1. ccadminrafi@gmail.com : Writer Admin : Writer Admin
  2. 123junayedahmed@gmail.com : জুনায়েদ আহমেদ, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর : জুনায়েদ আহমেদ, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর
  3. swadesh.tv24@gmail.com : Newsdesk ,স্বদেশ নিউজ২৪.কম : Newsdesk ,স্বদেশ নিউজ২৪.কম
  4. swadeshnews24@gmail.com : নিউজ ডেস্ক, স্বদেশ নিউজ২৪.কম, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর: : নিউজ ডেস্ক, স্বদেশ নিউজ২৪.কম, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর:
  5. hamim_ovi@gmail.com : Rj Rafi, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান : Rj Rafi, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান
  6. skhshadi@gmail.com : শেখ সাদি, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান: : শেখ সাদি, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান:
  7. srahmanbd@gmail.com : এডমিন, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান : এডমিন, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান
  8. sumaiyaislamtisha19@gmail.com : তিশা, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান : তিশা, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান
কর্মক্ষম মানব সম্পদই এখন বাংলাদেশের বড় সম্পদ - Swadeshnews24.com
শিরোনাম
গোবিন্দগঞ্জে অটোচালক দুলা হত্যার মূল আসামি আটক চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু পলাশবাড়ীতে উপজেলা নির্বাচনে অনলাইন মনোনয়নপত্র দাখিলের বিষয়ে সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিলেই বিএনপি বলে বিরোধীদল দমন’ এবার বুবলী-শাকিবের ‘কোয়ালিটি টাইম’ নিয়ে মুখ খুললেন অপু বাংলাদেশের সফলতা চোখে পড়ার মতো: সিপিডির রেহমান সোবহান চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে যা বললেন নিপুণ তালিকা দিতে না পারলে ফখরুলকে ক্ষমা চাইতে বললেন ওবায়দুল কাদের প্রকাশিত হলো দিদারের ‘বৈশাখ এলো রে এলো বৈশাখ’ আ.লীগের মতো ককটেল পার্টিতে বিশ্বাসী নয় বিএনপি: রিজভী হৃদয় খানের সঙ্গে জুটি ন্যান্সিকন্যা রোদেলার শাকিব ছাড়া দ্বিতীয় কোনো পুরুষকে ভাবতে পারি না: বুবলী শাকিবের এমন সময় আমাদেরও ছিল: ওমর সানী কত টাকা সালামি পেলেন জায়েদ খান, দিতে হলো কত লাখ? শাকিব খানের সঙ্গে বিয়ে,দেনমোহর, বিচ্ছেদসহ নানা বিষয় নিয়ে মুখ খুললেন বুবলী

কর্মক্ষম মানব সম্পদই এখন বাংলাদেশের বড় সম্পদ

  • Update Time : শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৪
  • ৪১৮ Time View

bangladeshi_youth-640pxআমি আমার অনেক লেখায়ই বলেছি আমি নিরাশাবাদীদের দলে নই। আমি একজন স্বপ্ন বিলাসি মানুষ। নিজের পাশাপাশি বাংলাদেশকে নিয়েও আমি অনেক অনেক স্বপ্ন দেখি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস আমি দেখে না যেতে পারলেও আমার পরবর্তী প্রজন্ম বাংলাদেশকে দেখবে উচ্চআয়ের দেশ হিসেবে। কেননা, কর্মক্ষম বিপুল সংখ্যক জনসম্পদই বাংলাদেশের বড় সম্পদ ও পূঁজি আর এই স্বপ্ন ও আকাঙ্খার আসনে মূল চালিকাশক্তি হলো আমাদের দেশের মেধাবী ও পরিশ্রমী বিপুল যুব সমাজ। এ কথা বলতে এখন আর কোন সন্দেহ নেই যে দেশ যেভাবে চলছে তাতে ২০৩০ থেকে ৩৫ খ্রীঃ মধ্যে আমাদের দেশ তার অভিষ্ঠ লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবে। এটা আমার নিজের কথা নয়; বাংলাদেশকে নিয়ে এমন ভবিষ্যৎবাণী করেছে বিশ্বের বাঘা বাঘা অর্থনীতিবিদ, প্রভাবশালী গণমাধ্যম, বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবিসহ প্রভাবশালী দাতা সংস্থা। তাই এমন আশাবাদ ও স্বপ্ন থেকেই আমি আজ আমার এই এই নিবন্ধের নাম রেখেছি ‘কর্মক্ষম মানব সম্পদই বাংলাদেশের বড় সম্পদ’। প্রিয় পাঠক আসুন এ পর্যায়ে বিশ্বের খ্যাতিমান ও বরেণ্য অর্থনীতিবিদ, প্রভাবশালী গণমাধ্যম, বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবিসহ বিভিন্ন প্রভাবশালী দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের বাংলাদেশকে নিয়ে উচ্চাশার আলোকে আলোচনার ভেতরে প্রবেশ করা যাক।

