সংগীতে ক্যারিয়ারের শুরুতেই নিজের গানের মাধ্যমে ব্যাপক সফলতা পান আসিফ আকবর। এরপর অডিও ইন্ডাস্ট্রিতে টানা নিজের সফলতা দিয়ে শীর্ষ স্থানটি ধরে রেখেছেন দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর। এ সময় অসংখ্য জনপ্রিয় গান তিনি উপহার দিয়েছেন শ্রোতাদের। হিসাব কষলে অতীতে অল্প সময়ে এতগুলো হিট-সুপারহিট গান খুব কমসংখ্যক শিল্পীই দিতে পেরেছেন। শ্রোতাদের কাছ থেকেই তারুণ্যের প্রতীক, গোল্ডেন ভয়েজ অব কান্ট্রি, অডিও যুবরাজ, নাম্বার ওয়ান কিংবা ওয়ান্ড অ্যান্ড অনলিসহ অনেক খেতাব পেয়েছেন তিনি। তবে মাঝে গানে একটা দীর্ঘ সময়ের বিরতিতে যান আসিফ আকবর। পাইরেসি, ইন্টারনেটে ফ্রি ডাউনলোড, সিনিয়র শিল্পীদের সঙ্গে অডিও প্রযোজকদের দূরত্বের সঙ্গে সঙ্গে আসিফ আকবরের সাময়িক প্রস্থানে বেশ চাপের মুখে পড়ে অডিও ইন্ডাস্ট্রি। কারণ টানা এতটা বছর আসিফ আকবর অডিও ইন্ডাস্ট্রির চাকা ঘুরাতে অন্যতম একটি ভূমিকা রেখেছিলেন। তার পরও শ্রোতাদের ভালবাসার কারণে আবারও অডিও ইন্ডাস্ট্রিতে ফেরেন এ অডিও যুবরাজ। এসেই নিজের কারিশমা দেখান। ‘এক্স প্রেম’ অ্যালবামের মাধ্যমে আবারও ব্যবসা সফলতায় রেকর্ড গড়েন তিনি। ঈদ মওসুমে মুক্তি পেয়ে আসিফের এ অ্যালবামটি ফিজিক্যালি বিক্রি হয় প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। এদিকে গত রোজার ঈদেও আসিফের নতুন একক অ্যালবাম ‘জানরে’ প্রকাশ হয়ে ভাল সফলতা অর্জন করেছে। এ অ্যালবামের ৬টি গান প্রকাশ হয়েছিল তখন। ডিজিটালি প্রকাশ হয়ে গানগুলো রেকর্ড পরিমাণ ডাউনলোড হয়েছে। আসছে ঈদেও ভক্ত-শ্রোতা-দর্শকদের নিরাশ করছেন না আসিফ। এবার ঈদে ভিন্নধর্মী চমক নিয়ে আসছেন এ শীর্ষ সংগীত তারকা। নিজের সফলতম ক্যারিয়ারে কখনই মিউজিক ভিডিওর প্রতি তেমন আগ্রহ ছিল না তার। তবে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এবার দর্শক ঈদকে উপলক্ষ করে পেয়েছেন আসিফের তিন তিনটি মিউজিক ভিডিও। সম্প্রতি এ মিউজিক ভিডিওগুলো প্রকাশ করা হয়েছে আর্ব এন্টারটেইনমেন্টের ব্যানারে। গানগুলো হলো ‘প্রতিশোধ (‘এক্স প্রেম’), ‘আঁকাশের চাঁদ’, ‘জানরে’ (জানরে)। ভিডিও ছাড়াও ‘জানরে’ অ্যালবামের আরও দুটি নতুন অডিও গানও এরই মধ্যে ঈদ উপলক্ষে প্রকাশ পেয়েছে। গানগুলো হলো ‘আড্ডা’ ও ‘শুরু থেকে’। এর মধ্য দিয়ে ‘জানরে’ অ্যালবামের আটটি গান প্রকাশ হলো। আসিফ আকবরের এ নতুন তিন মিউজিক ভিডিও নির্মাণ করেছেন ইয়ামিন এলান। এ বিষয়ে আসিফ আকবর বলেন, মডেল-অভিনেত্রী তানিয়া আহমেদ আপা ২০০৪-এর দিকে আমার গানের মিউজিক ভিডিও করেছিলেন। সেগুলো ছিল প্রপার ভিডিও। সবাই অনেক পছন্দ করেছিল। পরে যে ভিডিওগুলো প্রকাশ পেয়েছে সেগুলো ছিল কোম্পানির প্রমোশনাল। শুধু প্রচারণার জন্যই তৈরি হয়েছিল। আমার কোন পছন্দ, ইচ্ছে অথবা উদ্যোগ ছিল না। কিন্তু আমি মনে করি মিউজিক ভিডিও ব্যাপারটা আলাদা। যদি সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শ্রোতা-দর্শকদের জন্য মিউজিক ভিডিও করতেই হয়, তবে ভালভাবেই করা উচিত। প্রপার না হলে কোন লাভ নেই। আমি যে তিনটি মিউজিক ভিডিও করেছি সেগুলোর মানের বিষয়টিতে অনেক খেয়াল রেখেছি। এটা সবাই দেখলেই বুঝতে পারবে। ভিডিওটি দেখলেই আমার মনে হয় বিভিন্ন চমক চোখে পড়বে। এদিকে তিন মাস অন্তর অন্তর নতুন গান ও মিউজিক ভিডিও প্রকাশের চিন্তাভাবনাও করছেন আসিফ আকবর। এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের শ্রোতারা সব সময়ই গানপাগল। আমি যেখানেই যাই সবাই নতুন গানের কথা বলেন। অডিও ইন্ডাস্ট্রির দুঃসময় যাচ্ছে এটা ঠিক। তবে এ ক্ষেত্রে আমাদের প্রযুক্তির সহায়তা নিতে হবে। প্রযুক্তির মাধ্যমেই শ্রোতা দর্শকদের গান শোনানোর ও দেখানোর ব্যবস্থাটা করতে হবে। আমি সময়ের সঙ্গে আগেও চলেছি, এখনও চলছি। শ্রোতারা আমাকে কি পরিমাণ ভালবাসেন সেটা নতুন গান প্রকাশ হলেই বুঝতে পারি। এটাই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।