– রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কে এম শফিউল ইসলাম নিলনকে (৩৯) কুপিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করে ‘আনসার আল ইসলাম-২’ নামের একটি সংগঠন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছে।
গতকাল শনিবার হত্যাকাণ্ডের ঘণ্টাখানেকের মাঝেই সংগঠনটি তাদের ফেসবুক পেইজে স্ট্যাটাস দেয়। এতে তারা লেখে-
আল্লাহু আকবার !!!
আল্লাহু আকবার !!!
আল্লাহু আকবার !!!
আমাদের মুজাহিদীনরা আজকে রাজশাহীতে এক মুরতাদকে কতল করেছেন যে তার ডিপার্টমেন্টে ও ক্লাসে বোরকা পরা নিষিদ্ধ করেছিল।
আল্লাহর ইচ্ছায়, আল্লাহর শক্তিতে ও আল্লাহর অনুমতিতে মুজাহিদীনরা আজকে এই মুরতাদকে কতল করেছেন।
ইসলাম বিরোধী সকল নাস্তিক-মুরতাদ সাবধান !!!
এর কিছু পরই দৈনিক সংগ্রামের একটি সংবাদের উদ্ধৃতি দিয়ে অপর এক স্ট্যাটাসে বলা হয়-
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে দাড়ি কাঁটা ও পাঞ্জাবি-পায়জামা না পরার শর্তের শিক্ষক নিয়োগের পর ছাত্রীদের বোরকা পরে ক্লাস না করার নির্দেশ দিয়েছে বিভাগীয় সভাপতি ড. এ কে এম শফিউল ইসলাম। – দৈনিক সংগ্রাম, শনিবার ০৩ এপ্রিল ২০১০
আজ এই মুরতাদ তার যথাযথ প্রতিদান পেয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ।
রোববার ভোর ৫টা ৪৭ মিনিটেও এপ্রসঙ্গে স্ট্যাটাস দেয় সংগঠনটি। এতে ড. এ কে এম শফিউল ইসলাম নিলনের ছবি আপলোড করে তাতে লাল কালিতে ক্রস চিহ্ন দিয়ে তারা লেখে-
এ কে এম শফিউল ইসলাম
অপরাধঃ এপ্রিল ২০১০
শাস্তি প্রদানঃ নভেম্বর ২০১৪
We Don’t Forget. Insha’Allah we will NOT Forget Others.
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে এধরণের কোনো সংগঠনের নাম এর আগে শোনা যায়নি। সংগঠনটির ফেসবুক পেইজও খোলা হয়েছে গতকাল শনিবার হত্যাকাণ্ডের প্রায় সমসাময়িক সময়ে।
এরপরই সেখানে শুধুমাত্র দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার কয়েকটি সংবাদের ভিত্তিতে স্ট্যাটাসগুলো দেওয়া হয়।
ফেসবুক পেইজটির কাভার ফটোতে পাঁচজনের ছবি দেওয়া আছে। এর মাঝে ব্লগার রাজিব, আশরাফুল আলম এবং এ কে এম শফিউল ইসলামের ছবিতে লাল ক্রস এঁকে লেখা হয়েছে- ‘খতম’। এবার তাদের হিটলিস্টে আছেন- আসিফ মহিউদ্দিন এবং রাকিব মামুন। ছবিতে তারা লিখে রেখেছে- ‘প্রথম প্রচেষ্টা সমাপ্ত, দ্বিতীয় প্রচেষ্টা আসছে’।
উল্লেখ্য, গতকাল শনিবার বিকাল ৩টার দিকে রাজশাহী মহানগরীর বিহাস এলাকায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কে এম শফিউল ইসলাম নিলনকে (৩৯) কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. মমতাজ বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের মাথা, ঘাড়সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম রয়েছে। তার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় জরুরি অস্ত্রোপচারের জন্য নিয়ে যাওয়ার পর তিনি মারা যান।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, উগ্রবাদী জঙ্গিগোষ্ঠীর কেউ এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে তা ফেসবুকের মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছে। বিষয়টি খুবই গুরুত্বের সঙ্গে দেখা দরকার।
এ বিষয়ে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন বলেন, এ নামের কোনো সংগঠন বাস্তবে আছে কি না, আমার জানা নেই। হয়তবা প্রকৃত রহস্য আড়াল করতে বা ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে হত্যাকারীরা নতুন এ কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। তবে বিষয়টি খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।