সিআইএ- দ্যা ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক এর মতে: যখন কোন দেশের কর্মক্ষম লোকের সংখ্যা আনুপাতিক হারে সবচেয়ে বেশি থাকে তখন একটি দেশ ডেমোগ্রাফিক বোনাসে প্রবেশ করে। ২০১২ সালে আমাদের বাংলাদেশ এ ডেমোগ্রাফিক বোনাস-এ প্রবেশ করেছে। বর্তমানে বাংলাদেশের জনসংখ্যার ৪০ শতাংশের বয়স ১৮ বছরের নিচে। ২০১২ সালে বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৬০ মিলিয়ন বা ১৬ কোটি; এই হিসাবে প্রায় ৭ কোটি জনগণ ১৮ বছর এর নিচে। উন্নত এবং উন্নয়নশীল খুব কম দেশই এই বিশাল কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী পেয়েছে। চীনে বিপুল জনগোষ্ঠী থাকলেও ২০১২ সালে দেশটি ডেমোগ্রাফিক বোনাস থেকে বের হয়ে গেছে, অর্থ্যাৎ দেশটিতে এখন নির্ভরশীল জনগনের সংখ্যা বেশি। এই কথা খাটে থাইল্যান্ডসহ বিশ্বের বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশে বেলাও। আর উন্নত বিশ্বের কথা বলতে গেলে সেখানে দিনে দিনে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা কমে নির্ভরশীল মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। খুব বেশি দিন নয় সে সব উন্নত দেশে আগামী ৫০ বছরের মধ্যে কর্মক্ষম মানব সম্পদের পরিমান আশঙ্কাজনক হারে কমে যাবে। অথচ বর্তমানে আমাদের দেশে কর্মক্ষম লোকের সংখ্যা বেশি, নির্ভরশীল মানুষের সংখ্যা অনেক কমে যাবে এটা আমাদের জন্য খুবই ইতিবাচক দিক। বাংলাদেশ জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বে অষ্টম এবং এশিয়ার মধ্যে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে। বর্তমানে দেশে বিপুলসংখ্যক কর্মক্ষম মানুষ রয়েছে। এ অবস্থা আগামী ৩০ থেকে ৪০ বছর পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। সাম্প্রতিককালে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড আহরণের সুযোগে বাংলাদেশের অবস্থান অত্যন্ত সুসংহত। এর একটি বড় অঙ্ক যাতে শতকরা ৬৩ ভাগ লোক অর্থাৎ প্রায় দশ কোটি কর্মক্ষম বয়সসীমায় অবস্থান করছেন। প্রায় দেড়শত বছর পর এমন সুবর্ণসুযোগ এসেছে বলে ১৩ অক্টোবর এটিএন নিউজের এক্সট্রা আওয়ার্স-এর আলোচনায় দেশের প্রথম সারির অর্থনীতিবিদরা মন্তব্য করেছেন। তাদের মতে আমদানী নির্ভর বাংলাদেশে যত বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের প্রয়োজন হয় তার একটি বড় অংশ আসে আমাদের প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছ থেকে। ২০১২ সালে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশের শ্রমিকেরা প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছেন। প্রতিবছর ১০ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হবে এটা ধরে নিলে ২০১৫ সাল নাগাদ সেটা হবে প্রায় ১৯ বিলিয়ন ইউএস ডলারের কাছাকাছি। যা আমাদের কর্মক্ষম মানবসম্পদেরই অবদান।

