রুবেল আহম্মেদ,শার্শা প্রতিনিধি (যশোর): ভারত থেকে আমদানি করা ফলসহ বিভিন্ন খাদ্য দ্রব্যে ফরমালিন মিশ্রিত আছে কিনা তা পরীক্ষার কোন ব্যবস্থা নেই বেনাপোল বন্দরে। ফলে পরীক্ষা ছাড়ায় এসব খাদ্য দ্রব্য ভারত থেকে আমদানি পর তা দেশের অভ্যন্তরে অবাধে বাজার জাত হচ্ছে। এতে ফরমালিন আতঙ্কে রয়েছে ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা।
সরজমিনে বেনাপোল স্থলবন্দর পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিদিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে শতাধিক ট্রাক পিয়াজ,রসুন,পান,ঝাল,মরিচ,আদা ও গমসহ বিভিন্ন ধরনের পচনশীল খাদ্য দ্রব্য আমদানি হচ্ছে।
আমদানি হওয়া এসব পণ্য খাওয়ার উপযোগী কিনা তা পরীক্ষার জন্য বেনাপোল চেকপোষ্টে উদ্ভিদ সংগণিরোধ অফিস রয়েছে। সেখানে নাম মাত্র পরীক্ষার চালান পত্র দিয়ে আমদানি হওয়া খাদ্য দ্রব্য খালাসের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এসব খাদ্যে ফরমালিন মিশ্রিত আছে কিনা তা পরীক্ষার কোন যন্ত্রপাতি তাদের নেই।
বেনাপোল উদ্ভিদ সংগণিরোধ কেন্দ্রের উপ-পরিচালন আব্দুল ওয়াজেদ জানান, বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে আসা খাদ্য দ্রবে ফরমালিন থাকার যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে। কিন্তু ফরমালিন পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি চেয়ে একাধিকবার উর্দ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। কিন্তু আজও পর্যন্ত এসব যন্ত্রপাতি আমরা হাতে পায়নি। ফলে আমদানি হওয়া খাদ্য দ্রব্যে ফরমালিন আছে কিনা তা পরীক্ষা ছাড়ায় পণ্য চালান খালাসের অনুমতি পত্র দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে পচনশীল পণ্য ছাড়াও বেনাপোল বন্দর দিয়ে বিস্কুট,চকলেটসহ অন্যান্য খাদ্য দ্রব এবং শিল্পকারখানায় ব্যবহৃত কেমিক্যাল আমদানি হচ্ছে। কিন্তু এসব পণ্যের মান পরিক্ষার জন্য কোন ল্যাবরেটারী নেই বেনাপোল বন্দরে। গত ৭ বছর আগে বেনাপোল কাস্টমস হাউজে একটি ল্যাবরেটারী ভবন তৈরী করা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে যন্ত্রপাতি বরাদ্ধ না হওয়ায় অবশেষে গত বছর থেকে এ ভবনটি এখন কাস্টমস কর্মকর্তাদের অফিস রুম হিসাবে ব্যবহার হচ্ছে।
বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল হক জানান, কাচামাল ও খাদ্য দ্রব্যের মান পরীক্ষার জন্য ব্যবসায়ীদেরকে বেনাপোল বন্দর থেকে ৮৫ কিলোমিটার দূরে খুলনা যেতে হয়। সেখান থেকে রিপোর্ট হাতে পেতে এক সপ্তাহ থেকে শুরু করে অনেক সময় ১০ থেকে ১৫ দিন পর্যন্ত সময় লেগে যায়। এই দীর্ঘ সময় ধরে আমদানি পণ্য বেনাপোল বন্দরে আটকে পড়ে থাকে। এতে ট্রাক ডেমারেজ,গোডাউন ভাড়াসহ আনুসাঙ্গিক খরচ মেটাতে হিমসিম খেতে হয় ব্যবসায়ীদের। বেনাপোল কাস্টমস হাউজে ল্যাবরেটারীতে পরীক্ষার কার্যক্রম চালুর দাবী জানিয়ে আসলেও তা আমলে নিচ্ছেনা সংশিষ্টরা। ফলে দীর্ঘ দিন ধরে এ সমস্যার মোকাবেলা করতে হচ্ছে ভুক্তভুগী ব্যবসায়ীদের।
সমস্যার কথা স্বীকার করে বেনাপোল কাস্টমস হাউজের কমিশনার মাহাবুবুজ্জামান জানান, আমরা সংশিষ্ট মন্ত্রনালয়ে যখন বৈঠকে বসেছি প্রতিবারই এই সমস্যার কথা তুলে ধরেছি। এসময় সমস্যা সমাধানে আমাদের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আজও পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত হয়নি। তবে আমি আশাবাদী বেনাপোল বন্দরের গুরুত্ব বিবেচনা করে সরকার দ্রুত বেনাপোল কাস্টমসে ল্যাবরেটারী ভবন তৈরী পূর্বক এ সমস্যার সমাধান করবেন। #