রানা আহমেদ,নলডাঙ্গা (নাটোর)প্রতিনিধিঃ উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ আখের দানা গুড়ের হাট নাটোরের নলডাঙ্গায়। নলডাঙ্গা উপজেলার মাটি আখ চাষের জন্য উপযোগি হওয়ায় প্রায় সব মাঠে ব্যাপক আখ চাষ হয় । শীত শুরুর সাথে সাথে উপজেলার গ্রামে গ্রামে খেজুরের গুড়ের পাশাপাশি আখের গুড় তৈরির ধুম পড়ে গেছে । এ উপজেলার অধিকাংশ এলাকা নাটোর চিনি কল আওতায় হলেও সময় মত চিনি কল চালু না হওয়ায় আখ চাষিরা দ্রত আখ কেটে রবিশস্য চাষ করার জন্য আখ মাড়াই করে গুড় তৈরি করছে । প্রতি শনি ও মঙ্গলবার নলডাঙ্গার হাটে প্রায় কয়েক কোটি টাকার আখের দানা গুড় বেচাকেনা হয় ।দেশের বেশি ভাগ আখের দানা গুড়ের চাহিদা পুরণ করছে নলডাঙ্গার গুড় প্রস্তুত কারীরা ।আখ মাড়াই আশ্বিন থেকে শুরু হয়ে চলে চৈত্র মাস পযন্ত । এ সময় আখ চাষিরা নিজেরাই জমি থেকে আখ কেটে তা মাড়াই কল দিয়ে রস বের করে কড়াইয়ে জাল দিয়ে তৈরি হয় গুড় সেই গুড় মাটির কলায় সংরক্ষণ করে । প্রতি কলায় ৬০-৭৫ কেজি দানা গুড় রাখা যায়। গুড়ের রং ভাল করতে চুন,হায়ডোজ সহ বিভিন্ন ক্ষতিকারক মেডিসিন প্রয়োগ করে । যা স্বাস্থ্যসম্পত নয় বলে দাবী বিষেজ্ঞদের । আর যেসব গুড় দেখতে কালচে ধরনের সেসব গুড় ভাল । আর এ গুড় তৈরি করতে গ্রামে গ্রামে আখ চাষির পরিবার স্ত্রী সন্তান পুত্রবধু দের ব্যস্ত সময় পার করছে । এ আখের দানা গুড় প্রতি শনিবার ও মঙ্গলবার বসা নলডাঙ্গা হাটে পায়কারদের কাছে বিত্রিু করে থাকে ।ত্রুয়কৃত সেই মাটির কলায় ভূর্তি আখের দানা গুড় গুলো পায়কাররা রাজধানী সহ দেশেরগাইবান্ধা,রংপুর,সৈয়দপুর,দিনাজপুর,জয়পুরহাট,হিলি,পঞ্জগর,ঠাকুরগাও,নীলফামারী,কুমিল্লা,ওজানচর,পাবনা,সিরাজগঞ্জ জেলা গুলোতে ট্রাকযোগে নিয়ে যায় । প্রতি হাটে ১৫-২০টি ট্রাক লোড হয় বলে জানায় স্থানীয় ট্রাক শ্রমিক নেতারা । গতবারের চেয়ে এবার আখের দানা গুড়ের দাম ভাল পাওয়ায় আখ চাষিরা বেজায় খুশি জানালেন,সোনাপাতিল গ্রামের আখ চাষি রাজু,সেলিম,মুনজিল । নলডাঙ্গার হাটে প্রতি কেজি গুড় ৩০-৩২ টাকা পায়কারী দড়ে বিত্রিু হচ্ছে । নলডাঙ্গা হাটের আড়তদার ও ইজারদার জানান,প্রতিহাটে ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার কোলা পাতিল আমদানি হয় । প্রতি কোলায় ৬৫ কেজি হিসেবে ৩ হাজার কোলায় ১লাখ ৯৫ হাজার কেজি গুড় আমদানী হয় । এই ১লাখ ৯৫ হাজার কেজি গুড়ের বর্তমান বাজার ৩২ টাকা দর হলে মোট দাম আসে ৬ কোটি ২৪ লাখ টাকা । ইজাদাররা প্রতি কোলা চাষির কাছ থেকে খাজনা আদায় করে ১০-১৫ টাকা । নাটোর দুটি চিনি থাকলোও সময়মত সে চিনি কল গুলো চালু করায় আখ চাষিরা নিজেইরা বা ক্রাশার মালিকদের কাছে আগাম জমির সঠিক মূল্যে আখ বিক্রি করে । এতে একদিকে আখচাষিরা লাভবান হচ্ছে অন্যদিকে গুড় প্রস্তুত কারীরা পযাপ্ত আখ সরবরাহ পাচ্ছে । নলডাঙ্গা হাটের গুড়ের আড়তদার গিয়াস উদ্দিন জানান,নলডাঙ্গা হাট আখের দানাগুড়ের জন্য প্রসিদ্ধ তাই এখানে বিভিন্ন বড় পায়কার এসে গুড় কিনে ।এ জন্য এখানে ৪০-৪৫ টি আখের গুড়ের আড়ত গড়ে উঠেছে ।