সূত্র জানায়, ধর্ম মন্ত্রণালয় লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রে হজ্ব এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশেন অব বাংলাদেশের (হাব) সুপারিশ অগ্রাহ্য করে অনভিজ্ঞ লোকদের লাইসেন্স প্রদান করে। আর এসব নতুন এজেন্সির মাধ্যমেই হজ্বযাত্রীরা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হন। বিষয়টি নিয়ে পত্রপত্রিকায় ব্যাপক লেখালেখি হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি। তবে এমনও হজ্ব এজেন্সি রয়েছে যারা সার্বক্ষণিক হাজীদের দেখভাল করে থাকে। যাদের কাছে বাণিজ্যিক স্বার্থের চেয়ে ধর্মীয় মূল্যবোধটিই বেশি প্রাধান্য পায়। এদিকে, আগামী মঙ্গলবার সর্বশেষ যাত্রী নিয়ে সৌদি এরাবিয়ান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট জেদ্দার উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়ে যাবে। এরপর আর কোন যাত্রীর চলতি বছর হজ্ব পালনের সুযোগ থাকছে না। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের শেষ হজ্ব ফ্লাইট জেদ্দা যাত্রা করবে আগামী রবিবার।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর ঢাকাস্থ সৌদী দূতাবাসও হজ্বযাত্রীদের ভিসা প্রদানের কাজ সম্পন্ন করেছে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে এবারের পবিত্র হজ্ব পালিত হবে ৪ অক্টোবর। হাজীদের ফিরতি ফ্লাইট ৮ অক্টোবর শুরু হয়ে ৭ নভেম্বর শেষ হবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে ৯৮ হাজার ৬৮৩ জন পবিত্র হজ্ব পালনের জন্য আবেদন করেন। এরমধ্যে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৮১ হাজার ৩৯১ জন জেদ্দা হয়ে মক্কা ও মদিনায় পৌঁছেছেন। গতকাল পর্যন্ত ২শ ফ্লাইটে বাংলাদেশি হজ্বযাত্রী পরিবহন করা হয়েছে। এরমধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ১০৯টি এবং সৌদি এরাবিয়ান এয়ারলাইন্স ৯১টি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে। এ বছর সৌদি আরবে হজ্ব পালনে গিয়ে বাংলাদেশের ২২ হজ্বযাত্রী মৃত্যুবরণ করেছেন। এরমধ্যে ১৭ জন পুরুষ ও ৫ জন মহিলা। মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে মক্কায় ১৬ জন, মদিনায় ৫ জন এবং জেদ্দায় মারা গেছেন ১ জন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর থেকে সৌদি ধর্ম ও হজ্ব মন্ত্রণালয় তাদের সকল কার্যক্রম ডিজিটাল পদ্ধতিতে রূপান্তর করেছে। ভিসা প্রদান থেকে শুরু করে বারকোড প্রদান এবং এজেন্সিগুলোর সার্বিক কার্যক্রম কম্পিউটারাইজড করেছে। বাংলাদেশ এ পদ্ধতির সাথে সমন্বয় করতে সময় লাগায় শুরু থেকেই জটিলতা দেখা দেয়; কিন্তু বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয় ও সৌদি হজ্ব মন্ত্রণালয়ের মধ্যে বৈঠকে সেই সমস্যার সমাধান করা হয়। তবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স হজ্ব যাত্রী পরিবহনে নানা রকম জটিলতা তৈরি করায় যাত্রীরা অন্য এয়ার লাইন্সের দিকে ঝুঁকে পড়ে।