সেই কারণেই পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘উন্নয়নের জন্য মূল জিনিস হচ্ছে দেশের মানুষ। মানব সম্পদ কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটাতে হবে এ মানুষ যখন বেশি বেড়ে যায় তখন দায় সৃষ্টি করে আবার কমে গেলেও দায় সৃষ্টি করে। কাজেই আমাদের ভাবতে হবে- উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে কতটুকু জনসংখ্যা দরকার। তিনি বলেন, মানব সম্পদ কাজে লাগিয়ে আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটাতে হবে। সম্প্রতি শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে জনসংখ্যা স্থিতিশীলতার প্রয়োজনীয়তার ওপর আয়োজিত এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সম্মেলনে উপস্থিত বক্তরা বলেন,‘ বিশ্বে এখন বৃদ্ধ লোকের সংখ্যা বাড়ছে। অন্যদিকে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। আমরা এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জনশক্তি রফতানি করতে পারি।’

বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যমে কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সাফল্য ও সম্ভাবনা নিয়ে বেশ কয়েকটি সংবাদ ও বিশ্লেষণ প্রকাশিত হয়েছে যা বাংলাদেশের মানুষকে বেশ আনন্দিত ও উজ্জীবিত করবে। ২০১২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারী জাতি সংঘের অর্থনীতিবিদ ডঃ রব ভস বিশ্বসংস্থার মহাসচিবের পক্ষে ২০১১ সালে বিশ্ব অর্থনীতির উপর তার প্রতিবেদন পেশ করতে গিয়ে বলেন বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশ হচ্ছে একটি নক্ষত্রের মতো। যেখানে উন্নত বিশ্ব বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ২% এর উপরে তুলতে হিমসিম খাচ্ছিল সেখানে বাংলাদেশ তার প্রবৃদ্ধি ৬.৬%এ ধরে রাখতে পেরেছে। ডঃ ভস তার মন্তব্যে আরো বলেন বাংলাদেশ তার প্রবৃদ্ধির হারে এই গতি ধরে রাখতে পারলে ২০১২ ও ২০১৩ সালে যথাক্রমে তা ৬.৭% ও ৭% এ উন্নীত করতে পারবে। তিনি আরো বলেন বাংলাদেশ এমন একটি সময়ে এই প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হলো যখন পশ্চিমের শিল্পোন্নত দেশ সমূহ অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে উঠতে আপ্রাণ চেষ্টা করছে।’

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সাফল্যের বছরের সর্বশেষ প্রশংসাপত্রটি দিয়েছে লন্ডন হতে প্রকাশিত গার্ডিয়ান পত্রিকা। গার্ডিয়ান যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক অর্থনৈতিক গবেষণা সংস্থা এবং অডিটিং ফাম প্রাইসওয়াটার হাউজ কূপারসের এক গবেষণা কর্মের বরাত দিয়ে উন্নয়নশীল বিশ্বের কয়েকটি দেশের উপর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। যাতে বাংলাদেশের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করা হয়েছে। সত্তরের দশকে যেসব দেশ বা অর্থনীতবিদরা বাংলাদেশ নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করতেন; বিদ্রুপ করতেন যে বাংলাদেশ হচ্ছে ‘বটমলেজ বাস্কেট’। তারাই এখন আগবাড়িয়ে বাংলাদেশের প্রশংসা করছেন। আমেরিকার নিক্সন প্রশাসনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরী কিসিঞ্জার বঙ্গবন্ধু সরকারের আমলে বাংলাদেশ সম্পর্কে এই মন্তব্য করে বাংলাদেশ বিরোধীদের হাতে সমালোচনার একটি ধারালো তুলে দিয়েছিলেন।

কয়েক সপ্তাহ আগে বিশ্ব ব্যাংক তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের গত বছরের অর্জনকে একটি রহস্যজনক বিষ্ময় হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। গত নভেম্বরের ১৩ তারিখে প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বাংলাদেশ প্রতি এক দশকে তার প্রবৃদ্ধির হার গড়ে একশতাংশ করে বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছে। সত্তরের দশকে যা ছিল ৩% তা বর্তমানে বাংলাদেশ ৬% এর উপর ধরে রাখতে পেরেছে। তাদের প্রতিবেদনে তারা এও উল্লেখ করেছে কোন কোন দশকে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির হার ১.৭% পর্যন্ত হয়েছে। বাংলাদেশের এই বিষ্ময়কর সাফল্যের পিছনে বিশ্বব্যাংক কয়েকটি কারণকে সনাক্ত করেছে যার মধ্যে আছে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার নিয়ন্ত্রণ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণে সাফল্য, ব্যষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা, শিক্ষার বিস্তার এবং উদার অর্থনৈতিক নীতি। বিশ্বব্যাংক তাদের প্রতিবেদনে এও বলেছে বাংলাদেশ যদি তদের স্বাধীনতার স্বর্ণ জয়ন্তীর বছর ২০২১ সালের মধ্যে প্রত্যাশিত মধ্যম আয়ের দেশে পরিনত হতে চায় তা হলে এই প্রবৃদ্ধির হার ৭.৫%-৮% এর মধ্যে নিয়ে যেতে হবে যা করতে হলে বর্তমানেও প্রবৃদ্ধির হার ধরে রাখতে হবে।

