দেশের করদাতাদের জন্য সুখবর আসছে। ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে অনলাইনেই আয়কর রিটার্ন জমা দিতে পারবেন করদাতারা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন আজ রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে করদাতাদের এ সুখবর দেন।
এনবিআরের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশে মাত্র ১৮ লাখ মানুষ করের আওতায় আছেন। কিন্তু কর দেওয়ার যোগ্য লোকের সংখ্যা কমপক্ষে ৬০ লাখ। প্রত্যক্ষ কর-ব্যবস্থাকে আধুনিক করে করদাতাদের সংখ্যা বাড়াতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর চেয়ারম্যান আরও বলেন, এত দিন শুধু রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ও জনতা ব্যাংকের মাধ্যমেই আয়কর রিটার্নের টাকা জমা দেওয়া যেত। ডিজিটাল পদ্ধতি বাস্তবায়িত হয়ে গেলে করদাতারা দেশের যেকোনো স্থানের যেকোনো বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে আয়কর রিটার্নের টাকা জমা দিতে পারবেন। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেও আয়করের টাকা জমা দেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ঋণ সহায়তায় এই প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ পেয়েছে ভিয়েতনামের এফপিটি ইনফরমেশন সিস্টেম করপোরেশন। প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে গত ২৪ আগস্ট এ বিষয়ক একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে এনবিআর। প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫১ কোটি টাকা।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এনবিআরের চেয়ারম্যান বলেন, ২০১৫ সালের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ করা হবে। প্রকল্পের কার্যকারিতা যাচাইয়ে পাইলট প্রকল্পের কাজ শুরু করা হবে আগামী ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জুলাইয়ের মধ্যে। তিন মাস ধরে ঢাকা, চট্টগ্রামের মতো বড় শহরগুলোতে পাইলট প্রকল্পের কাজ চলবে। পাইলট প্রকল্পে বড় ধরনের কোনো সমস্যা না হলে ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে করদাতারা এ সুবিধা পাবেন।
প্রকল্প পরিচালক কালিপদ হালদার বলেন, এ প্রকল্প পুরো বাস্তবায়িত হলে ঘরে বসেই করদাতারা নিজেদের রিটার্ন পূরণ ও দাখিল করতে পারবেন। এর পাশাপাশি দেশের সব কর কার্যালয় ডিজিটাল আন্ত সংযোগের আওতায় আসবে।
আয়কর পদ্ধতি ডিজিটাল হয়ে গেলে পুরোনো পদ্ধতিতে আয়কর জমা দেওয়ার সুযোগ থাকবে কি না?—এমন প্রশ্নের জবাবে এনবিআরের চেয়ারম্যান বলেন, ‘পুরো ডিজিটাল হয়ে গেলে আবার অ্যানালগে আমরা কেন যাব?’
সংবাদ সম্মেলনে এনবিআরের কর্মকর্তারা ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত গুয়েন কুয়াং থুক, প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান ভিয়েতনামের এফপিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান দু কাও বাও।