গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ২০২২ সালে বাংলাদেশ অতিদারিদ্রতা মুক্ত দেশ হবে।
তিনি বলেন,
প্রতিবছর দেশে ২৪ লাখ ৫০ হাজার লোক অতিদরিদ্রতা থেকে বেড় হয়ে আসছে। বর্তমানে অতিদারিদ্রতা কমে আসার হার এক দশমিক পাঁচ তিন। এ হার অব্যাহত থাকলে সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্য পরবর্তী পরিকল্পনা মোতাবেক ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বে অতিদারিদ্রতার হার শূন্যের কোটায় নেমে আসবে।
আজ পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) এক সেমিনারে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
পিকেএসএফ-এর রজতজয়ন্তী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘মুভিং আউট অভ্ লো প্রোডাক্টিভিটি ট্রাপ: ইনভেস্টিং অ্যাট দ্যা বটম অভ দ্যা পিরামিড’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্য অনুযায়ী ২০১৫ সালের মধ্যে অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীর সংখ্যা অর্ধেকে কমিয় আনার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের পাঁচ বছর আগেই তা অর্জিত হয়েছে। দেশের উত্তরাঞ্চলের মঙ্গা নামক মৌসূমী দুর্ভিক্ষ নিরসন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, অতিদারিদ্রতা নিরসনকে টেকসই করতে প্রয়োজন এ শ্রেণির জনগোষ্ঠীকে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সক্ষমতা বাড়ানো, বিনিয়োগে সহায়তা প্রদানের জন্য দীর্ঘ মেয়াদি পুঁজি সরবরাহ করা, সম্পদের ঝুঁকি হ্রাসে বিমা ব্যবস্থা চালু করা, উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা, খাস জমি পানি ইত্যাদি প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারে এ শ্রেণির জনগোষ্ঠীর সুযোগ বাড়ানো, স্বাস্থ্যঝুঁকি হ্রাস করতে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
সরকার এসব দিক গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে পিকেএসএফ-এর মাধ্যমে বছরে তিন হাজার ৭০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে। অতিদারিদ্রতা নিরসনে এ বিনিয়োগ পাঁচ হাজার কোটি টাকা করার বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, দেশে অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীর বৈশিষ্টগত পার্থক্যও রয়েছে। এসব বৈশিষ্টের মধ্যে চরাঞ্চল বা উপকূলীয় অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দরিদ্র, কর্মক্ষম দরিদ্র, বয়ষ্ক অকর্মক্ষম দরিদ্র, প্রতিবন্ধী দরিদ্র রয়েছে। দারিদ্রতার বৈশিষ্টগত পার্থক্য বিচেনায় রেখে কর্মকৌশল উদ্ভাবন এবং বিভিন্ন ধরন ও মাত্রার বিনিয়োগ প্রয়োজন। দারিদ্রতা নিরসনে অনুদান নির্ভর না হয়ে বাজার নির্ভর ও উৎপাদনভিত্তিক হওয়া প্রয়োজন।
পিকেএসএফ পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ব্যারিস্টার নিহাদ কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে দারিদ্রতা নিরসন সংক্রান্ত দু’টি বিষয়ে উপস্থাপনা তুলে ধরেন পিকেএসএফ-এর মহাব্যবস্থাপক এ কিউ এম গোলাম মাওলা ও ইকো-সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (ইএসডি) পরিচালক ড. মুহাম্মদ শহীদুজ্জামান।