বৎসরের শেষ নাগাদ গত ১৭ই ডিসেম্বর বিশ্ব ব্যাংকের বাংলাদেশ সম্পর্কে মন্তব্যের ধারাবাহিকতায় আন্তর্জাতিক আর্থিক সামর্থ মূল্যায়ন সংস্থা মুডী বলেছে বাংলাদেশের দেনা পরিশোধের স্থিতিশীলতা বর্তমানে যে কোন সময়ের চাইতে সন্তোষজনক। তবে তাজরীন গার্মেন্টস কারখানায় আগুন লাগার ঘটনা এবং পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে জটিলতা দেশটিকে কিছুটা হলেও অস্বস্তির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। মুডী জ্বালানি সহ আরো কিছু কিছু ক্ষেত্রে সরকারি ভর্তূকি কমানোর পদক্ষেপকে প্রশংসা করে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র দেশ যেটি চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত প্রদর্শন করতে সক্ষম হয়েছে। তবে সংস্থাটি এই বলে সতর্ক করে দিয়েছে যে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির এই গতি ধরে রাখা কিছুটা চাপের মুখে পরতে পারে যদি না দেশটির সরকার শ্রমিক অসন্তোষ ও রাজনৈতিক অস্থিরতাকে সফলভাবে মোকাবেলা করতে পারে।

অর্থনীতিতে নোবেল বিজয়ী প্রফেসর অমর্ত সেন বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও এর সামাজিক রূপান্তরকে চমত্কার এবং দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোত্তম বলে উল্লেখ করেছেন। পাকিস্তানের ড. মাহবুবুল হক বাংলাদেশের মানব উন্নয়নের অগ্রগতিকে বিস্ময়কর বলে উল্লেখ করেছেন। বিশ্ববিখ্যাত ঋণমান নির্ণয়কারী স্ট্যান্ডার্ড এন্ড পুওর পর পর তিন বছর বাংলাদেশকে পাকিস্তানের তিন ধাপ উপরে, ভারতের এক ধাপ নিচে এবং ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম ও ফিলিপিন্স-এর সমপর্যায়ে বলে উল্লেখ করেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি ও ইহার সামাজিক রূপান্তর ঈর্ষণীয় সাফল্যের দাবিদার। দেশের বর্তমান বার্ষিক সামস্টিক আয় ১০৭ বিলিয়ন ডলার। মাথাপিছু আয় প্রায় ১০০০ ডলার, গড় আয়ু ৬৯ বছর।

অর্থনীতিবিদ ও অনেক বিশ্লেষক বলেছেন বাংলাদেশের উন্নয়নের এ পদযাত্রায় কৃষক ও কৃষিখাতের অবদান অনেক। বাংলাদেশের কৃষকদের কঠোর কায়িক পরিশ্রম, সরকারের অত্যন্ত উদারনীতি ভর্তুকি মূল্যে যথাসময়ে বীজ, সার ও কৃষিঋণসহ অন্যান্য উপাদান প্রাপ্তি ও সরবরাহ। শহুরে নাগরিকদের সাময়িক অসুবিধা সৃষ্টি করে সহনীয় লোডশেডিং এর মাধ্যমে গ্রামে-গ্রামে কৃষিতে সেচের জন্য অব্যাহত বিদ্যুৎ সরবরাহ করার ফলে বাংলাদেশ এখন খাদ্যে সয়ংসম্পূর্ণতা আর্জন করে চাল রপ্তানীর দেশে পরিনত হয়েছে। খাদ্যশস্য উৎপাদন সংক্রান্ত ছোট্ট একটি তথ্যের মাধ্যমেই এর তুলানামূলক বিচার করা যায়। ১৯৭২ সালের যেখানে বিপুল আবাদী জমি চাষাবাদ করে সাড়ে সাত কোটি মানুষের জন্যে এক কোটি দশ লক্ষ টন খাদ্য উত্পাদন করতে হিমসীম খেত সেখানে ২০১৪ সালে এসে শতকরা ২০ ভাগ বা তারও বেশী কৃষিজমি কমে গেলেও ১৬ কোটি মানুষের বর্তমান বাংলাদেশে উত্পাদিত হচ্ছে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টন খাদ্যশস্য। এটা সম্ভব হয়েছে আমাদের দেশের বিপুলসংখ্যক কর্মক্ষম জনশক্তির উদ্যোগ, পরিশ্রম, কৃষিজীবী ও সরকারের কৃষিবান্ধব উদার নীতি এবং জমির উত্পাদনশীলতা বৃদ্ধির মাধ্যমে।

আমার এ নিবন্ধ পড়ে অনেকেই নাক ছিটকাবেন। কেউ কেউ আবার গায়ে সরকারের দালালের আস্তরণও লাগিয়ে দিতে পারেন। এই ভেবে কষ্ট পাই আমাদের দেশে যেন নিরাশাবাদী ও নেতিবাচক ধ্যান-ধারণার মানুষের সংখ্যাই বেশি। আর বিরোধী রাজনীতিতো সেই নেতিবাচকতার পুরনো বৃত্তেই ঘুরছে। তবে আমাদের দেশের তরুণ ও যুব সমাজের মাঝে নেতিবাচক চিন্তা-চেতনার মানুষের সংখ্যা অনেক কম বলেই আমার প্রেডিকটেশন। তারাই এখন আমাদের দেশের অগ্রগতি চালিকাশক্তি কাজেই তাদের সামনে বিদ্যমান সুযোগ সুবিধার পাশাপাশি আউটসোর্সিং ও ফ্রিল্যান্সিং বিশ্ববাজারের জানালাকে উন্মোক্ত করতে হবে। বিশ্ব অর্থনীতিতে এখন এই দুইটি শব্দ খুবই জনপ্রিয়। তরুণ ও যুবসমাজের মুখে এ কথাটি প্রায়ই শোনা যায়। কিন্তু অনেকেরই আবার এ বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা নেই। আউটসোর্সিং হলো যখন কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তাঁর নিজের বা প্রতিষ্ঠানের কাজ ইন-হাউজ না করে বাইরের কাউকে দিয়ে করিয়ে নেয় তখন সেটাকে বলে আউটসোর্সিং। আর ফ্রিল্যান্সিং হচ্ছে যখন কোন ব্যক্তি কোন নির্দিষ্ঠ প্রতিষ্ঠানে কাজ না করে চুক্তিভিত্তিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করে থাকেন তখন তাঁকে ফ্রিল্যান্সার বলা হয়ে থাকে। বিশ্ব অর্থনীতিতে আউটসোর্সিং এখন শিল্পের পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। বিভিন্ন বিভিন্ন মাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা গেছে ২০১৫ সালে সর্বমোট ৪৪৩ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণের কাজ আউটসোর্স হবে। বাংলাদেশ যদি এর ১০% মার্কেট শেয়ার ধরতে পারে তাহলে সেটা হবে প্রায় প্রায় ৪৫ বিলিয়ন ইউএস ডলারের সমপরিমান আর ৫% মার্কেট শেয়ার ধরতে পাররে সেটা হবে প্রায় ২৩ বিলিয়ন ইউএস ডলার যা আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের বর্তমানের সবচেয়ে বড় খাতকেও ডিঙ্গিয়ে যেতে পারবে। বাংলাদেশকে তার প্রত্যাশিত উন্নয়নের দিকে নিয়ে যেতে হলে মানব সম্পদ উন্নয়নের কোন বিকল্প নেই। এক সময় মনে করা হতো জনসংখ্যা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সমস্যা। কিন্তু একদিন এ বিপুল কর্মক্ষম জনসংখ্যাই আমাদের সম্পদে পরিনত হবে তা কে জানতো। বিশ্বায়নের এই যুগে মানব সম্পদই এখন আমাদের বড় সম্পদ এ কথা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।


Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2020 SwadeshNews24
Site Customized By NewsTech.Com